পাইলটিং বা পরীক্ষামূলক প্রক্রিয়ার প্রায় ১৬ মাস পার হওয়ার পরেও পদ্মা সেতুতে শুরু হয়নি ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন বা (ইটিসি) পদ্ধতি।
২০২৩ সালের নভেম্বরে এ পদ্ধতি চালু হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত তা চালু করা সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া পাইলটিং অপারেশনে লেন কন্সট্রাকশনের কিছু কাজ, ইলেকট্রনিক মানি ট্রানজেকশনের জন্য পেমেন্ট মেথড সিস্টেম, কোরিয়ান এক্সপার্টের মাধ্যমে সফটওয়্যারের চূড়ান্ত পরীক্ষার কিছু কাজ এখনো বাকি আছে। এ কারণে চূড়ান্ত অপারেশনে যেতে বিলম্ব হচ্ছে কর্তৃপক্ষের।
এদিকে শিগগিরই নতুন করে এ বিষয়ে সর্বজনীন ব্যবস্থার (ইউনিভার্সাল প্রসেস) সুবিধা রেখে যে কোনো অ্যাপের মাধ্যমে ডিজিটাল পে সিস্টেম চালু করা হচ্ছে। আর এ পদ্ধতিতে পদ্মা সেতু দিয়ে পারাপার হতে যানবাহনের চালকরা নিজ নিজ ব্যবহৃত বিকাশ, রকেট বা অন্য যে কোনো ব্যাংকের ডিজিটাল মানি ট্রানজেকশন ব্যবহার করে টোল দিতে পারবেন। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ডিসেম্বর মাসে পুরোপুরিভাবে এ সিস্টেম চালু হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, গত বছরের ৫ জুলাই এই সেতুতে পরীক্ষামূলকভাবে ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন (ইটিসি) সিস্টেম শুরু হয়েছিল। এদিন পদ্মা সেতুর মাওয়া ও জাজিরা দুই প্রান্তে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন (আরএফআইডি) পদ্ধতিতে একটি করে বুথে এই পরীক্ষামূলক টোল আদায় শুরু করা হয়। তবে এটি ছিল পাইলটিং বা পরীক্ষামূলক প্রক্রিয়া। পাইলটিংয়ের তিন-চার মাসের মধ্যে সিস্টেমটি চালুর কথা ছিল।
সূত্র মতে, এ পদ্ধতিতে টোল আদায়ের জন্য সেতুর দুই প্রান্তে একটি করে বুথ থাকবে। সেতুর উভয়প্রান্তে একটি করে লেনে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশনের (আরএফআইডি) মাধ্যমে চলন্ত যান থেকেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে টোল আদায় হবে। এতে প্রয়োজন হবে না ক্যাশ লেনদেন। টোল প্লাজায় থামাতে হবে না কোনো গাড়ি। রেজিস্ট্রেশন করা যে কোনো যানবাহন টোল প্লাজার সামনে আসলে রোবটিক ক্যামেরার মাধ্যমে অটোমেটিক নির্ধারিত টোল আদায় হবে। টোল আদায় হয়ে গেলে গাড়ির সামনে থেকে ব্যারিয়ার সরে যাবে। এতে সময় লাগবে ২-৩ সেকেন্ড। বর্তমানে মাওয়া ও জাজিরা দুই প্রান্তে মোট ১২টি বুথে টোল আদায় হচ্ছে ম্যানুয়েলি (কম্পিউটার কালেক্টর) বা সনাতন পদ্ধতিতে। ইটিসি পদ্ধতিতে সেতুর দুই প্রান্তে আরো দু’টি বুথ চালু হলে তখন মোট ১৪টি বুথ থেকে আহরিত টোলের পরিমাণও অনেকাংশে বেড়ে যাবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের পদ্মা সেতুর মাওয়া সাইট অফিসের অতিরিক্ত পরিচালক শেখ ইসতিয়াক আহমেদ গতকাল জানান, এখনো পুরোপুরিভাবে ইটিসি পদ্ধতি শুরু হয়নি। তবে আগামী ডিসেম্বর মাসে এটি চালু হওয়ার বিষয়ে আমরা অনেকটাই নিশ্চিত।
সেতু কর্তৃপক্ষের সহকারী প্রকৌশলী নিলয় জানান, পাইলটিংয়ের পর গত বছরের নভেম্বরে বা ডিসেম্বরে ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন বা ইটিসি সিস্টেম চালুর টার্গেট রাখা হয়েছিল। তবে সফটওয়্যারের চূড়ান্ত পরীক্ষার কিছু কাজ এখনো বাকি রয়েছে। আগামী ডিসেম্বর মাসে কারিয়ান এক্সপার্টের মাধ্যমে সফটওয়্যারের চূড়ান্ত পরীক্ষার কাজ শেষ হলে ইটিসি পদ্ধতি পুরোপুরি চালু হয়ে যাবে।
ঢাকা-খুলনা রুটের প্রচেষ্টা পরিবহনের চেয়ারম্যান নোমান মিয়া জানান, ইটিসি পদ্ধতিতে টোল আদায় শুরু হলে আর কোনো ভোগান্তি থাকবে না। এতে করে অতি সহজেই টোল পরিশোধ করা যাবে এবং টোল আদায়ের পরিমাণও অনেকটা বেড়ে যাবে।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :