রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে তিন দিনব্যাপী ঠাকুর নরোত্তম দাসের তিরোভাব তিথি মহোৎসব শেষ হয়েছে বুধবার (২৩ অক্টোবর) বিশ্বে সনাতন ধর্মাবলাম্বীদের ধামের সংখ্যা ছয়টি। এর মধ্যে পাঁচটিই ভারতবর্ষে। আর একটি রয়েছে বাংলাদেশে। রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার খেতুর গ্রামে এই ধামের অবস্থান। তাই এটিকে খেতুরীধাম নামেই বিশ্বের সবাই এক নামে চেনেন।
সোমবার ২১ অক্টোবর সন্ধ্যায় শুভ অধিবাসের মধ্য দিয়ে শুরু হয়। বৈষ্ণব ধর্মের মহাপুরুষ ঠাকুর নরোত্তম দাসের তিরোভাব তিথি উপলক্ষে ৪৯০তম মহোৎসব। নরোত্তম ঠাকুরের তিরোভাব তিথি উপলক্ষে প্রতিবছর লক্ষ্মী পূর্ণিমার পাঁচদিন পর পঞ্চমী তিথিতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।মঙ্গলবার অরুনোদয় থেকে অষ্টপ্রহরব্যাপী নাম সংকীর্ত্তন। বুধবার ২৩ অক্টোবর) শেষ দিনের প্রথম প্রহরে ছিল দধিমঙ্গল, দ্বি-প্রহরে ভোগ আরতি ও মহান্ত বিদায়ের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানমালা শেষ হয়।
এ উৎসবকে ঘিরে দেশ-বিদেশের লাখো ভক্তের আগমন হয়েছিল খেতুরীধামে। খেতুর, প্রেমতলী, ডুমুরিয়া, ফরাদপুর, বসন্তপুরসহ কয়েকটি গ্রামজুড়ে তাদের অবস্থান পরিণত হয়েছিল এক মহামিলনমেলায়।এর আগে, সোমবার সন্ধ্যায় অধিবাসের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছিল। পরদিন অরুণোদয় থেকে অষ্ট প্রহরব্যাপী সেখানে চলে তারক ব্রক্ষ্মনাম সংকীর্তন। এতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে যাওয়া কয়েক লাখো ভক্ত ছাড়াও ভারত, নেপাল ও ভুটানের বহু ভক্ত অংশ নেন এবারও।
গোদাগাড়ীর গৌরাঙ্গদেব ট্রাস্টি বোর্ডের সাধারণ সম্পাদক শ্যামাপদ স্যানাল জানান, উৎসবে যোগ দিতে এবার প্রায় পাঁচ লাখ ভক্তের আগমন হয়েছিল খেতুরীধামে। শনিবার দুপুরে মহান্ত বিদায়ের পর দূর-দূরান্ত থেকে যাওয়া ভক্তদের অনেকেই ফিরে গেছেন। তবে এখনও রয়েছেন প্রায় তিন লাখো ভক্ত।
সারা দুনিয়ায় বৈষব ধর্মের অনুসারীদের পাঁচটি ধাম রয়েছে। এরমধ্যে চারটিই ভারতবর্ষে। বাংলাদেশের একমাত্র ধাম এই খেতুরে। তাই বাংলাদেশের সনাতন বৈষ্ণব ধর্মের অনুসারীদের কাছে এর গুরুত্ব অনেক। দেশের আর কোথাও বৈষ্ণব ধর্মের অনুসারীদের এত বড় জমায়েত হয় না।
গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল হায়াত বলেন,‘উৎসব ঘিরে প্রতিবছর বসন্তপুর থেকে প্রেমতলী পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়কে আলোর ব্যবস্থা করা হয়। সেনাবাহিনী,পর্যাপ্ত পুলিশ, আনসার ও স্বেচ্ছাসেবক আছে। এবার পুলিশের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ বাড়িয়ে এক হাজার জন করা হয়েছে। এ উৎসব সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ। এখানে নরোত্তম ভক্তরা এবারও এই সম্প্রীতি বজায় ছিল।
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :