দীর্ঘ ২২ দিন নিষেধাজ্ঞা শেষে মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে পদ্মা নদীতে ইলিশ উৎসবে মেতেছে জেলেরা। ইলিশ ধরতে সবশেষ প্রস্তুতি নিয়ে গতরাত ১২ টার পর থেকে জাল, নৌকা নিয়ে নদীতেই ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। সুনশান নীরব ঘাটগুলোও হয়ে উঠছে কর্মচঞ্চল।
এর আগে মা-ইলিশ রক্ষায় গত ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত উপজেলার পদ্মা নদীতে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। ২২ দিনের এই নিষেধাজ্ঞা শেষে সবাই নদীতে নেমে পড়েছেন মাছ শিকারে।
সোমবার (৪ নভেম্বর) সকালে সরেজমিনে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, জেলেরা নদীতে অসংখ্য ইঞ্জিন চালিত ট্রলার দিয়ে মাছ ধরছেন। জেলে পল্লীতে বিরাজ করছে আনন্দঘন পরিবেশ। ঘাটে ফিরে এসেছে কর্মচাঞ্চল্য।
উপজেলার বাহাদুরপুর ঘাটের কয়েকজন জেলে জানান, গত ২২ দিন বেকার ছিলেন তারা। তাদের আয়-উপার্জন বন্ধ ছিল। কেউ কেউ অন্য পেশায় জড়িয়ে পড়লেও অনেকে নিজেদের নৌকা, জাল মেরামতে সময় কাটিয়েছেন। এ বছর মৌসুমের প্রথম থেকে ভালো মাছ পাওয়া যায়নি। অনেক জেলে নৌকা এখনো আর্থিকভাবে ঋণগ্রস্ত অবস্থায় আছেন। নিষেধাজ্ঞার পর নদীতে মাছ পাওয়া না গেলে তাদেরকে পথে বসতে হবে।
উপজেলার আন্ধারমানিক ঘাটের জেলে হাসান জানান, নদীতে তেমন মাছ নাই। কাল রাতে ইলিশ পেয়েছি মাত্র ৩ কেজি। এভাবে মাছ পেলে খরচই উঠবেনা।
উপজেলার গোপীনাথপুর উজানপাড়া গ্রামের রতন জানান, সর্বশেষ ২ থেকে ৩ বছর আগে ইলিশের সিজনে মাছ ধরেছিলাম। শখের বসে এবছর নদীতে মাছ ধরতে এসেছি। নদীতে আগের তুলনায় মাছ অনেক কম।
ইলিশ ক্রয় করতে আসা মো. ইবাদ নামের এক ক্রেতা জানান, ইলিশের তুলনায় ক্রেতা অনেক বেশি, তাই দামও অনেক বেশি। এই ইলিশের তুলনায় বরিশালে যে ইলিশ পাওয়া যাও ঐগুলার দাম কম। তারপরও এসেছি পদ্মার তরতাজা ইলিশ কেনার জন্য দেখি কি হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. নূরুল ইকরাম বলেন, হরিরামপুরে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা কঠোরভাবে পালন করা হয়েছে। এ সময় নদীতে প্রশাসন কঠোর ভাবে অভিযান পরিচালনা করে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় কিছু অসাধু জেলেকে আটক করে আইনের আওতায় আনা হয়। অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও আমরা আমাদের সামর্থ্যের সর্বোচ্চ দিয়ে অভিযান সফল করতে সক্ষম হয়েছি।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :