AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ, প্রধান অভিযুক্তকে স্বাক্ষী করায় এলাকায় তোলপাড়


Ekushey Sangbad
সাকিব হোসেইন, তিতাস, কুমিল্লা
০২:৪৩ পিএম, ৮ অক্টোবর, ২০২৪
মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ, প্রধান অভিযুক্তকে স্বাক্ষী করায় এলাকায় তোলপাড়

কুমিল্লার তিতাসের মানষিক ভারসাম্যহীন নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষনের অভিযোগে ৬জনের নামে মামলা করা হয়েছে। কিন্তু রহস্যজনকভাবে মূল অভিযুক্ত তাইজুল ইসলাম নামে এক যুবককে মামলায় আসামী না করে, করা হয় ১নং সাক্ষী।

সে দাসকান্দি বাজার সংলগ্ন পারুল উরফে ফারুক সরকারের ছেলে। এ ছাড়াও ঘটনায় জড়িত এলাকার লম্পট হিসেবে চিহ্নিত পোড়াকান্দি গ্রামের মৃত আক্তারের ছেলে আশরাফুলকেও মামলা থেকে বাদ দেয়া হয়। আসলেই কি দলবদ্ধ ধর্ষণের স্বিকার হয়েছিলো ওই নারী; নাকি এলাকার কোন দুষ্ট চক্রের সাঁজানো ফাঁদে ভাইরাল হলো দলবদ্ধ ধর্ষণ ঘটনার? 

সরজমিনে অনুসন্ধানে গিয়ে জানা যায়, গত  ৩০ আগস্ট শুক্রবার সকালে তিতাসের দাসকান্দি বাজারে ৬যুবককে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন করে স্থানীয় আরিফ, ইব্রাহিম ও লাদেনের নেতৃত্বে গ্রামবাসী। বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলে ঘটনাস্থলে পৌছায় তিতাসের ছাত্র-জনতা, সেনাবাহিনী ও তিতাস থানা পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে ভিকটিম নারী ও ৬যুবককে স্থানীয় এলাকাবাসীর রোষানল থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ এবং রাতে ভিকটিমের ভাবি বাদি হয়ে আটক ৬যুবকের নাম উল্লেখ্য করে অজ্ঞাত আরও ২/৩জনকে আসামি করে মামলা নং ৩ দায়ের করা হয়। তবে ভিকটিমের শত আর্তনাদে প্রকাশ পাওয়া মুল অভিযুক্ত তাইজুল ইসলামের নাম মামলার এজাহারে অন্তর্ভুক্ত হয়নি; হয়েছে মুল স্বাক্ষির তালিকায়। যেখানে ভিকটিম নারী নিজেই পুলিশ ও জনগণের সামনে জানায়, তাইজুল মোবাইলে অশ্লিল ছবি ধারণ করেছে এবং সর্ব প্রথম সে ই ধর্ষণ করেছে এবং বিষয়টি বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত হলে এলাকাবাসী ও সুশিল সমাজের মাঝে চলছে নানা রকম গুঞ্জন। নেপথ্যে কার ইন্ধন রয়েছে খুঁজে বের করে ঘটনায় জড়িত প্রকৃত দোষিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানায় তারা।

অনুসন্ধানে জানা যায়, গেলো ২৭আগস্ট বিকালে দাসকান্দি বাজারের আলীর দোকানের সামনে ত্রাণের জন্য বসে থাকে ৩৫বছর বয়সি রোজিনা বেগম ছদ্মনামের কথিত এক মানসিক প্রতিবন্ধী নারী।

আশায় আশায় সন্ধ্যা হয়ে গেলে প্রথমে দাসকান্দি গ্রামের পারুল উরফে ফারুক সরকারের ছেলে তাইজুল ইসলাম তাকে ফুসলিয়ে দোকানের পাশে নিয়ে বিবস্ত্র ছবি ধারণ করে এবং অনৈতিক মেলামেশা করে পরে পোড়াকান্দি গ্রামের মৃত আক্তারের ছেলে আশরাফুলসহ অন্যরা সুযোগ নেয়।

তবে মামলার বাদী জানায়, আসামী বা স্বাক্ষীর বিষয়ে সে কিছুই জানে না। যারা ৬জনকে আটক করেছে তারা ই নাম ঠিকানা দিয়েছে এবং তাদের কারণেই মামলা হয়েছে। বাদী শুধু মামলার কাগজে সই দিয়েছে। সে কাউকেই চিনে না।

এদিকে অভিযুক্ত পরিবারগুলোসহ এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, এ নারী টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন এলাকায় দেহ ব্যবসা করে থাকেন এবং টাকার লোভে নিজের তিনটি সন্তানের মধ্যে দু‍‍`টিই সন্তান বিক্রিও করেছেন। জনগণের দাবি ঘটনার দিন সে ধর্ষণের স্বিকার ছিলেন না, টাকার বিনিময়ে দেহ বিক্রি করেছিলেন এবং স্থানীয় একটা দালালচক্রের মাধ্যমে শালিশ বসিয়ে মোটা অংকের টাকার ফায়দা নেয়ার পথ করেছিলেন। কিন্তু ঘটনায় জড়িতরা একেক জন একের রকম কথাবার্তা বলায় শালিশের মাধ্যমে বিষয়টি মিমাংসিত না হলেই দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে গাছের সাথে বেঁধে ভাইরাল করে এলাকার একটা দুষ্ট চক্র।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানায়, ৩০আগস্ট শুক্রবার সকালে বাজারে বিচার হবে এমন কথা বলে ৬জনকে ডেকে আনে পোড়াকান্দি গ্রামের রহমত উল্লাহ‍‍`র ছেলে ইব্রাহিম। তবে সত্য-মিথ্যা যাচাই না করে ৬জনকেই গাছের সাথে বেঁধে ফেলে স্থানীয় জনগণ। যেখানে ফেঁসে যায় নিরপরাধ কয়েকজন আর সুকৌশলে বাঁচিয়ে দেয়া হয় প্রথমে অনৈতিক কাজ ও মোবাইলে অশ্লিল চিত্র ধারণকারী তাইজুলকে।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে কন্টেন্ট ক্রিয়েটর মোঃ ইব্রাহিম খলিল সাংবাদিকদের বলেন, আমাকে আরিফ ও লাদেন জানিয়েছে। আমি কাউকে ফাঁসাইনি, কাউকে বাদও দেইনি।

দাসকান্দি গ্রামের মরহুম নুরু মিয়ার ছেলে আরিফ মুঠোফোনে বিষয়টি অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, আমি একা কিছু করি নাই গ্রামবাসীকে সাথে নিয়েই সব করা হয়েছে।

এ বিষয়ে তাইজুল ইসলামের কাছে জানতে তার বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। মামলায় প্রধান স্বাক্ষী হলেও ঘটনার পর থেকেই সে আত্মগোপনে রয়েছেন।

দু‍‍`টি বাচ্চা দত্তকের বিনিময়ে দশ হাজার টাকা নিয়েছেন এবং বর্তমানে টাকা দিলে মামলা তুলে নিবেন বলেও সাংবাদিকদের জানায় কথিত প্রতিবন্ধী (রোজিনা বেগম ছদ্ধনাম)।

এ বিষয়ে তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ও.সি) মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, মামলাটি বাদী যখন করে তখন কেনো তাইজুল ইসলাম কে আসামি করলেন না! এখন মামলার পর এমনটা বললে কেমন হইলো? তারপরও আমাদের তদন্ত চলমান, মেডিকেল রিপোর্ট আসবে এবং তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের চার্জশীট এর আওতায় আনা হবে।

 

একুশে সংবাদ/বিএইচ

Link copied!