বরিশালের বানারীপাড়া ঐতিহ্যবাহী বন্দর বাজারে চাঁদা তোলা নিয়ে স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতের ইসলাম পাল্টাপাল্টি অবস্থান নিয়েছে। চাঁদা না দেওয়ার জন্য ব্যবসায়ীাদের প্রতি আহ্বান জনিয়ে রোববার সকালে বন্দর বাজারে জামায়াতের পক্ষে মাইকিং করা হয়। এতে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন বিএনপি নেতারা। সোমবার সকালে তারা প্রশাসনের কাছে গিয়ে অসন্তোষের কথা জানান।
জানা গেছে, বানারীপাড়া বন্দরের ইজারাদার ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আক্তার হোসেন মোল্লা। ৫ আগষ্টের পর আত্মগোপনে থাকায় আক্তার হোসেন খাজনা তুলছেন না। একই কারনে বানারীপাড়ার সকল হাট-বাজার, বন্দর, ফেরীঘাট, বাসস্ট্যান্ড ও খেয়াঘাটসহ ইজারাখাতের সবকিছু বিএনপি নেতাকর্মীরা নিয়ন্ত্রনে নিয়েছে। উপজেলার প্রধান বন্দর বাজার ও ফেরীঘাট এলাকায় ভাসমান ব্যসায়ীদের কাছ থেকে দৈনিক হারে টাকা তুলছেন তারা।
রোববার সকালে জামায়াত নেতারা বন্দর বাজারের ফেরীঘাট, নতুন রাস্তা, কাঁচামাল ও মাছ বাজারে মাইকিং করেন। রশিদ ছাড়া টাকা তোলা এক ধরণের চাঁদাবাজি বলে মাইকিংয়ে উল্লেখ করেন। রশিদ ছাড়া কেউ টাকা চাইতে এলে বেঁধে রাখতেও বলা হয়। মাইকিংয়ের সময় ফেসবুকে লাইভ দেখানো হয়।
বানারীপাড়া পৌর জামায়াতের আমীর কাওছার হোসেন জানান, কারা যেন বন্দর বাজার ও ফেরীঘাট থেকে টাকা তোলে। এটা যদি চাঁদাবাজী হয় তাহলে তা বন্ধ করতে তারা মাইকিং করেছেন। উপজেলা প্রশাসনকেও চাঁদাবাজী বন্ধ করতে বলেছেন। তিনি বলেন, বন্দর বাজার ইজারা নেয়ার বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে। মাইকিংয়ের সময়ে তিনিসহ উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা মোজাম্মেল হোসাইন ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পৌর বিএনপির সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান বলেন, তারা সোমবার পৌর প্রশাসকের দায়িত্বরত সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও ওসির কাছে গিয়ে জানতে চেয়েছেন, জামায়ত কি করে চাঁদাবাজী বন্ধের মাইকিং করলো। জামায়াত যেহেতু মাইকিং করেছে, এতে মনে হয়েছে বিএনপি চাঁদাবাজী করেছে? তিনি বলেন, বন্দর বাজার আগে থেকেই ইজারা দেয়া আছে। সেখানে ২টাকা করে খাজনা নেয়ার নিয়ম। কিš‘ কোথাও নিয়ম অনুযায়ী খাজনা তোলা হয়না। তাই ৫ থেকে ১০ টাকা নেয়া হয়।
হাবিবুর বলেন, তারা প্রশাসনকে বলেছেন বাজারের খাজনা তোলা হলে নদীপাড়ে থাকা শতাধিক অবৈধ দোকানঘরও উ”েছদ করতে হবে। এতে প্রশাসন বলেছে সময় লাগবে। মাইকিং করার কারন জানতে উপজেলা জামায়াতের আমীরের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান হাবিবুর।
বানারীপাড়া থানার ওসি (তদন্ত) মো: মোমিন উদ্দিন বলেন, ইজারাদার দাবী করে বন্দরবাজার ও ফেরীঘাট এলাকায় ফুটপথের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা তুলছে- এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। দুইদিন আগে শিবিরের কর্মীরা গিয়ে পৌর প্রশাসকের দায়িত্বরত সহকারী কমিশনার (ভুমি) মুসতাহসিন তাসমিম রহমান অনিন্দ্র’র কাছে অভিযোগ জানান। রোববার পৌর প্রশাসক বাজার ঘুরে ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদাবাজীর বিষয়ে জানতে চান। তিনি ব্যবসায়ীদের অবহিত করেন, বাজার কাউকে ইজারা দেওয়া হয়নি এবং চাঁদা না দেওয়ার জন্য ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানান। এদিকে ইজারা খাজনার নামে চাঁদাবাজি বন্ধে জামায়াতের এ উদ্যোগ সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে। ব্যবসায়ীসহ স্থানীয় সচেতনমহল তাদের সাধুবাদ জানিয়েছেন।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :