মৌলভীবাজারে প্রতিপক্ষের হামলায় যুক্তরাজ্য প্রবাসী আশরাফুল ইসলাম ও বাহরাইন প্রবাসী তারেক আজিজ গুরুতর আহত হন। মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আগনসী গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় তারেক আজিজের অবস্থা সংকটাপন্ন হলে তাকে সিলেট আল হারামাইন হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করেন তার স্বজনরা।
হামলায় ঘটনায় তারেক আজিজের ভাই তাওহিদ আহমদ বাদি হয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানায় ২ নভেম্বর একটি মামলা দায়ের করেন।মামলায় আসামী করা হয়েছে প্রতিবেশী সাহিদ মিয়া, শাহরিয়ার, হেলাল মিয়া, বিলাল মিয়া, রেজাউল করিম রাজিব, শাহিন মিয়া, রাফি মিয়া, নিলুপা বেগম ও জাহিদ মিয়া-কে।
মামলার এজহার ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, আহতদের সাথে জায়গা নিয়ে দীর্ঘ দিন যাবত বিরোধ চলছে প্রতিবেশী বিলাল মিয়াদের। একাধিকবার স্থানীয়ভাবে মিমাংশার উদ্যোগ নেয়া হলেও নিষ্পত্তি হয়নি। এক পর্যায়ে যুক্তরাজ্য প্রবাসী আশরাফুল ইসলাম ও বাহরাইন প্রবাসী তারেক আজিজ দেশে এসে পুকুরে মাছ ধরার জন্য ২ নভেম্বর সন্ধ্যায় পানি সেচের মেশিন লাগানোর প্রস্তুতি নেন। প্রতিবেশী বিল্লাল মিয়া ও তাদের স্বজনরা ইউপি সদস্য সুহেল’কে বিষয়টি অবগত করলে কিছু সময়ের মধ্যেই ইউপি সদস্য এসে মেশিন না লাগানোর কথা বলেন এবং উভয় পক্ষের কাগজ নিয়ে বসে দুই দিনের মধ্যে সমাধান করার আশ্বাস দেন। ইউপি চেয়ারম্যানও বিষয়টি অবগত হন। ইউপি সদস্যের কথায় প্রবাসী আশরাফুল ও তারেক সেচের সরঞ্জমাদি ঘরে রেখে এশার নামাজের জন্য মসজিদে চলে যান। এমতাবস্থায় বিলাল তার ভাইদের নিয়ে প্রবাসী তারেকের কেয়ারটেকার জহিরুল ইসলাম সুমন এর উপর এবং ঘরে হামলা করার অভিযোগ উঠেছে। প্রবাসী আশরাফুল ও তারেক স্থানীয়দের কাছ থেকে এ হামলার খবর জানতে পেরে কেয়ারটেকারকে রক্ষা করতে বাড়িতে আশার পথে মিরাস ও ইউসুফ এর দোকানের সামনে আশা মাত্রই তাদের উপর অতর্কিত হামলা করা হয়। স্থানীয় ইউপি সদস্য সুহেল মিয়া ও স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে সংঘর্ষ বন্ধ হয়। সংঘর্ষে প্রবাসী আশরাফুল ইসলাম ও বাহরাইন প্রবাসী তারেক আজিজ গুরুতর আহত হন।
এদিকে এই ঘটনায় বিলাল মিয়া বাদি হয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানায় ৯ নভেম্বর একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রবাসী তারেক আহমদ, তাওহিদ আহমদ, লুৎফুর রহমান, এমরান মিয়া, ইমন মিয়া, সুমন মিয়া ও ফাহেতা বেগমকে আসামী করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা অনু মিয়া ও পলাশ সরকার বলেন, দীর্ঘ দিন যাবত উভয় পরিবারের মধ্যে জায়গা নিয়ে বিরোধ চলছে। পূর্বের বিরোধ থেকেই এ সংঘর্ষ হয়।
অবসরপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী হাছবা বেগম বলেন, যেখানে আমাদের পরিবারের জায়গা সেখানেই বিলালের পরিবার জায়গা দাবি করে। তাদের মূল ঝামেলাটা হল পুকুর পার দিয়ে তাদের যাতায়াতের রাস্তা করে দেয়া। তাদের বাড়ি থেকে বের হওয়ার নিজস্ব কোনো রাস্তা নেই।
এবিষয়ে মারুফ আহমদ শাহরিয়ার বলেন, দীর্ঘ দিন যাবত পুকুর সহ একাধিক জায়গা নিয়ে লুৎফুর রহমানের পরিবারের সাথে আমাদের বিরোধ চলছে। এমতাবস্থায় কোনো সমাধান ছাড়াই লুৎফুর রহমানের ছেলে ও ভাতিজারা পুকুরে পাম্প লাগাতে চান সেচ দেয়ার জন্য। এনিয়ে সংঘর্ষ হয়। তাদের হামলায় আমাদের ৩জন লোক গুরুত্বর আহত হন। থানায় আমরা একটি অভিযোগ দায়ের করেছি।
আহত প্রবাসী তারেক আজিজ এর পিতা লুৎফুর রহমান বলেন, আমার সন্তানদের বিবাদীগণ আতর্কিত হামলা করে গুরুতর আহত করেছে। আমার ছেলে তারেক অজিজ এখনো আইসিওতে ভর্তি। ঘটনার সময় আমি, আমার স্ত্রী এবং ছোট ছেলে বাসায় ছিলাম। তারপরেও বিবাদী বিলাল মিয়া আমাদেরকে আসামী করে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মৌলভীবাজার মডেল থানার জাকির হোসেন রুবেল বলেন, মামলার তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে প্রবাসী আহতের বিষয়টা আমরা গুরুত সহকারে দেখছি।
ইউপি সদস্য সুহেল মিয়া’কে বিগত তিন দিন একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :