সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দিনের কিংবা রাতের আধারে অনুমোদন ছাড়া বান্দরবানের থানচিতে পুকুর খননের নামে অবৈধভাবে মাটি কেঁটে পাচার মহোৎসব চলছে। সেটি উপজেলার বলিপাড়া ইউনিয়নের বলিপাড়া গ্রামে পুকুর সংস্কারের নামে দেশের প্রচলিত আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ট্রাকের ভর্তি মাটির নিয়ে যাওয়ার পথে সরকারি রাস্তা নষ্ট করে চলছে অবাধে পুকুর খনন।
এদিকে সরকারের আইন অমান্য করে দিনের ও রাতে পুকুর খননের মাটি ডাম্পার গাড়ি মাধ্যমে সাঙ্গু ব্রীজের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সরকারের লাখ লাখ টাকা ব্যায়ে নির্মিত রাস্তার হচ্ছে বেহাল দশা। সেই সাথে রাস্তায় পড়ে থাকা কাঁদা মাটিতে প্রতিনিয়তই হাঁটা চলার মানুষের দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজনরা।
তাঁরা আরো জানান, আওয়ামী-লীগের শাসন আমলে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ছত্রছায়ায় সাঙ্গু ব্রীজের সাইট ইঞ্জিনিয়ার মোঃ জোবাইর ও সাইট কন্ট্রাকটর ব্যবসায়ী মোঃ ইসমাইল এ কাজের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। পুকুর জমির মালিকের সহজসরলতা কাজে লাগিয়ে তাঁকে বিনাখরচে পুকুর খনন করে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তারা অবৈধ উৎপায়ের পুকুর খননের নামে মাটি নিয়ে যায়। এবং অবৈধভাবে মাটি কাটার বন্ধ করতে না পারলে মাটি ভর্তি ট্রাক চলাচলে সরকারের অবকাঠামোগত রাস্তা নষ্টসহ পরিবেশের হুমকির হওয়ার অস্বাভাবিক কিছু নয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, থানচি উপজেলার বলিপাড়া গ্রামে নিবেদিতা কুমারী মারিয়া খ্রিস্টান মিশনের গেইটে প্বার্শে হ্লাশৈমং মারমা তার ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির ওপর পুকুর খননের নামে এক্সকেভেটর দিয়ে মাটি কাটছে। কাটার মাটিগুলো দ্রুত ৩-৪ টি ডাম্পার গাড়ি সাহায্যে সাঙ্গু ব্রীজের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সাঙ্গু ব্রীজ থেকে ক্যাথলিক মিশন পর্যন্ত ইট সোলিন রাস্তাটি একপ্রকার কাঁদা ছোড়াছুড়ি ও গর্ত সৃষ্ট হয়ে স্কুল শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
পুকুর জমির মালিক হ্লাশৈমং মারমা সাথে যোগাযোগ করার হলে তিনি জানান, এটা আমার তোজিভূক্ত দ্বিতীয় শ্রেণীর পৈতৃক সম্পত্তি। আগে থেকেই এখানে পুকুর ছিল। সাঙ্গু ব্রীজের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে পুকুরটি খননসহ পুকুরে পার বেঁধে দেওয়ার শর্তে সাঙ্গু ব্রীজের জন্য মাটি কাটে নিয়ে যাচ্ছে তাঁরা।
এবিষয়ে জানতে চাইলে সাঙ্গু ব্রীজের সাইট ইঞ্জিনিয়ার মোঃ জোবাইর বলেন, মালিকের সাথে কোনো চুক্তি নেই, তাঁর পুকুর বড় করার জন্য খনন করা হচ্ছে, পুকুরে কাটার মাটিগুলো সাঙ্গু ব্রীজের ফরাট কাজে ব্যবহারে নিয়ে নিচ্ছি। মাটি কাটার অনুমোদন যারা মালিক তাঁরা নিবে, পুকুরে মালিক তো আমি নয়।
অন্যদিকে সাঙ্গু ব্রীজের সাইট কন্ট্রাকটর ব্যবসায়ী মোঃ ইসমাইল বলেন, বিনাখরচে পুকুর খনন করে দিবো, বিনিময়ে মাটিগুলো নিবো। এই মাটিগুলো সাঙ্গু ব্রীজের মাটি ফরাট কাজে ব্যবহার করবো, সমস্তখরচ আমাদের এভাবেই কথা ছিল। জমির মালিক মাটি কাটার জন্য অনুমতি নিচ্ছেন কি নেননি তাহা আমরা জানি না।
থানচি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আছিফ উদ্দীন মিয়া বলেন, অবাধে পুকুর খননের খবর সাংবাদিকদের মাধ্যমে খবর জেনেছি, অনুমতি কিংবা অনুমোদন কেউ আবেদন করেনি, অবৈধভাবে মাটি কাটার হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থার নেয়ার হবে।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :