মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে চা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৫০০ টাকাসহ ৭ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশন। রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শ্রীমঙ্গল চৌমুহনা চত্বরে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত মানবন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন চা শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিপ্লব মাদ্রাজি পাশী।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কিরণ শুক্ল বৈদ্যের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ মৌলভীবাজার জেলা সমন্বয়ক ও চা শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট মঈনুর রহমান মগনু, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও সংগঠনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আবুল হাসান, চা শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক দীপংকর ঘোষ, অর্থ সম্পাদক প্রেম কুমার পাল, সদস্য ময়না রাজভর, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ নন্দী, মৌলভী চা বাগানের শ্রমিক নেতা দ্বীপচান তেলি, মাথিউড়া চা বাগানের আবুল কালাম আজাদ, লালন রাজভর, ধলই চা বাগানের উজ্জ্বল কৈরি, মিরতিংগা চা বাগানের ইমরান নাজির প্রমুখ।
সমাবেশে চা শ্রমিকরা তাদের ৭ দফা দাবি তুলে ধরেন। চা শ্রমিকদের দাবিগুলো হলো, চা শ্রমিকের দৈনিক মজুরি ন্যুনতম ৫০০ টাকা করা, রেশন-আবাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবাসহ আনুষঙ্গিক সুবিধা বাড়ানো, বন্ধ ও রুগ্ন চা বাগানের লিজ বাতিল করে রাষ্ট্রীয়ভাবে বাগান পরিচালনা করে চা শ্রমিকদের জীবন-জীবিকা রক্ষা করা, মালিকপক্ষের দালাল নেতৃত্ব অপসারণ করে আপসহীন বিপ্লবী ধারার শ্রমিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে ভূমি অধিকার নিশ্চিত করা ইত্যাদি।
বক্তারা বলেন, ‘শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরে চা শ্রমিকদের মানুষ হিসেবে বিবেচনা না করে চা শ্রমিকদের ভোট ব্যাংক হিসেবে ব্যবহার করেছে। অবিভক্ত ভারতবর্ষের বিভিন্ন দারিদ্র্য পিরিতি অঞ্চল থেকে বৃটিশ চা সরকার চা শ্রমিকদেরকে মিথ্যা আশ্বাস ও প্রতারণা করে চা শিল্পে নিয়োগ করে ছিল। প্রকারান্তরে বৃটিশরা চা বাগানে দাস প্রথার সূচনা করেছিল। সেই মজুরি দাসত্ব থেকে চা শ্রমিকরা আজও বের হতে পারেনি।’
বক্তারা বলেন, চা শ্রমিকরা আগে দৈনিক মজুরি পেতেন ১৭০ টাকা। পরে বাড়ানো হয়েছে মাত্র ৮ টাকা ৫০ পয়সা। অর্থাৎ তাদের দৈনিক মজুরি মাত্র ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এটি বাতিল করে দৈনিক নগদ মজুরি ৫০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে।
তারা আরও বলেন, ‘সূচনালগ্ন থেকেই চা শ্রমিকরা ন্যায়সংগত মজুরি, আধুনিক শিক্ষা, চিকিৎসা, আবাসন, ভূমি অধিকার, অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার থেকে শ্রমিকরা বঞ্চিত ছিল। বৃটিশ পাকিস্তান উপনিবেশিক শাসন অবসানের পর স্বাধীন বাংলাদেশের ৫৩ বছর পরও চা শ্রমিকরা নুন্যতম ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত। চা শ্রমিকদের নেতৃত্বের দুর্বলতার কারণে নিষ্ঠুর মালিক পক্ষ শুধুমাত্র ৮.৫০ টাকা নামমাত্র মজুরি বৃদ্ধির মাধ্যমে চা শ্রমিকদের সাথে তামাশা করছে।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :