মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার গয়েশপুর ইউনিয়নের নবগ্রাম গ্রামে বুধবার সকালে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ২০টি বাড়ি-ঘর ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে এবং সংঘর্ষে অন্ততঃ ১০ জন মারাত্বক আহত হয়েছে। সেনাবাহিনী, থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশের টহল এলাকায় অব্যাহত রয়েছে এবং সংঘর্ষ এড়াতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের অভিযানে বেশকিছু দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ জানান, উপজেলার গয়েশপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সম্পাদক আব্দুল হালিম মোল্লা ও আওয়ামীলীগ নেতা ইউসুফ মন্ডলের মধ্যে ওই ইউনিয়নে দীর্ঘদিন ধরে ইউনিয়ন নির্বাচন কেন্দ্রীক ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দ্বদ্ব চলে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে হালিম মোল্লা ও ইউসুফ মন্ডল প্রতিদ্বদ্বি দুই প্রার্থীর পক্ষে-বিপক্ষে উভয়ই অবস্থান নেয় এবং তাদের সমর্থকরাও দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এর ফলে নবগ্রাম বাজার স্ট্যান্ডে হালিম চেয়ারম্যান গ্রুপের লোকজন প্রতিপক্ষ ইউসুফ মন্ডল পক্ষের প্রার্থীর নির্বাচনী অফিস ভাংচুর করে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করেই উপজেলার নবগ্রাম গ্রামে উত্তেজনা ও অব্যাহতভাবে গোলমাল চলতেই থাকে । গত শুক্রবার (১৮অক্টোবর) সন্ধ্যায় আওয়ামীলীগ নেতা ইউসুফ মন্ডলের সমর্থক নবগ্রামের ওহিদুল ইসলাম ওহিদ গ্রুপের আশরাফ মোল্লা ও সাইদুল বিশ্বাসের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে মারাত্বক আহত করে হালিম মোল্লা গ্রুপের সমর্থক আলাউদ্দিন মেম্বারের লোকজন।
এর পর থেকে বাজার দখলের মহড়া ও উত্তেজনা চলতে থাকে উভয় গ্রুপের মধ্যে। উত্তেজনার এপর্যায়ে রবিবার সকালে আলাউদ্দিন মেম্বারের সমর্থকেরা ওহিদুল ইসলাম ওহিদ গ্রুপের সালাম নামের এক ব্যক্তি মারধর করে । এ ঘটনার রেশ ধরেই দুই গ্রুপের লোকজন দেশীয় অস্ত্র ঢাল,সড়কি, ভ্যালা,বল্লম ও লাঠি-সোঠা নিয়ে নবগ্রাম স্ট্যান্ডে মুখোমুখি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষে এসময় উভয় গ্রুপের সিদ্দিক মন্ডল(৫৫), মোস্তফা মন্ডল(৫০), বাদশা মন্ডল(৪৫),ইমরান মন্ডল(২০), আলম মন্ডল(৩৫), ওমর(৩০), আলামিন(৩৭) ও জলি খাতুনসহ অন্ততঃ ১০ জন মারাত্বক আহত হয় ।
সংবাদ পেয়ে শ্রীপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছালে লোকজন ছত্রভঙ্গ হয়ে গ্রামে ঢুকে একপক্ষ অপর পক্ষের সানোয়ার উদ্দিন বিশ্বাস, সোহেল রানা, আকবর মন্ডল, আনোয়ার হোসেন, রোস্তম মন্ডল, বিথী বানু, রমজান শেখ, নবুয়ত মোল্লা, ইতি আক্তার, মনিরুল,নজু,আলাউদ্দিন মেম্বার, কামরুল শেখ, নজরুল শেখ, হযরত শেখ, নেকবর খাঁন, ইকবাল খাঁন, লতিফ শেখ, তাজেল শেখ, সালামত শেখের বাড়ি ও দোকানপাটসহ ২০টি বাড়ি-ঘর ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। এ ঘটনার পরপরই সেনাবাহিনী ও শ্রীপুর থানা পুলিশের তৎপরতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এসময় ওই গ্রামে সেনাবাহিনী ও পুলিশের অভিযানে বেশকিছু দেশীয় অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়। এবিষয়ে শ্রীপুর থানার ওসি(তদন্ত) গৗতম ঠাকুর জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। তবে সংঘর্ষ এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :