মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে মাছ শিকারের উৎসবে মেতেছেন সৌখিন মৎস্য শিকারিরা। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের সৌখিন মৎস্য শিকারীরা দল বেঁধে জলাশয়গুলোতে নেমে মনের আনন্দে মাছ শিকার করছেন। খাল-বিল, নদী-নালা ও ডোবাতে পানি কমে যাওয়ায় এখন বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে দল বেধে মাছ ধরার দৃশ্য চোখে পড়ার মতো। মাছ পাওয়া বা না পাওয়া কোন বড় কথা না। সবাই একসাথে মাছ শিকার করতে বের হওয়ায় আনন্দের ব্যাপার। এ অবসরে অল্প পানিতে মাছ শিকারের মহোৎসব মেতে উঠেছে সবাই।
শনিবার (১৪সেপ্টেম্বর ) সকালে কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের কাটাবিল এলাকায় দেখা যায়, ভোর থেকে মদনমোহনপুর চা বাগানের সম্মুখের জলাশয়ে সারিবদ্ধভাবে মাছ শিকারে নেমেছেন অনেক মৎস্য শিকারি। ছোট বড় মিলিয়ে শতাধিক মানুষ মাছ ধরতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
ভাদ্র মাস প্রায় শেষ। খাল-বিল, নদী নালা ও ডোবার পানি কমতে শুরু করেছে। এসব জলাশয়ে এখন স্বল্প পানি। কোনো কোনো জায়গায় আধা-পাকা অবস্থা আছে ধান। এসময় টাতে অনেকের হাতে তেমন একটা কাজ থাকে না। অবসর সময়ে সৌখির মাছ শিকারিরা দলবদ্ধ হয়ে পলো/ হাউরি, হেয়ত, ছিটকা জাল নিয়ে জলাশয়গুলোতে মাছ শিকারের জন্য বের হন।
সড়জমিনে দেখা যায়, মাধবপুর ইউনিয়নের মদনমোহনপুর এলাকায় একদল সৌখিন শিকারী জলাশয়গুলোতে নেমে মাছ শিকার করছে। মাথা ও কোমরে আটসাট করে গামছা বেঁধে অনেকটা আনন্দ নিয়েই প্রায় শতাধিক মানুষ সখের বসে মাছ ধরার উপকরণ নিয়ে নদীতে নেমেছে। যাদের অধিকাংশই যুবক। কেউ বা উদাম শরীরেও পানিতে নেমেছে। নেমেছেন মাছ ধরতে। পানিতে নেমে হৈ-হুল্লুর করে সবাই হাউরি, হেয়ত, ছিটকা জাল দিয়ে মাছ শিকারে ব্যস্ত।
সৌখিন মাছ শিকারী বলরাম কৈরী, প্রদীপ নুনিয়া, সঞ্জয় নুনিয়া বলেন, সকাল থেকে শুরু হয়ে চলে বিকেল পর্যন্ত মাছ ধরার কাজ। আমাদের সাথে সববয়সের মানুষ আছেন। দল বেধ সারি বদ্ধ হয়ে কেউ মাছ শিকার করছে,আবার সেচ দিয়ে পানি সড়িয়ে মাছ শিকার করছে। সারা দিনে রুই, কাতল, বোয়াল, শোল, টাকি ,সরপুটি ও নানা প্রকারের ছোট মাছ পাওয়া যায়। এতে আমরা সবাই খুশি।
চা শ্রমিক দিপন নুনিয়া বলেন- দেড় কেজি ওজনের একটি রুই মাছ পেয়েছি। এতেই অনেক খুশি। এছাড়াও ছোট বড় অনেক মাছ পাইছি। দল বেঁধে সবাই এভাবে মাছ ধরতে আনন্দ লাগে।
এদিকে কমলগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি এম এ ওয়াহিদ রুলু বলেন, আমি চা বাগানের একটি নিউজ কাবার করতে যাচ্ছি এই রাস্তা দিয়ে। রাস্তার পাশেই জলাশয়ে শতাধিক মানুষ মাছ ধরছেন। তাদের কাছ থেকে আমি ২ কেজি ছোট বড় মাছ কিনে নিলাম। ওরা যে দাম চাইলো তাই দিলাম।
কমলগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. সহিদুর রহমান সিদ্দিকী জানান, ‘সম্প্রতি কমলগঞ্জে বন্যার কারণে বিভিন্ন অনেক ফিশারি ও গ্রামের বিভিন্ন পুকুর গুলো থেকে মাছ বেরিয়ে এসেছে। সেই সব মাছ গুলো সৌখিন মাছ শিকারীরা।’ এছাড়াও তিনি বলেন, অবৈধ চায়না দুয়ারী ও কারেন্ট জাল ব্যবহার বন্ধে আমরা কাজ করছি। যাতে করে আগামীতে দেশী মাছের সাথে বাঙালী সংস্কৃতির এই উৎসবও হারিয়ে না যায়।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :