নাটোরের গুরুদাসপুরে আরফান নামের এক ব্যবসায়ীকে তার বালু ও মাছ চাষের ব্যবসা বন্ধ করে এলাকা ছাড়ার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী মানিক ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে। সরকার পতনের পর ব্যবসায়ী আরফানের ১৭ লাখ টাকার বালু আটকে রেখে বিক্রি করছেন ওই প্রভাবশালীরা।
এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী আরফান বাদী হয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী মানিক মোল্লা, রতন মোল্লা ও শাহিন মণ্ডলের বিরুদ্ধে গুরুদাসপুর আমলী আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত মানিক, রতন সিংড়া উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা ও অপর অভিযুক্ত শাহিন গুরুদাসপুরের খুবজীপুর গ্রামের বাসিন্দা।
মামলায় তিনি উল্লেখ করেছেন, নারায়ণগঞ্জ থেকে এসে তিনি গত ৪ বছর ধরে গুরুদাসপুরের সাবগাড়ি বাজারে বালু বিক্রির ব্যবসা শুরু করেন। এই ব্যবসায় স্থানীয় মানিক মোল্লাসহ আরো তিনজনের অংশীদায়িত্ব ছিল। মাস ছয়েক আগে প্রায় ৬ লাখ টাকার বালু গোপনে বিক্রি করেন মনিক। এনিয়ে অংশীদারদের মধ্যে অসন্তষ সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে অংশীদায়িত্ব থেকে মানিক মোল্লাকে বাদ দেওয়া হয়। মূলত তখন থেকেই মানিক মোল্লা ব্যবসা ছেড়ে চলে যেতে আরফানকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছিলেন। সবশেষ ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ১৭ লাখ টাকা মূল্যের প্রায় ১ লাখ ১০ সেপ্টি বালু জোরপূর্বক দখলে নেন মানিক ও তার অনুসারীরা।
ব্যবসায়ী আরফান বলেন, এই এলাকায় তিনি শুধু বালুর ব্যবসাই করেন না, পাশাপাশি ২৮ বিঘার তিনটি পুকুরে প্রায় ৫০ লাখ টাকার মাছ চাষের ব্যবসাও রয়েছে। এসব ব্যবসা ছেড়ে চলে যেতে মানিক প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছেন। ভয়ে এলাকায় আসতে পারছেন না তিনি। একারণে তিনি বাধ্য হয়ে আদালতের দারস্ত হয়েছেন।
বালু ও পুকুর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা শাহজামাল বাবু বলেন, প্রায় প্রতিদিনই বালু বিক্রি করছেন মানিক। প্রতিবাদ করায় মাছ চাষের একটি পুকুরের বৈদ্যুতিক সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছেন। এতে পুকুরে পানির ঘাটতি দেখা দেওয়ায় মাছ নিয়েও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। তাছাড়া মানিকের লোকজন লুটে নিয়েছেন এক্সকেভেটরের গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ। এখন এলাকা ছেড়ে যেতে প্রায়ই লোকজন নিয়ে এসে হুমকি দিচ্ছেন মানিক।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মানিক মোল্লা বলেন, আরফানের কাছ থেকে ১৯ মাসের শ্রমের মজুরী পান তিনি। তাছাড়া ১ লাখ ১০ সেপ্টি বালু তার কাছে বিক্রির প্রতিশ্রæতি দিয়েছিলেন আরফান। পরে অন্যের কাছে বালু বিক্রি করায় আরফানের বালু আটকে রেখেছেন তিনি।
গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম সারওয়ার হোসেন বলেন, ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :