বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের ৭৬তম জন্মদিন আজ। প্রতি বছরই এদিন রাত ১২টা ১ মিনিটে প্রিয়জনদের নিয়ে জন্মদিনের কেক কাটতেন তিনি। বাংলা সাহিত্যের জননন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ৭৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় নানা আয়োজনে মধ্য দিয়ে পালন করা হয়েছে।
বুধবার(১৩ নভেম্বর) দিনব্যাপী নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় নানা কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। হুমায়ূন আহমেদ তাঁর পিতৃভূমি কেন্দুয়া উপজেলার রোয়াইলবাড়ি -আমতলা ইউনিয়নের কুতুবপুর গ্রামে প্রতিষ্ঠিত শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ এসব কর্মসূচির আয়োজন করে। দিবসটি উপলক্ষে সকাল ১০টার দিকে শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ প্রাঙ্গণে কোরআন খতমের মাধ্যমে কর্মসূচির সূচনা করা হয়। পরে বর্ণাঢ্য আনন্দ র্যালি, হুমায়ূন আহমেদের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, জন্মদিনের কেক কাটা, আলোচনা সভা, শিক্ষার্থীদের অংশ গ্রহণে কবিতাপাঠ, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা ও সন্ধ্যায় আনন্দঘন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
আলোচনা সভায় শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমদাদুল হক তালুকদার, বিদ্যালয়টির সহকারী প্রধান শিক্ষক শরীফ আনিস আহমেদ, বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সদস্য সদস্যবৃন্দ প্রমুখ।
প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান বলেন, পল্লী এলাকায় উপজেলার রোয়াইলবাড়ী ইউনিয়ন কুতুবপুরে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় দীর্ঘকাল থেকে শিক্ষায় অবহেলিত ছিল এএলাকার মানুষ। তাই হুমায়ুন আহমেদ তার মা আয়েশা ফয়েজের অনুরোধে এখানে এস্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০৬ সালে মাত্র ৪৮ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা করে শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীট। বর্তমানে স্কুলটিতে প্রায় ৩৫০ জন শিক্ষার্থী এবং ১৯ জন শিক্ষক- কর্মচারী রয়েছেন। ২০২২ সালে জুনিয়র স্কুল থেকে মাধ্যমিক বিদ্যালয় পর্যায়ে এমপিওভুক্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালের এই দিনে নেত্রকোনার কেন্দুয়ার কুতুবপুরে হুমায়ূন আহমেদের জন্ম। বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ও মা আয়েশা ফয়েজ। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। তার এক ভাই বিজ্ঞান কল্পকাহিনীর লেখক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মুহম্মদ জাফর ইকবাল। অন্য ভাই আহসান হাবীব কার্টুনিস্ট ও রম্যলেখক।
হুমায়ূন আহমেদ তার দীর্ঘ চার দশকের সাহিত্যজীবনে উপহার দিয়েছেন সাড়া জাগানো সব উপন্যাস। তৈরি করেছেন হিমু, মিসির আলীর মতো জনপ্রিয় চরিত্র। নির্মাতা হিসেবেও উপহার দিয়েছেন জনপ্রিয় নাটক এবং চলচ্চিত্র। বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি। তার মধ্যে একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, হুমায়ূন কাদির স্মৃতি পুরস্কার, লেখক শিবির পুরস্কার, মাইকেল মধুসূদন দত্ত পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও বাচসাস পুরস্কার উল্লেখযোগ্য।
ক্ষণজন্মা একথাশিল্পী হুমায়ুন আহমেদের জীবন ২০১২ সালে কেড়ে নেয় মরণব্যাধি ক্যানসার। মুগ্ধ পাঠকের হৃদয়ে তিনি বেঁচে থাকবেন তার রচনাবলিতে আজীবন।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :