কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় এক স্কুল ছাত্রীর জন্ম নিবন্ধন সনদ জালিয়াতি করার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান ও প্রশাসনিক কর্মকর্তার জামিন নামঞ্জুর করছে আদালত।
৩০ জুলাই (মঙ্গলবার) কক্সবাজার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মামুনের আদালতে জামিনের আবেদন করেন কৈয়ারবিল ইউপি চেয়ারম্যান আজমগীর মাতবর খান ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা ইমাম মুসলিম। পরে তাদের আবেদন
নামঞ্জুর করেন বিজ্ঞ আদালত।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, কুতুবদিয়ায় স্কুল ছাত্রী অপহরণের ঘটনায় জন্ম নিবন্ধন সনদ জালিয়াতির মাধ্যমে এক স্কুল ছাত্রীকে বিয়ের সহযোগিতা করেছে কৈয়ারবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা। গত ৬ মার্চ (ছদ্মনাম) শিশু হোসনে আরা বেগমকে একই এলাকার মিজানুর রহমান সাগরের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ অপহরণ করে। মিজানুর রহমান সাগর ওই ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা সদস্য হাসিনা আক্তারের পুত্র। এ ঘটনায় গত ১০ মার্চ কুতুবদিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করে। যার মামলা নং- ০৫। এ অপহরণ মামলা থেকে পুত্রকে বাঁচাতে ২০২১ সালের জন্ম নিবন্ধন নং-২০০৯২২১৪৫৫৪০২১৮৫৮ যার জন্ম তারিখ ১৫-০৮- ২০০৯। ওই ছাত্রীকে বিদেশও সফর করেন। যার পাসপোর্ট নং ই- ০১৬২১০৮০। এছাড়াও ২০২১ সালে পঞ্চম শ্রেণির সার্টিফিকেটও রয়েছে। বর্তমানে ওই ছাত্রী কুতুবদিয়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। কিন্তু অপহরণের পর ওই স্কুল ছাত্রীর জন্মনিবন্ধন সনদটিতে পিতা-মাতার নাম পরিবর্তন করে কৈয়ারবিল ইউনিয়ন পরিষদ। পরে, তার পিতা- মাতার অজান্তে ২০২৪ সালে ১-১১-২০০৫ জন্ম তারিখ দিয়ে ১৮ বছর পূর্ণ করে আরও একটি জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রদান করে ইউনিয়ন পরিষদ। যার জন্ম নিবন্ধন নং-২০০৫২২১৪৫৫৪০২৪৫২৭। এ ভুয়া জন্ম নিবন্ধন সনদ দিয়ে পেকুয়া উপজেলার শিলখালী ইউনিয়নের কাজী ওয়াহিদুর রহমানের কাছে কাবিননামা সম্পন্ন করে। অপহরণের ঘটনায় এসব জালিয়াতি উল্লেখ করে এতে জড়িত সাতজনের বিরুদ্ধে গত ২১ মে কুতুবদিয়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন ওই ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা আফরোজা নাজমিন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের মাধ্যমে আসামীদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন। পরে, আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে কয়েক সপ্তাহের জন্য জামিন নিয়ে আসেন। গত মঙ্গলবার কক্সবাজার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ওই পরিষদের চেয়ারম্যান আজমগীর মাতবর ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা ইমাম মুসলিম হাজির হলে তাদের জামিন নামঞ্জুর করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীর পক্ষের আইনজীবী ফিরোজ আহমেদ ফিরোজ।
তিনি আরো বলেন ইউপি চেয়ারম্যান ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা দুইজনেই জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে এক স্কুল ছাত্রীকে দুইটি জন্ম নিবন্ধন সনদ দিয়েছেন যা আইনি দন্ডনিয় অপরাধ। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে তাদের জামিন নামঞ্জুর করছেন।
মামলার বাদী স্কুল ছাত্রীর মা আফরোজা নাজমিন জানান, তার স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে অপহরণ করে জন্ম নিবন্ধন সনদ জালিয়াতির মাধ্যমে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ এরকম জঘন্য অপরাধে জড়িত থাকায় তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাসহ এবং একই সঙ্গে তার মেয়ের জন্ম নিবন্ধনটি ফিরিয়ে দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করেন।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :