বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সময়ে রাজধানী ঢাকায় নিহত বিএটিসি’র প্রকৌশল বিভাগের ছাত্র মো. ওমর বিন আবছারের বোয়ালখালীর আকুবদন্ডীস্থ গ্রামের বাড়ি, নগরীর বহদ্দারহাটে নিহত ফার্নিচার মিস্ত্রি মো. ফারুক ও মুরাদপুরে নিহত ওমর গণি এমইএস বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের বিবিএ’র ছাত্র ফয়সাল আহমদ শান্ত’র লালখান বাজারের বাসায় তাদের মা-বাবা ও স্বজনদেরকে সান্তনা ও সমবেদনা জানাতে গেলেন চট্টগ্রাম জেলার নবাগত জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফরিদা খানম। বেলা সাড়ে ১২ টায় বোয়ালখালীর পোপাদিয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর আকুবদন্ডী ওয়ার্ডের গ্রামে গিয়ে গত ৫ আগস্ট ঢাকায় নিহত বিএটিসি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ সেমিস্টারের ছাত্র মো. ওমর বিন আবছারের কবর জেয়ারত করেন জেলা প্রশাসক। পরে ঘরে গিয়ে তার বাবা হাজী নুরুল আবছার ও মা রুবি আক্তারসহ স্বজনদের সান্তনা ও সমবেদনা জানান। এসময় জেলা প্রশাসকের সামনে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন শহীদ ওমরের মা-বাবা ও ভাই-বোনেরা।
শহীদ ওমরের কবরে যাওয়ার রাস্তা সংস্কার ও পাশে একটি সড়ক শহীদ ওমরের নামে নামকরণের ঘোষণা দেন ডিসি। নিহত ওমর ৫ ভাই ১ বোনের মধ্যে ৩য়। বড় বোন এমবিবিএস ডাক্তার ও ছোট ভাই ৩ জন কোরআনে হাফেজ। এদিকে গত ১৬ জুলাই নগরীর বহদ্দারহাটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে নিহত ফার্নিচার মিস্ত্রি মো. ফারুকের স্ত্রী-সন্তানকে সমবেদনা জানাতে একই দিন দুপুর ২ টায় নগরীর লালখান বাজারের টাংকির পাহাড় এলাকার বাসায় যান চট্টগ্রামের নবাগত জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফরিদা খানম। এসময় আন্দোলনে শহীদ মো. ফারুকের স্ত্রী, শিশু পুত্র-কন্যা, জেলা প্রশাসককে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। শহীদ মো. ফারুকের স্ত্রী সীমা আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে তার ছেলে-মেয়ের পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যাবে বললে তাৎক্ষণিক আর্থিক ও মানবিক সহায়তা হিসেবে সীমা আক্তারের হাতে আর্থিক সহায়তা তুলে দেন। তার ছেলে-মেয়েকে সরকারি স্কুলে ভর্তিসহ বিনা বেতনে পড়ালেখার সুযোগ করে দেবেন বলে আশ্বস্ত করেন ডিসি।
এরপর গত ১৬ জুলাই নগরীর মুরাদপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ওমর গণি এমইএস বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী মো. ফয়সাল আহমদ শান্ত’র নগরীর লালখান বাজারের বাঘঘোনা এলাকার বাসায় যান জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম।
এসময় শহীদ শান্ত’র বাবা জাকির হোসেন ও মা কোহিনুর আক্তারসহ স্বজনদের সান্তনা ও সমবেদনা জানান তিনি। জেলা প্রশাসককে কাছে পেয়ে আন্দোলনে শহীদ শান্ত’র মা জেলা প্রশাসককে জড়িয়ে কান্নায় বার বার মুর্চা যান। একইসাথে নিহতের বাবা ও ছোট্ট বোন কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
এসময় আর্থিক ও মানবিক সহায়তা শহীদ শান্ত’র মায়ের হাতে তুলে দেন। পাশাপাশি শহীদ শান্ত’র বাবার জন্য চাকুরির ব্যবস্থা করে দেয়ার ঘোষণা দেন ডিসি। পরিবারে এক ভাই এক বোনের মধ্যে শান্ত সবার বড়। তার ছোট বোন সিএমপি স্কুল অ্যান্ড কলেজে ৭ম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। এসময় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) একেএম গোলাম মোর্শেদ খান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সাদি-উর রহিম জাদিদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. কামরুজ্জামান, বোয়ালখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা হিমাদ্রী খীসা, স্টাফ অফিসার টু ডিসি মো. ফাহমুন নবী, বোয়ালখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. খায়রুল ইসলাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রিজাউর রহমান ও সমন্বয়ক সাদিক আরমান জেলা প্রশাসকের সাথে ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ১২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিেেসব যোগদান করেন ফরিদা খানম। তিনিই এ জেলার প্রথম নারী ডিসি।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :