সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে অনলাইনে জুয়া খেলার রমরমা ব্যবসা, আসক্ত হচ্ছে তরুণ শিক্ষার্থী সহ যুবসম্প্রদায়,নিঃস্ব হচ্ছে জুয়ায় হেঁড়ে অনেক মানুষ। বিবরনে প্রকাশ, উপজেলার দক্ষিণ বংশিকুন্ডা ইউনিয়নের হামিদপুর গ্রামের মোঃ কদু মিয়া`র ছেলে মোঃ আনোয়ার হোসেন (মিষ্টার মিয়া) সে মুঠোফোনে অনলাইনে জুয়ার রমরমা ব্যবসা অতি গোপনে দেদারসে চালিয়ে যাচ্ছে। এবং হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা, নষ্ট হচ্ছে এলাকার পরিবেশ।
জানা যায়, ভারতের শীলং তীর নামক জুয়া খেলাটি অনুষ্ঠিত হয়। ঐ তীর খেলার একটি নাম্বারে ১ হাজার টাকা বাজী ধরলে, নাম্বারটি লেগে গেলে এই খেলোয়াড় পাবে ১০ হাজার টাকা। ১০ গুণ টাকা বেশি পাওয়ার লোভে, অনেক সহজ সরল মানুষ জড়িয়ে পড়ছে তীর নামক জুয়া খেলায়। জুয়া খেলার এজেন্ট মোঃ মিষ্টার মিয়ার জুয়া খেলার ফাঁদে পরছে পেশাদার জুয়ারীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। সেই সাথে যুবসমাজের তরুণ শিক্ষার্থীরাও এই জুয়া খেলায় জড়িয়ে পড়ছেন বলে এলাকায় অভিযোগ উঠেছে। ফলে অনেক তরুণ শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা থেকে ছিটকে পড়ে ঝড়ে পড়ছে স্কুল থেকে, এমন খবরও পাওয়া গেছে। দেখা দিয়েছে সামাজিক নৈতিক কর্মকাণ্ড,দেখা দিয়েছে সুশীল সমাজের অবক্ষয়। আর এ জুয়ার ফাঁদে ফেলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন, লোভী মিষ্টার মিয়া নামের এক যুবক।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, অনলাইন তীর খেলার এজেন্ট, মিষ্টার মিয়া দীর্ঘদিন যাবৎ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখে ধুলা দিয়ে,পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের শীলং তীর` খেলা নামক একটি অনলাইন জুয়ার কাউন্টার এজেন্ট হিসেবে এলাকায় গড়ে তুলেছে জুয়ার বিশাল নেটওয়ার্ক। বিস্তার ঘটাচ্ছেন তীর খেলার প্রভাব। এছাড়াও জানা গেছে, মিষ্টার মিয়া এর আগে ঢাকায় রঙ মিস্ত্রী হিসেবে কাজ করতেন। এই জুয়ার বদৌলতে অল্পদিনেই তিনি বনে গেছেন লাখপতি । এলাকায় জমি কেনা সহ গড়ে তুলছেন দালান বাড়ি। এই অনলাইন জুয়ায় ১ টাকা ধরলে ১০ টাকা পাওয়ার লোভে সর্বস্বান্ত হচ্ছে অনেক মানুষ। তাছাড়াও শিক্ষার্থী ও উঠতি বয়সী যুবকেরা ঋণ গ্রস্থ হয়ে, মানসিক যন্ত্রণায় মাদকের দিকে দাপিত হচ্ছে । এই অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে দিশেহারা হচ্ছে অনেক মানুষ,ধ্বংসের পথে অনেক পরিবার। এলাকাতে বাড়ছে অপরাধ অরাজকতার প্রবণতা। আরও জানাগেছে,মিষ্টার মিয়া প্রতিদিন উপজেলার বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের হামিদপুর চৌরাস্তা বাজারের একটি দোকান ঘরে বসে এই জোয়া খেলাটি পরিচালনা করেন। নগদ অথবা অনলাইন ব্যাংকিং (বিকাশ/নগদ) এর মাধ্যমে জুয়ারিদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করেন। এবং এক থেকে এক`শ নাম্বার পর্যন্ত, যেকোনো নাম্বারে টাকা বাজী ধরার নিয়ম আছে। এছাড়া একাধিক নাম্বারে টাকা বাজী ধরেন অনেকে। আর যে নাম্বারটি খেলোয়াড়েরা মার্ক করবে, সেই নাম্বারটি একটি নোট প্যাডে লিখে রাখা হয়। অথবা টাকা প্রদানকারীর খেলোয়াড়দের মোবাইলে টাকার পরিমাণ ও পছন্দের নাম্বার লিখে ম্যাসেজ করা হয়। নিয়মিত খেলাটি প্রতিদিন বিকাল চারটায় ভারতের `শীলং অনুষ্ঠিত হয়। এবং তীরে`ওয়েবসাইটে খেলার ফলাফল প্রকাশিত হয়। ওয়েবসাইটে প্রকাশিত নাম্বারের সাথে কারো নাম্বার মিলে গেলে তাকে দশগুণ টাকা বুঝাইয়া দেন এজেন্ট মিষ্টার মিয়া । আর নাম্বার না মিললে সব টাকাই নিয়ে যায় কাউন্টার এজেন্ট মিষ্টার মিয়া।খেলাটি অত্যন্ত সহজ ও বেশি লোভনীয় হওয়ায় এলাকার সবার কাছে দ্রুত বিস্তার ছড়াচ্ছে বলেও জানান স্থানীয়রা।
ভারতের শীলং কাউন্টার এজেন্ট মোঃ মিষ্টার মিয়ার সাথে মুঠোফোনে কথা হললে, তিনি এর সত্যতা স্বীকার করে বলেন,`আমি কাউন্টার এজেন্ট নই,কাউন্টার সিলেটের অন্য একজন।আমি তার মহুরি হিসেবে কামলা দেই।
এমতাবস্থায় এলাকার সচেতন মহলের মন্তব্য, জুয়ার মরণ ফাঁদ বন্ধ করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ অত্যান্ত জরুরী।
মধ্যনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ সজীব রহমান বলেন, `মাদক ও জুয়ার বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যহত রয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে শীঘ্রই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।`
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :