আমতলী সরকারী কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিনা অনুমতিতে টেন্ডার ছাড়া সরকারী গাছ কেটে বিক্রি, সনদ ও মার্কসিট বিক্রি করে টাকা আদায়সহ কলেজের পুকুরের মাছ ধরে বাসায় নেওয়া এবং কলেজের কক্ষ দখল করে বসবাস করলেও ভাড়া পরিশোধ না করাসহ একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, আমতলী সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে প্রফেসর মো. জসিম উদ্দিন ২০২৩ সালের ১৬ নভেম্বর যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে সে কলেজের প্রশাসনিক ভবনের তৃতীয় তলার ৩০৮ নম্বর ল্যাবের একটি কক্ষ ৩-৪ লক্ষ টাকা ব্যায় করে টিভি, ফ্রিজসহ নানা ধরনের মালামাল দিয়ে সজ্জিত করন করে সেখানে বসবাস করে আসছেন। দীর্ঘদিন ধরে সরকারী ভবনে বসবাস করলেও তিনি এপর্যন্ত কোন ভাড়া টাকা পরিশোধ করেনি। তিনি কলেজে যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন সময় কলেজের ১২- ১৩টি সরকারী রেন্ট্রি ও চাম্বল গাছ বিনা অনুমতিতে টেন্ডার ছাড়াই কেটে নেন। অভিযোগ রয়েছে ভালো কাঠ বিক্রি করে চেরাই করা মরা গাছের অবশিষ্টাংশ সমিল থেকে এনে লোকদেখানোর জন্য কলেজের একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রেখেছেন।
এছারা অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. জসিম উদ্দিন কলেজের পুকুর এবং লেক থেকে বিভিন্ন প্রজাতির বড় আকৃতির রুই কাতল সহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরে তার ঢাকার বাসায় নিয়ে যান। মাছের মূল্য হিসেবে এপর্যন্ত তিনি কোন টাকা পরিাশোধ করেনি। অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে এইচএসসি, বিএ ও বিএম শাখার পাসকৃত শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে সম্পূর্ন বেআইনী ভাবে সনদ ও মার্কসিট বিতরনের সময় ১শ’ টাকা করে আদায়েরও অভিযোগ রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এইচএসসি পাস এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, আমার সনদ ও মার্কসিট বাবদ ১শ’ টাকা নিয়েছেন।
অধ্যক্ষ্যের বিরুদ্ধে নিয়মিত কলেজে না থাকারও অভিযোগ রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকরা জানান, কলেজ খোলা থাকলেও অফিশিয়াল কাজের অজুহাত তুলে অধ্যক্ষ্য অধিকাংশ সময় ঢাকায় তার পরিবারের সাথে সময় কাটান। তারা আরো অভিযোগ করে বলেন, ক্লাশ নিশ্চিত করা এবং শিক্ষার মান বাড়ানোর ব্যাপারে তিনি খুব উদাসীন। এছাড়া অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে প্রশাসন আয়োজিত বিভিন্ন জাতীয় দিবসে তিনি অংশ গ্রহন করেননা।
এব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তার জানান, ১৬ ডিসেম্বর, ২১ ফেব্রæয়ারি ও ২৬ মার্চের মত জাতীয় দিবসের চিঠি অধ্যক্ষেকে দেওয়া হলেও তিনি এগুলো এড়িয়ে যান এবং আসেন না। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে পাবলিক পরীক্ষায় দায়িত্ব পালন করা ভিজিলেন্স টিমের সস্মানী না দিয়ে তিনি নিজে আত্মসাৎ করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে কলেজ ক্যাম্পাসে সরেজমি ঘুরে দেখা গেছে, কলেজের প্রবেশ পথের সড়কের মুখে এবং শেষ প্রান্তে এবং মসজিদের পিছনের সড়কে কেটে নেওয়া রেন্ট্রি গাছের বিশাল আকারের গোড়া পরে আছে। মাঠের পশ্চিম প্রান্তে পড়ে আছে চাম্বল গাছেল কেটে নেওয়া গোড়া। একাডেমিক ভবনের তৃতীয় তলায় ল্যাবের জন্য নির্ধারিত ৩০৮ নম্বর কক্ষটি কলেজ ফান্ডের ২-৩ লক্ষ টাকা তুলে কক্ষ সাজানো হয়েছে। কক্ষের ভিতরে বসানো হয়েছে টিভি প্রিজ। এখানেই থাকেন অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. জসিম উদ্দিন। সরকারী টাকায় কক্ষ সজ্জিত করে থাকলেও এপর্যন্ত কোন ভাড়া পরিাশোধ করেননি অধ্যক্ষ।অভিযুক্ত
অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. জসিম বলেন, সরকারী গাছ কেটে বিক্রি, পুকুরের মাছ ধরে নিজের বাসায় নেওয়া এবং জাতীয় অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, গাছগুলো বেঞ্চ বানানোর জন্য কাটা হয়েছে। আবাসিক রুমের ভাড়া পরিশোধ করা হয়নি বলে তিনি স্বীকার করেন।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :