ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে স্ত্রীকে নির্যাতন মামলায় শাহ মো. জুবায়ের ইবনে নুর ওরফে সাথী নামে এক উপ সহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গত সোমবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন অদালত তার জামিনের আবেদন বাতিল করে তাকে কারাগারে পাঠায়।
মামলা ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, প্রায় দুই বছর আগে উপজেলার হাজীপুর সিংগারোল গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে ভোমরাদহ কমিউনিটি ক্লিনিকের উপ সহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার শাহ মো. জুবায়ের ইবনে নুর ওরফে সাথী’র সাথে একই উপজেলার নারায়নপুর গ্রামের ফজলুল হকের মেয়ে ফারজানা আক্তার ফুজির ইসলামি শরিয়ত মোতাবেক বিয়ে হয়। বিয়ের সময় জামাই ও মেয়ের সুখের জন্য ৭ লাখ নগদ টাকা ও ৫ ভরি স্বর্ণালংকারও দেয় ফরজানার পরিবার। বিয়ের এক বছর পর তাদের একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। সন্তান জন্ম হওয়ার পর যৌতুক হিসেবে বাবার বাড়ি থেকে আরো ২০ লাখ টাকা আনার জন্য স্ত্রী ফারজানকে চাপ দিতে থাকে জুবায়ের ও তার পরিবারের লোকজন। বাবার বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা না আনায় ফারজানার উপর নির্যাতন শুরু করে স্বামী, শ্বশুড়ি ও ননদ। সন্তানে মুখে দিকে চেয়ে নির্যাতন সহ্য করে স্বামী বাড়িতে অবস্থান করতে থাকে ফারজানা। এরই মধ্যে ফাজানাকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টাও করেন তারা। এ নিয়ে স্থানীয় ভাবে শালিস বৈঠকও হয়।
শালিসের পরও ফারজানার উপর নির্যাতন বন্ধ হয়নি। নির্যাতনের মাত্রা অসহনীয় পর্যায়ে গেলে স্থানীয়দের সহযোগীতা ফারজানাকে গুরুতর অসুস্থ্য অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করান। এ ঘটনায় স্ত্রী ফারজানা বাদী হয়ে গত বছরের নভেম্বরে স্বামী জুবায়ের সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে পীরগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় গত ২৯ জুলাই ঠাকুরগাঁও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে জামিন নিতে গেলে বিচারক জওবায়েরের জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। তিনি এখন ঠাকুরগাঁও জেলা কারাগারে।
উল্লেখ্য, এর আগেও তিনি মোটা অংকের যৌতুক নিয়ে এক কলেজ শিক্ষককে বিয়ে করেন। পরে আরো যৌতুক না পেয়ে ঐ স্ত্রীকেও নির্যাতন করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। মান সম্মানের ভয়ে ঐ কলেজ শিক্ষক বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করেননি।
উপ সহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার জেল হাজতে যাওয়া প্রসঙ্গে ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডাঃ নুর নেওয়াজ আহমেদ জানান, এ সংক্রান্ত কোন কাগজপত্র তিনি এখনো পাননি। পেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :