AB Bank
ঢাকা মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

নোয়াখালীতে বিদ্যুৎ ও যোগাযোগে দুর্ভোগ, অনাহারে মানুষ


Ekushey Sangbad
জেলা প্রতিনিধি, নোয়াখালী
০৮:৩৬ পিএম, ২২ আগস্ট, ২০২৪
নোয়াখালীতে বিদ্যুৎ ও যোগাযোগে দুর্ভোগ, অনাহারে মানুষ

কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে আসা ফেনী মুহুরী নদীর বন্যার পানির কারণে নোয়াখালীতে পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। বন্যার পানিতে ডুবে গেছে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট ও ফসলের মাঠ। জেলা শহর মাইজদীতে ঘরবাড়ী ও দোকানে পানি ঢুকে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কোথাও হাঁটু কোথাও কোমর পানি উঠায় খাবার রান্না করতে পারছেন না। তাই অনাহারে দিন কাটছে বাসিন্দাদের। জেলার কয়েকটি নিম্নাঞ্চলে বন্যা দেখা দেয়ায় ওইসব এলাকার লোকজন পার্শ্ববর্তী বিদ্যালয় ও আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। ৪ লাখ মানুষ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। এ ছাড়া গ্রামীণ সড়কে সব ধরনের যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এতে চরম দুর্ভোগ ও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

এদিকে জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষক আরজুল ইসলাম জানিয়েছেন, ভোর ৬ থেকে ৬টা পর্যন্ত নোয়াখালীতে ১৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সক্রিয় লঘুচাপ ও মৌসুমি জলবায়ুর কারণে জেলায় আরও তিনদিন ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে জেলার আরও নতুন নতুন এলাকায়। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন জেলার কয়েক লাখ মানুষ। ভেসে গেছে কয়েকশো মাছের ঘের, মুরগি খামার, আমনের বীজতলা, শাকসবজি খেত এবং ঝড়ো বাতাসে ভেঙে গেছে গাছপালা। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ায় বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে কয়েকটি এলাকা।

অনেকের বসতঘর ও রান্নাঘরে হাঁটু ও কোমর সমান পানি। পানির কারণে রান্নাও করতে পারছেন না স্থানীয় বাসিন্দারা। সবকিছু ডুবে থাকায় দেখা দিয়েছে খাবার ও পানির সংকট। আশপাশের নালায় জমে থাকা ময়লা আবর্জনা বৃষ্টির পানির সঙ্গে মিশে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে রোগজীবাণু ছড়িয়ে অনেক শিশু ও বয়স্করা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। জেলার ৭টি পৌরসভার বেশির ভাগ এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। সবধরনের গ্রামীণ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

জানা যায়, জলাবদ্ধতা জেলার সেনবাগ, বেগমগঞ্জ, সদর, কবিরহাট, কোম্পানিগঞ্জ, সুবর্ণচর ও চাটখিল উপজেলার সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। ফেনী জেলার মুহুরী নদীর বন্যার পানিতে নোয়াখালী সেনবাগ, বেগমগঞ্জ ও কবিরহাট উপজেলা বেশি ক্ষতি হয়েছে।

কাদির হানিফ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ আবদুল বলেন, ‍‍`অনেক বাড়ীতে পানি ঢুকে যাওয়ায় মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছেন। কিন্তু পর্যাপ্ত খাবার না থাকায় অনেকে অনাহারে কষ্ট পাচ্ছেন। বিশেষ করে শিশু খাদ্যের অভাবে শিশুরা কষ্ট পাচ্ছে।‍‍`

সদর উপজেলার কাদির হানিফ ইউনিয়নের আদর্শ স্কুল কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া রহিমা বেগম বলেন, ‍‍`আমাদের বাড়ীঘর পানিতে ডুবে গেছে। গতকাল সন্ধ্যায় দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে এখানে এসেছি। রাতে কিছু শুকনা খাবার দেয়া হয়েছে। কিন্তু সকাল থেকে কোন খাবার পাই নাই। কোলে শিশু সন্তানটি খাবারের জন্য কাঁদছে।‍‍`

নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মো.জাকির হোসেন বলেন, জেলায় সাত ৭৫হাজার গ্রাহকের মধ্যে সাড়ে ৪লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন। ভারী বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকার লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া বেগমগঞ্জের একটি উপকেন্দ্রে পানি উঠে গেছে।

নোয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুন্সী আমির ফয়সাল বলেন, ‍‍`নোয়াখালীতে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত ও মুহুরী নদীর পানির কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন বেড়ী বাধের ক্ষতি হয়নি।‍‍`

জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান জানান, ‍‍`নোয়াখালীর নয়টি উপজেলার মধ্যে আটটি উপজেলা বন্যা হয়েছে। এসব উপজেলায় ইতিমধ্যে ৩৮৮ আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় ৩৬ হাজার বন্যা আক্রান্ত মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। জেলায় প্রায় ২০ লাখ মানুষ পানিবন্দী রয়েছে। আমাদের উপজেলার কর্মকর্তাবৃন্দ মাঠে কাজ করছে। প্রশাসন ও সরকারের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে নগদ টাকা ও চাল বিতরণ করা হয়েছে। ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ে আমরার চাহিদার কথা জানিয়েছি।‍‍`

 

একুশে সংবাদ/এনএস

Link copied!