রাজশাহীর তানোর উপজেলা পরিষদের অফিস সহকারী বা সিএ তৌফিকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান। চলতি মাসের ৭ অক্টোবর জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দেয়া হয়। তার অনুলিপি বিভিন্ন দপ্তরে দেয়া হয়েছে।
অভিযোগে উল্লেখ নিয়ম বহির্ভূতভাবে চাকুরী গ্রহণ, ভুয়া ডিবি সেজে মোটরসাইকেল ছিনতাই করণ, ইউএনও স্যারের স্বাক্ষরে চেক জালিয়াতী করণের মাধ্যমে দ্বাদশ বছর উর্দ্ধকাল যাবত একই স্থানে চাকুরি করণ ও বিনা ভাড়ায় সরকারি বাসভব দখল করে বসবাস।
নিয়ম বহির্ভূতভাবে চাকরি গ্রহণ: বিবাদী তৌফিক তার বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায়। অথচ চাকরি গ্রহণকালে সে তার দুলাভাই আব্দুল আজিজ ডিসি অফিসের স্টাফ তাহার সহায়তায় রাজশাহী জেলা কোটায় চাকরি গ্রহণ করে অপরাধ করিয়াছে । যাহা তাহার সার্ভিস বুক পর্যালোচনায় দেখা যাব।
ভুয়া ডিবি সেজে মোটরসাইকেল ছিনতাই: বিবাদী তৌফিক নাচোল থানায় রাস্তায় ভুয়া ডিবি সেজে একটি মোটরসাইকেল ছিনতাই করে পরে পুলিশের নিকট ধরা খেয়ে মোট ১৭ দিন জেলে থাকে। কিন্তু সরকারি লোকের জেল হলেও চাকরি যাবে না মর্মে পাসকৃত এই আইন বলে এমন অপকর্মের পরেও সে চাকরিতে বহাল আছে। ইউএনওর স্বাক্ষর জালিয়াতি করে উপজেলা ব্যাংক হতে টাকা উত্তোলন করে ধরা খেয়ে পরে বেশ কয়েক বছর সাসপেন্ড ছিল। যাহা বড় অপরাধ । তবে পরবর্তীতে স্যারদের ম্যানেজ করে বিভাগীয় মামলা থেকে পরিত্রাণ পায়।
একই স্থানে ১২ বছর উর্দ্ধকাল যাবত চাকুরি করণ: এই দুর্নীতিবাজ তৌফিক বিভিন্ন পন্থায় দীর্ঘ ১২ বছরের উর্দ্ধকাল যাবত তানোর উপজেলায় চেয়ারম্যান অফিসে অফিস সহকারী পদে চাকুরি করছে । যার ফলে এলাকায় মন্দ, দুর্নীতিবাজ লোকজনদের সহ তাহার আঁতাত গড়ে উঠায় তাহার পক্ষে অনৈস্বভাবে অর্থ উপার্জনের পথ সুগম হয়েছে ।
উপজেলায় সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বাসভবনের জন্য বেশ কিছু কোয়াটার (ফ্লাট) আছে। এমতাবস্থায় সরকার যখন সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বেতন ভাতা দ্বিগুণ বৃদ্ধি করে দিলেন, তখন কোয়ার্টারে বাসা ভাড়া বেশি টাকা চলে যাওয়ায় অফিসারদের কুট-কৌশলী মনোভাব বাইরে কম টাকায় ভাড়া থাকার ব্যবস্থা করে। তখন এই সকল সরকারী কোয়াটার গুলোকে ড্যামেজ বিলডিং ঘোষণা করা হয় । অথচ উক্ত বিল্ডিং গুলোতে গত ১৫-১৬ বছর যাবত অফিসারের কর্মচারীরা বিনা ভাড়ায় প্রায় ১০-১২ জন পরিবার বসবাস করছে। তাহাদের ভিতর বিবাদী তৌফিক ১জন। কেউ কেউ বিদ্যুৎ সংযোগ নিজের না নিয়ে অফিসের মিটার হতে সংযোগ নিয়ে বিদ্যুৎ ব্যবহার করিতেছে। এইগুলোর কোন জবাবদিহিতা নেই। ইতিপূর্বে ইউএনও -কে বিষয়গুলো বলা হলে উনি এই সকল বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেন নাই। স্বজন প্রীতি আর দুর্নীতি যেন এই উপজেলার বড় ক্যান্সার। উল্লেখ্য যে, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ (ময়না) তার ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন ধরনের দুর্নিতি করত।
তৌফিক জানান, আমি প্রতিহিংসার স্বীকার। এসব মিমাংশিত বিষয়। আমিও শুনেছি অভিযোগ দিয়েছে। আমি একজন কর্মচারী হুকুমের গোলাম। যে ভাবে হুকুম হয় সে ভাবে কাজ করতে হয়। অভিযোগের বিষয়ে তলব করা হলে জবাব দিব।
অভিযোগ কারী মোস্তাফিজুর রহমান জানান, তার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ তোলা হয়েছে তদন্ত করলেই সবকিছু বেরিয়ে পড়বে। সে একজন কর্মচারী হয়ে সাবেক চেয়ারম্যানের ক্ষমতার দাপটে নানা অনিয়ম দূর্নীতি করেছেন। সাবেক চেয়ারম্যানের যাবতীয় প্রকল্পের দূর্নীতি বরপুত্র তৌফিক। এত অপরাধ করেও বহাল তবিয়তে আছে। বিগত স্বৈরাচার সরকারের সময় অভিযোগ দেয়া হলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। উপজেলা নিয়ম বহির্ভূত ভাবে প্রায় ৫০ টির মত গভীর অগভীর নলকূপ স্থাপনের জন্য কোটি কোটি টাকা দূর্নীতির সাথে সে জড়িত।
জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (ভারপ্রাপ্ত) সরকার অসিম কুমারের মোবাইলে ফোন দেয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :