ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার কুলিক নদীর পাশে অবস্থিত রাজা টংকনাথের রাজবাড়ি। অযত্ম-অবহেলা আর সংস্কারের অভাবে রাজবাড়িটি ভুতুড়ে বাড়িতে পরিণত হয়েছিলো। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে মাদকসেবীদের আস্তানায় পরিণত হয়ে এটি। তবে সম্প্রতি রাজবাড়ি সংস্কার কাজের পরিদর্শন শেষে এর সংস্কার কাজ দ্রুত শেষ করা হবে বলে জানিয়েছে প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাবিনা আলম প্রধান। সেইসঙ্গে এটিকে পর্যটন স্পট করার ঘোষণা দেন। এমন খবরে স্বস্তির হাসি ফুটেছে সর্বস্তরের মানুষের মুখে।
রাজবাড়ি পরিদর্শনে প্রত্নতত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাবিনা আলম প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, রাজবাড়ীগুলো ইতিহাস ঐতিহ্যের প্রতিক। এগুলো সংস্কার করা জরুরী।
ইতিমধ্যে রাজা টংকনাথের রাজবাড়ী সংস্কারের কাজ চলছে। পর্য়ায়ক্রমে জেলার তিনটি রাজবাড়ী ও জমিদার বাড়ি সংস্কার করে এগুলোকে পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে রুপান্তর করা হবে। তিনি রাজবাড়ীগুলো সংরক্ষন ও রক্ষনাবেক্ষনের জন্য সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান। রাজবাড়ীগুলো অব্যশই সংস্কার করে দ্রুত পর্যটন কেন্দ্র রুপান্তর করে সকলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।
শনিবার (৫ অক্টোবর) রাণীশংকৈল রাজা টংনাথের রাজবাড়ী, জগদল জমিদার বাড়ি ও হরিপুর উপজেলার রাজবাড়ী পরির্দশন করেছেন (অতিরিক্ত সচিব) সাবিনা আলম। এসময় সংক্ষিপ্তভাবে একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন তিনি এসব কথা বলেন।
জানা গেছে, রাণীশংকৈল রাজা টংনাথের রাজবাড়ি সংস্কারের জন্য ২০২২ সালের আগস্ট মাসে হাইকোর্টের নজরে আনেন রাণীশংকৈল উপজেলার ধর্মগড় ইউনিয়নের প্রয়াত ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেমের ছোট ছেলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মেহেদী হাসান শুভ। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ জমিদারি বাড়িটি প্রাথমিক সংস্কারের জন্য ১০ লাখ টাকা দরপত্র আহ্বান করেন। নিয়মুনযায়ী এ কাজটি বাস্তবায়নে চুক্তি বদ্ধ হয়েছেন রাণীশংকৈল উপজেলার ঠিকাদার মেসার্স বকুল ট্রেডার্স।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মেহেদী হাসান শুভ বলেন, পুরোনো ঐতিহ্য নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার চিন্তা থেকেই হাইকোর্টের নজরে রাজবাড়ী সংস্কারের বিষয়টি তোলা হয়েছিল। হাইকোর্টের নির্দেশে বহু বছর পর রাজবাড়ীটি সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে।
এ আইনজীবী আরো বলেন, এটি সংস্কার হলে একদিকে মানুষ বিনোদনের জায়গা পাবে। অন্যদিকে সরকারের রাজস্বের টাকার আয় বাড়বে বলে তিনি মনে করেন।
অনুষ্ঠানে রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রকিবুল হাসানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় প্রেস ক্লাব সভাপতি মোবারক আলীর সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন-রাণীশংকৈল ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ তাজুল ইসলাম, রংপুর তাজহাট জমিদার বাড়ীর কাস্টোডিয়ান খায়রুল বাসার স্বপন, দিনাজপুর কান্তনগর প্রত্নতাত্বিক যাদুঘরের সহকারী কাস্টোডিয়ান শিহাব হোসেন, মহাপরিচালকের বোন সাবেক প্রধান শিক্ষক উম্মেশ সালমা, উপজেলা যুবদলের যুগ্ন আহবায়ক সুমন আলী,বাচোর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি আনসারুল ইসলাম,ছাত্রদল নেতা আরজু প্রমুখ।
উল্লেখ্য, এসব রাজবাড়ী দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত ভাবে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে থাকায় ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার কৃতি সন্তান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবি এ্যাডভোকেট মেহেদী হাসান শুভ হাইকোর্টে রিট করায় প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের নজরে আসার ফলে সংস্কারের কাজ শুরু করা হয়।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :