২০ হাজার টাকা খরচ করে ১৯০ ফুট পর্যন্ত পাইপ বসানোর পরও নলকুপের পানি আয়রন মুক্ত করতে পারিনি। অবশেষে আয়রনযুক্ত পানি ব্যবহার করতে হচ্ছে। ২০২০ সাল থেকে শুনে আসছি পৌরসভায় পানি শোধনাগার নিমার্ণ হচ্ছে। এটি চালু হয়ে গেলে সুপেয় পানির অভাব আর থাকবে না। কিন্তু দীর্ঘ চার বছরেরও চালু হয়নি পৌর পানি শোধনাগারটি। যার কারণে পৌরবাসি পানীয় জলের তীব্র সংকটে ভুগছে।
কথাগুলো বলেন, পৌর সভার ৮ নং ওয়ার্ডের আবু সাঈদ মিয়া। তিনি বলেন, ২১ বছর ধরে পৌরবাসি নাগরিক সেবা ময়লা আর্বজনা, লাইটিং, রাস্তাঘাট, ড্রেনেস ব্যবস্থাপনা এমনকি সুপেয় পানি সরবরাহ হতে বঞ্চিত রয়েছে।
২০০৩ সালে স্থাপিত হয় গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ পৌরসভা। নানাবিধ কারণে আজ পৌরসভাটি প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হতে পারেনি। সে কারণে পৌরবাসি নাগরিক সেবা হতে অনেকটা বঞ্চিত রয়েছে। পৌরবাসির কর ছাড়া পৌরসভা অচল। আবার পৌরসেবা প্রদান না করলে কর দিচ্ছে না পৌর নাগরিকগণ বলেন, সাবেক কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান হাবিব। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন পর আলোর মুখ দেখতে শুরু করেছে পৌরসভাটি। অল্প সময়ের মধ্যে সকল সমস্যা সমাধানের আশু সম্ভাবনা রয়েছে।
পৌরসভার আরেক নাগরিক জাফর আলী সরকার যাদু অক্ষেপ করে বলেন, নামে মাত্র এটি পৌরসভা। পৌর নাগরিকদের একটি সেবা আজও নিশ্চিত হয়নি। বিগত ২১ বছরের পানীয় জলের সংকট দুর করতে পারেনি পৌরসভা। সে কারণে পৌরবাসি সুপেয় পানির অভাবে ভুগছে। পানি সরবরাহের অভাবে পাবলিক টয়েলেট, মসজিদ, মন্দির, হাট-বাজার, বাসষ্ট্যান্ডে সুবিধাভোগি মানুষজন নানাবিধ কষ্ট করে আসছেন।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর হতে সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালে পৌরসভার পূর্ব বাইপাস মোড়ে ৩৪ শতক জমির ওপর পৌর পানি শোধনাগারের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে ৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকা ব্যয়ে এটি নির্মাণ হচ্ছে। ২০০ ঘন মিটার/ঘন্টা ক্ষমতা সম্পন্ন এই পানি শোধনাগারটি নির্মাণ করছেন মার্স কনসোটিয়াম প্রাইভেট লিমিটেড।
নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের ইঞ্জিনিয়ার লোকমান হোসেন বলেন, পানি শোধনাগারটি নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এখন পাইপ লাইন বসানোর কাজ চলছে। আরেকটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান পাইপ বসানোর কাজ করছে। পাইপ বসানো শেষ হতে পানি সরবরাহ চালু করা হবে। আশা করা হচ্ছে ২০২৫ সালের শুরুতেই এটি চালু হবে। আগামি এক বছর মার্স কনসোটিয়াম প্রাইভেট লিমিটেড এটি তত্ত্বাবধান করবেন।
উপজেলা উপ-সহকারি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মো. খোকন রানা বলেন, পৌর পানি শোধনাগারটি চালু হলে ৭০০ পরিবার সুপেয় পানি সুবিধাভোগ করবেন। শুরুতেই ৪০০ পরিবারের চাহিদা প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে এটি বাড়িয়ে ৭০০ পরিবারের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন ৩০০ পরিবারের বাসায় পাইপ লাইন বসানোর কাজ চলছে। অল্প সময়ের মধ্যে পানি সরবরাহ চালু করা হবে। শোধনাগারটি চালু হলে পৌরসভায় পানীয় জলের সংকট অনেকটা দুর হবে।
সাবেক মেয়র মো. আব্দুর রশিদ রেজা সরকার ডাবলু বলেন রাজনৈতিক বৈষম্যের কারণে এই পৌরসভাটির নাগরিক সেবাসমুহ অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে। নানাবিধ চড়াই উতরাই পেরিয়ে একটি বড় প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে পৌরবাসির সকল নাগরিক সেবা নিশ্চিত করা সম্ভাব হবে।
পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নিবার্হী অফিসার মো. নাজির হোসেন বলেন, সবেমাত্র দায়িত্ব নিয়ে কাজ শুরু করা হয়েছে। দেখা যাক কতটা নাগরিক সেবা প্রদান করা সম্ভাব হয়। অল্প সময়ের মধ্যে পৌর পানি শোধনাগারটি চালু করা হবে। পৌর কর আদায় ছাড়া পৌরসভার উন্নয়ন সম্ভাব নয়। সেক্ষেত্রে সেবা প্রদান নিশ্চিত না করলে কর আদায় হচ্ছে না।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :