রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ায় আমিরুল বেপারী (২৬) নামে এক যুবকের বাড়িতে স্ত্রীর মর্যাদা চেয়ে দুই সন্তানের জননী আইরিন আক্তার (৩২) নামে এক প্রবাসীর স্ত্রী অনশনে বসেছেন। আইরিন আক্তারের ফরিদপুর সদরপুরের প্রবাসী স্বামীর সাথে ১৪ ও ৩ বছরের দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় থেকে দৌলতদিয়া ইউনিয়ন ৯ নং ওয়ার্ডের খালেক মৃধার পাড়া এলাকায় আমিরুলের বাড়ীতে অনশন শুরু করেছেন তিনি। অভিযুক্ত যুবক মো. ইদ্রিস বেপারীর ছেলে।
সরেজমিন সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে যুবক আমিরুলের বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায়, প্রবাসীর স্ত্রী আইরিন আক্তার পরকীয়া প্রেমের আসক্ত হয়ে ফরিদপুর সদর পুরের প্রবাসী স্বামীকে ডির্ভোস দিয়ে আমিরুলের বাড়িতে স্ত্রী মর্যাদা পাওয়ার জন্য অনশনে বসেছেন তিনি। সাথে ছোট ছেলে আয়ান (৩)।
এ-সময় স্ত্রীর মর্যাদা চাওয়া আইরিন আক্তার বলেন, আমিরুল বেপারী আমার সাথে ৩ বছর আগে পূজা মন্ডপ থেকে তার পরিচয় হয়। তার পর থেকে গড়ে ওঠে তাদের মধুর পরকীয়ার সম্পর্ক । এভাবেই চলতে থাকে তাদের দুজনের মধুর সম্পর্ক। আমিরুলের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠায় প্রায় এক বছর আগে ওই প্রবাসী স্বামীকে ডির্ভোস দেয়। ৬ মাস হলো আমিরুলের সাথে সে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ছোট ছেলে আয়ানকে নিয়ে ঢাকায় বসবাস শুরু করেন। তাদের সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে তারা দুইজনই গার্মেন্টসে চাকরি করেন। কিছু দিন পর সেখানে থাকা অবস্থায় ওই এলাকার মানুষ জানতে পারে যে আমরা স্বামী-স্ত্রী নই। এর পরই এলাকাবাসী আমিরুলকে চাপ প্রয়োগ করে তাদেরকে বিয়ে দেন। বিয়ের কিছুদিন পরই আমিরুল অন্য আরও কয়েকজন মেয়ের সাথে ফোনে কথা বলা শুরু করে। সেই বিষয় নিয়ে আমাদের মাঝে ঝগড়া হলে আমিরুল আমাকে ঢাকায় রেখে গোঁপনে পালিয়ে বাড়ীতে চলে যান। পরে আইরিন ঢাকা থেকে গতরবিবার দৌলতদিয়া ঘাটে আসলে তার সাথে দেখা হয়। আমিরুল কেন তার কাছ থেকে চলে আসলো জানতে চাইলে তখন কৌশলে তাকে ফাঁকি দিয়ে দৌলতদিয়া ঘাট থেকে পালিয়ে যায়। তার পর আইরিনের যাওয়ার কোন জায়গা না থাকলে সে তার শ্বশুর (আমিরুলের বাড়ী) বাড়িতে চলে আসেন। রবিবার থেকে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে ও তার সাথে থাকা ৩ বছরের ছোট ছেলেটি আয়ানকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এখনোও কিছু খেতে দেয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রতিবেশী জানান, এই মেয়েটি ছোট্ট একটি ছেলে নিয়ে রবিবার সন্ধ্যার দিকে আমিরুলের বাড়ীতে এসে তার স্ত্রী দাবি করেন। তার কিছুক্ষণ পরেই আমিরুলের আগের স্ত্রী তার বাড়ীতে এসে হাজির হয়। এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তবে গতরবিবার থেকে অভিযুক্ত যুবক আমিরুল বেপারী এখনো পর্যন্ত বাড়িতে আসেননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক প্রতিবেশী জানান, এই মেয়েটি গতরবিবার একটি ছোট্ট ছেলে সন্তান নিয়ে আমিরুলের বাড়িতে স্ত্রী দাবিতে আসেন। সাথে কোর্ট থেকে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ের কাগজ পত্রের ফটো কপি নিয়ে এসেছেন। এ ঘটনায় আমিরুল বেপারীকে স্বামী দাবি করছে। আমরা তার ওই বিয়ের কাগজ পত্রের ফটোকপি গুলো সত্য নাকি মিথ্যা বলতে পারছিনা।
আমিরুলের বাবা ইদ্রিস বেপারী বলেন, আমি গত রবিবার বাজারে ছিলাম বাড়ী থেকে একটা ফোন করে জানানো হয় বাড়ী একটা মেয়ে এসে আমিরুলের বউ দাবি করছে। বাড়িতে এসে দেখি এই মেয়েটা আমার বাড়িতে এসে আমার ছেলে আমিরুলের স্ত্রী দাবি করছে। আমি বলেছি আমার ছেলে কে সাথে নিয়ে এসো। তাকে নিয়ে না আসলে কেমনে জানবো তুমি আমার ছেলের বউ।
আমিরুলের মায়ের দাবি, আমার ছেলেকে ফাঁদে ফেলে জোর করে বিয়ের কাগজ পত্র বানিয়েছে। এ-বিষয় আমিরুল বেপারীর সাথে একাধিক বার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে সংযোগ পাওয়া সম্ভব হয় নি।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :