মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের বাজারগুলোতে সবজির দাম ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। কেজি প্রতি ৩০ থেকে ৮০ টাকা দরের নিচে মিলছে না কোনো সবজি। বাজারগুলোতে কিছুদিনের ব্যবধানে সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের এমন ঊর্ধ্বমূল্যের কারণে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। সবজির সাথে সাথে দামের নিয়ন্ত্রণে নেই চালের বাজার।
বাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিকেজি ধমরাই ২৯ এবং মোটা ৫০ থেকে ৫৫, মাঝারি ৫৫ থেকে ৬০ এবং মানভেদে চিকন চাল ৬৬ থেকে ৭২ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। শাক-সবজির ও চালের দাম বৃদ্ধিতে মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত এবং নিম্নআয়ের মানুষের জন্য অতিরিক্ত বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৩ অক্টোবর) সরজমিনে উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজার ঘুরে দেখা যায়, বেগুন ৮০, পটল ৭০, মুলা ৪০, বরবটি ৮০, করলা ৮০, ধুন্দল ৪০, কাঁচা পেঁপে ৩০, কচুরমুখি ৬০, শসা ৬০, আলু ৬০, পিঁয়াজ (দেশি) ১১০, রসুন (দেশী) ২০০, রসুন (ইন্ডিয়ান) ২৪০, কাঁচামরিচ ৩২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়াও ৩ আঁটি মুলা শাক ২০, ৩ আঁটি লালশাক ২০, পুঁইশাক প্রতি আঁটি ২০, কাঁচা কলা প্রতি হালি ৩০-৪০, লাউ মাঝারি সাইজের প্রতিটি ৬০ থেকে ৭০, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৬০ প্রতি ফালি ৩০ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজার করতে আসা কবির মোল্লা বলেন, আমাদের উপার্জন কম। তাই সব কিছুই হিসেব করে কিনতে হয়। কিন্তু ইদানীং মাছ মাংসের সাথে যেভাবে সবজির দাম বাড়ছে তাতে আমাদের বেঁচে থাকায় মুসকিল। সরকার যদি শক্ত হাতে বাজার সিন্ডিকেট না ভাঙে তাহলে আমাদের সাধারণ মানুষের কষ্ট দূর হবে না।
বাজার করতে আসা পাভেল হোসেন নামের এক ক্রেতা জানান, মাছ-মাংস কেনার অবস্থা নেই। ভর্তা-ভাত, সবজি খেয়ে থাকবো সেটারও অবস্থা নেই আমাদের। সবকিছুর দ্বিগুণ দাম। অন্যান্য বছর এ সময়টাতে চাল ডাল মাছ মাংশের দাম বেশি থাকলে সবজিতে পুষিয়ে নিতে পারতাম কিন্তু এ বছর সবজির দাম চড়া হওয়ায় বেকায়দায় পড়ে গেছি। এতকিছুর পরেও যদি চালের দামটাও কম থাকতো তাহলে অন্ততপক্ষে চালটা শান্তিতে কিনতে পারতাম কিন্তু চালের দামও আগের তুলনায় বেড়ে গেছে।
উপজেলার ঝিটকা বাজারের রানা নামের সবজি বিক্রেতা জানান, আগাম শীতের সবজির বাজারে আসতে শুরু করেছে। বাজারে সবজির দাম বাড়তি। কারণ হল এখনো শীতকালীন সবজির পুরোপুরি মৌসুম আসেনি। ফলে এগুলোর দাম বেশি। তিনি আরও বলেন, মূলত শীতকাল আসার আগ পর্যন্ত সবজির দাম এমন বাড়তিই থাকে।
সবজির দাম বেড়ে যাওয়া নিয়ে ঝিটকা বাজারের কাঁচামাল বিক্রেতা নোয়াব আলী জানান, কিছুদিন আগেও সবজির দাম এত বেশি ছিলো না। কয়েকদিনের বৃষ্টিপাতের কারণে সবজির দাম বেড়ে গেছে। কেননা বৃষ্টিতে সবজি নষ্ট হয়ে যায়। কয়েকদিনের অতিরিক্ত বৃষ্টির ফলে অনেক জমির নতুন সবজি তলিয়ে যায়। তাই দাম বেশি যাচ্ছে এখন, তবে আশাকরা যায় আর কিছুদিন গেলে সবজির দাম কমে যাবে।
একই বাজারের চাল ব্যবসায়ী অপু সাহা বলেন, আমরা মিল থেকে চাল কিনে বিক্রি করি। মিল মালিকরা বলছেন পুরাতন ধান কমে যাওয়ার কারনে চালের দাম বেড়েছে। অনেক যায়গায় নতুন ধান ওঠা শুরু হয়েছে আশাকরা যায় ১৫-২০ দিনের মাঝে চালের দাম একটু কমতে পারে।
এ ব্যাপারে জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের মানিকগঞ্জ জেলার সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান রুমেল বলেন, বাজার তদারকি চলমান রয়েছে। কোনো ব্যবসায়ী যদি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে এবং অতিরিক্ত মুনাফা আদায় করে তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :