বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি একটি শক্তিশালী ভিত্তি। এই দেশ বহু জাতিগোষ্ঠীর শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জন্য পরিচিত। সংবিধানে প্রত্যেক নাগরিকের সমানাধিকারের কথা রয়েছে—ধর্ম, রাজনীতি, ব্যবসা, শিক্ষা সহ সকল ক্ষেত্রেই। কিন্তু কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী এই সাম্প্রদায়িক ঐক্যকে বিনষ্ট করতে অপপ্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এমন গোষ্ঠীর কর্মকাণ্ড ঠেকাতে সরকার সবসময় সজাগ রয়েছে।
ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন ৯ নভেম্বর শনিবার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন। “সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা এবং সামাজিক সমস্যা নিরসনে ওলামা মাশায়েখদের করণীয়” শীর্ষক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি না থাকলে উন্নয়ন কখনোই সম্ভব নয়।”
উপদেষ্টা আরও জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি পেয়েছে, অর্থনীতি স্থিতিশীল হয়েছে এবং রেমিট্যান্সের প্রবাহও বাড়ছে। সরকার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকাণ্ডকে পুনরুজ্জীবিত করতে চায়, যা একসময় গবেষণা ও প্রকাশনার জন্য পরিচিত ছিল। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম আবারও পূর্বের সক্রিয়তায় ফিরে আসবে।
এছাড়া, উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন জাতীয় মসজিদ বাইতুল মোকাররমের সৌন্দর্যবর্ধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন, যা একে আরো দৃষ্টিনন্দন ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যময় করবে। মসজিদভিত্তিক গণশিক্ষার কোনো অনিয়ম পাওয়া গেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতিও তিনি দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, মডেল মসজিদের নির্মাণকাজে কোনো ত্রুটি থাকলে সেটিও আইনের আওতায় এনে সমাধান করা হবে।
এ বছর হজ ব্যবস্থাপনায় খরচ কমানোসহ কয়েকটি উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। হজে গমনেচ্ছুদের সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণ নির্ধারণ করে এর সমাধানের পরিকল্পনাও হাতে নেওয়া হবে বলে জানান উপদেষ্টা। আগামীতে সমুদ্রপথে হজের ব্যবস্থা চালু করার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। খুলনা জেলায় ১১টি মডেল মসজিদের মধ্যে ছয়টি ইতোমধ্যেই উদ্বোধন হয়েছে, চারটি নির্মাণাধীন এবং একটি উদ্বোধনের অপেক্ষায়।
মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক মো. তবিবুর রহমান, ধর্ম উপদেষ্টার একান্ত সচিব ছাদেক আহমদ এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের রাজশাহী বিভাগের পরিচালক মো. আনিসুজ্জামান সিকদার বক্তব্য রাখেন। খুলনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার দপ্তরের উপপরিচালক মো. ইউসুপ আলীর সভাপতিত্বে সভায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মুহম্মদ জালাল আহমদ স্বাগত বক্তব্য দেন।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :