দেশব্যাপী বৈসম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলন চলাকালে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা ছাত্র-ছাত্রী গণহত্যার বিরুদ্ধে অবস্থান করে এবং ছাত্র-ছাত্রীদের ন্যায্য দাবি আদায়ের আন্দোলনের পক্ষে নিজেদের সংহতি জনালেও শ্রীমঙ্গলের দ্বারিকাপাল মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ও মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মনসুরুল হক আন্দোলনের বিরোধীতা করে স্বৈরাচার শাসকের অন্যায়-নির্বিচার ও গণহত্যাকে সমর্থন দেয়ায় তার অপসারণ দাবী করে শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসন বরারব স্বারকলিপি দিয়েছে শ্রীমঙ্গলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
গত ৪ আগস্ট শ্রীমঙ্গল চৌমুহনায় ছাত্রদের যৌক্তিক আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে শান্তি সমাবেশে যোগ দেয়ার কথা উল্লেখ করে স্বারকলিপিতে বলা হয়- `তিনি কোটা বিরোধী আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীদের উপর হামলা করতে ছাত্রলীগ যুবলীগের কর্মীদের লেলিয়ে দেন। সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে অধ্যক্ষ সৈয়দ মনসুরুল হকের এই ন্যাক্কারজনক কর্মকান্ডে সাধারণ শিক্ষার্থীরা মর্মাহত হয়েছে`।
ছাত্ররা অভিযোগ করেন, একজন শিক্ষক হিসেবে ছাত্র- ছাত্রীদের যৌক্তিক দাবীর বিরুদ্ধে তার এই অবস্থান, স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের নির্মম- নির্বিচারে গণহত্যাকে উন্মুক্তভাবে সমর্থনের মাধ্যমে পেটুয়া বাহিনীকে দিয়ে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের পেটানোর নির্দেশ দেওয়া কোনোভাবেই কাম্য নয়।
আমরা মনে করি অধ্যক্ষ সৈয়দ মনসুরুল হক স্বৈরাচারের পক্ষে অবস্থান নেয়ায় অধ্যক্ষ পদ আকরে থাকার নৈতিক যোগ্যতা হারিয়েছেন`। ছাত্ররা জানান, ` এ পরিস্থিতিতে সাধারণ শিক্ষর্থীরা সম্মিলিতভাবে অধ্যক্ষ পদ হতে তার অপসারণের ১ দফা দাবী পেশ করছি`। তিনি স্বেচ্ছায় স্বীয় পদ হতে অব্যাহতি না নিলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচী গ্রহণ করতে বাধ্য হবো` বলে হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন ছাত্ররা।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) এ স্বারকলিপি জমা দেয়া হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অনুপস্থিতিতে উপজেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মৃনাল কান্তি দাস স্মারকলিপি গ্রহন করেন। স্বারকলিপিতে বলা হয়, সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সৈয়দ মনসুরুল হককে অধ্যক্ষ পদ থেকে অপসারণ করে একজন ন্যায়, নিদলীয়, সৎ ও আদর্শবান অধ্যক্ষ নিয়োগের মাধ্যমে কলেজে পাঠদানের পরিবেশ সুন্দর ও সুশৃঙ্খল করে তুলতে প্রসাশনের সহযোগীতা কামনা করা হয়।
এর আগে গত ৯ সেপ্টেম্বর ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষ থেকে একই অভিযোগে মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও শ্রীমঙ্গল দ্বারিকাপাল মহিলা কলেজ থেকে অধ্যক্ষ সৈয়দ মনসুরুল হকের অপসারণের দাবী জানিয়ে একটি স্মারকলিপি জমা দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবু তালেব জানান, ছাত্রদের পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, এটি যাচাই-বাছাই করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :