জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার তালোড়া বাইগুনী গ্রামে পারিবারিক শত্রুতার জেরে এক দরিদ্র কৃষকের জীবিকার শেষ আশাটুকুও নষ্ট করে দিল প্রতিবেশী। বুধবার ভোর রাতে প্রতিশোধ নিতে ১৫ শতক জমির সিম গাছ কেটে ফেলেছে প্রতিবেশী ছানোয়ার হোসেন।ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের জীবনের এই দুঃখজনক ঘটনা এলাকার মানুষের মনেও গভীর ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। বিচার না পেলে এই অসহায় কৃষকের অবস্থা আরও শোচনীয় হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।
ভুক্তভোগী কৃষক রেজোয়ান ফকির এ ঘটনায় কালাই থানায় ছানোয়ারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হাসান।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক রেজোয়ান ফকির, যিনি তালোড়া বাইগুনী গ্রামের আরশেদ আলী ফকিরের ছেলে, অন্যের জমি বর্গা নিয়ে কোনোরকমে জীবিকা নির্বাহ করছিলেন। সামান্য সেই জমিতেই সিম চাষ করে পরিবারে খাবার জোগানোর চেষ্টা করছিলেন তিনি। কিন্তু এখন জমির বর্গার টাকা, বীজ, সার ও কীটনাশকের খরচ পরিশোধ নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন রেজোয়ান।
বৃহস্পতিবার সকালে ক্ষতিগ্রস্ত জমিতে এসে, সিম গাছের শুকিয়ে যাওয়া ডাল ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন হতভাগ্য রেজোয়ান ফকির। তিনি বলেন, “বর্তমান বাজারে সিমের দাম খুব ভালো, দুই দিন আগে ২০ কেজি সিম বিক্রি করেছি ১৮০০ টাকায়। দুই-তিন দিনের মধ্যেই আরও ৪০-৫০ কেজি সিম বিক্রি করার কথা ছিল। কিন্তু ছানোয়ার আমার সর্বনাশ করলো। আমি বয়স্ক মানুষ, কাজ করতে পারি না। এত বড় সর্বনাশ কেন করলো সে? আমি এর বিচার চাই।”
রেজোয়ানের অভিযোগে জানা যায়, কিছুদিন আগে বাড়ির পাশের একটি ড্রেন নিয়ে ছানোয়ার হোসেনের সাথে তার বাকবিতণ্ডা হয়েছিল। সেই ঘটনার জের ধরেই ছানোয়ার তার সিম ক্ষেত নষ্ট করে দিয়েছে। জমিতে ফুল আর সিম ধরতে শুরু করেছিল, কিন্তু এখন সব শেষ। রেজোয়ানের কাছে বর্গা, সার-কীটনাশকসহ প্রায় ৫০ হাজার টাকা ঋণ রয়েছে, যা পরিশোধের কোনো উপায়ই আর তার নেই।
অভিযুক্ত ছানোয়ার হোসেন অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “পারিবারিক বিরোধ থাকতেই পারে, তাই বলে কি ফসল নষ্ট করবো? আমার বিরুদ্ধে অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।”
কালাই থানার ওসি জাহিদ হাসান জানান, "লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :