নওগাঁর নিয়ামতপুরে বোরো মৌসুমে সরকারিভাবে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা কিছুটা পূরণ হলেও, কিন্তু সফলতা আসেনি ধান সংগ্রহে। সরকারিভাবে ধান-চাল সংগ্রহের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ধান সংগৃহীত হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৬ শতাংশ।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয় সূত্র জানায়, গত মে থেকে শুরু হয় বোরো ধান ও চাল সংগ্রহ অভিযান, শেষ হয় ৩১ আগস্ট। এ বছর উপজেলায় ৪৫ টাকা কেজি দরে ৩৯৭ মেট্রিক টন সিদ্ধ ধান ও ৪৪ টাকা কেজি দরে ৪৮ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল এবং ৩২ টাকা কেজি দরে ২ হাজার ৩২৭ মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ছিল খাদ্য বিভাগের। এর মধ্যে চাল ৩৮৬ মেট্রিক টন সংগ্রহ করা হয়েছে, তবে এখনো ১১ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহে ঘাটতি রয়েছে। ধান সংগ্রহ করা গেছে মাত্র ১৩১ মেট্রিক টন। এবার গুদামে সিদ্ধ চাল সরবরাহে উপজেলার ১৩ জন মিলার চুক্তিবদ্ধ হন।
খাদ্য কর্মকর্তারা বলছে, সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে বাজারে ধানের দাম বেশি। সে কারণেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এদিকে কৃষকদের অভিযোগ, খাদ্যগুদামে ধান দিতে গিয়ে নানামুখী হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহের জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে লিফলেট বিতরণ, মাইকিং করার পরও কৃষকদের কাছ থেকে সাড়া পায়নি খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী, নিয়ামতপুর উপজেলায় এবার কৃষকেরা সরাসরি খাদ্য গুদামে গিয়ে ধান বিক্রি করেছেন। বড় কৃষকের কাছ থেকে সর্বোচ্চ ৩ টন, মাঝারি কৃষকের মধ্য থেকে ২ টন ও ক্ষুদ্র কৃষকের কাছ থেকে ১ টন করে ধান কেনা হয়।
উপজেলার শ্রীমন্তপুর ইউনিয়ের বাসিন্দা সাদ্দাম হোসেন বলেন, আগে কৃষি কার্ড দিয়েই সরকারি খাদ্যগুদামে ধান দিতে হত। কিন্তু এখন তো অনলাইনে আবেদন করার নিয়ম হয়েছে। তা ছাড়া গুদামে ধান দিতে গেলে ধানের আর্দ্রতা, কাঁচা-পাকা নানা অজুহাতে কৃষকদের হয়রারি করা হয়। এজন্য খাদ্যগুদামের চেয়ে হাটবাজারে ধান বিক্রি করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। তা ছাড়া সরকারি ক্রয়মূল্যের চেয়ে বাজারে ধানের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকেরা বাজারেই ধান বিক্রি করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মিল মালিক বলেন, এবার বরাদ্দের পাশাপাশি আগে এলে আগে পাবেন ভিত্তিতে মিলাররা চাল দিয়েছে। সরকার চালের মূল্য ভালো দেওয়ায় চুক্তিভুক্ত মিলাররা উৎসাহের সঙ্গে চাল দিয়েছে। তবে বোরো মৌসুমে ধানের বাজারদর সরকারি দরের থেকে বেশি থাকায় কৃষকদের আগ্রহ কম ছিল।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা পারভেজ আনোয়ার বলেন, ধান সংগ্রহ অভিযানের সময় বাজারে ধানের দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকায় কৃষকেরা খাদ্যগুদামে ধান দিতে আগ্রহী ছিলেন না। তাই ধানের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। কৃষকেরা ঘাটতি দিয়ে সরকারি গুদামে কম দামে ধান দেননি। যার ফলে সরকারি লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ধান সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। তবে লক্ষ্যমাত্রার কিছুটা কম হলেও সিদ্ধ চাল সংগ্রহ করা হয়েছে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :