বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ব্যাপক ভাংচুরের পর দীর্ঘ তিনমাস পর সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে সাফারি পার্ক গাজীপুর। তিনমাস পর পার্কে দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত। সাফারি পার্কে গাজীপুর নামে যাত্রা শুরু। গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পার্ক খুলার বিষয়টি জানার পর অনেকেই এসেছে পার্কে। আবার কেউবা জানতেন না পার্ক বন্ধ ছিল। পর্যটন মৌসুম বিবেচনায় পার্কটি খুলে দেয়া হয়েছে। দর্শনার্থীদের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে জানিয়েছে পার্ক কর্তৃপক্ষ।
আজ ১৫ নভেম্বর শুক্রবার সকাল থেকে সাফারি পার্ক গাজীপুর ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে পার্কের প্রধান ফটকসহ বিভিন্ন বেষ্টনীতে।
সরেজমিনে দেখাযায়, নিদিষ্ট টিকিট সংগ্রহ করে সারি সারি দর্শনার্থীরা পার্কে প্রবেশ করছে। পার্কে প্রবেশের পর পার্কের বিভিন্ন বেষ্টনীতে নিদিষ্ট টিকিট সংগ্রহ করে দেখছেন বিভিন্ন পশুপাখি। কেউ খুনসুটি করছেন পাখির সঙ্গে। কেউ বা পাখির সঙ্গে ছবি তুলেছন। শিশুরা পশুপাখির সঙ্গে খেলা করছে। আনন্দ মেতে উঠেছে বিভিন্ন বয়সী শিশুরা। কোর সাফারি, জলহস্তির, পাখিশালা, ময়ূর বেষ্টনী, ধনেশ বেষ্টনী, উটপাখি বেষ্টনীতে বিভিন্ন বয়সী দর্শনার্থীদের উপস্থিত চোখে পড়ার মতো। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন বয়সী দর্শনার্থীরা এসেছে সাফারি পার্ক গাজীপুরে। বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা এসেছে দলবলে। পাখিশালায় বিভিন্ন বয়সী দর্শনার্থীদের উপস্থিত চোখে পড়ার মতো। বিভিন্ন বয়সী দর্শনার্থীরা পাখিকে তাদের পছন্দের খাবার কাছে টানছে। বিভিন্ন পাখি দর্শনার্থীদের শরীরে উঠে যাচ্ছে। খুনসুটিতে ব্যস্ত শিশুরা। পার্কের বিভিন্ন বেষ্টনী ঘুরে কান্ত শরীরে গাছের নিচে বিশ্রাম নিতে দেখা গেছে পার্কে আসা দর্শনার্থীদের।একেএকে মিনিবাসে করে পার্কের ভেতর ঘুরে দেখছেন রয়েল বেঙ্গল টাইগার, হিংস্র প্রাণী সিংহ, ভাল্লুক, জেব্রা, জিরাফ, নীলগাই, ঢাকার রায়েরবাগ থেকে এসেছেন ব্যবসায়ী শফিকুর রহমান তিনি বলেন,গণমাধ্যম জানতে পারলাম শুক্রবার সকাল থেকে পার্ক খুলা হচ্ছে। পরিবারের সব সদস্যদের নিয়ে পার্কে আমাদের সঙ্গে শিশুরা এসেছে। অনেক আনন্দ করছে সবাই। দীর্ঘদিন পর পার্কে ঘুরতে এসে খুবই ভালো লাগছে। বিশেষ করে শিশুরা অনেক আনন্দ করছে।
ঢাকার শ্যামলী থেকে শিশুকন্যা লুবনাকে সঙ্গে নিয়ে এসেছেন শারমিন লিপি দম্পতি তারা জানান, আমরা জানতাম না দীর্ঘ সময় পার্কটি বন্ধ ছিলো। আজ পার্কে এসে জানতে পারলাম। আসলে আমাদের ভাগ্য খুবই ভালো, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আজ খুলছে। আমার শিশুকন্যা পাখির সঙ্গে খুনসুটি করছে। আমি আমার স্বামী পাখিদের খুব কাছে পেয়ে আনন্দ করছি। খুবই আনন্দ করছি।
পার্কে আসা দর্শনার্থী রাকিবুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকার পর পার্ক খুলার প্রথম দিন স্বজনদের নিয়ে পার্ক এসেছি। কোর সাফারি পার্কের নিদিষ্ট লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছি মিনিবাসের জন্য। মিনিবাসে করে বিভিন্ন প্রাণী দেখবো। অনেক আনন্দ করছে সবাই।
পার্কে আসা দর্শনার্থী মশিউর রহমান বলেন, পার্কে এসে খুবই ভালো লাগছে। দীর্ঘ দিনপর পার্কে এসে হিংস্র প্রাণীদের একেবারে কাছ থেকে দেখতে পেয়েছি। শিশুরা বেশি আনন্দ পেয়েছে। পার্কের ব্যবস্থাপনার বিষয়টি সামনে এনে তিনি জানিয়েছেন মিনিবাসের সংখ্যা খুবই কম। আরো বাড়নো দরকার।
সাফারি পার্ক গাজীপুরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী বনসংরক্ষক এসিএফ মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন পর পার্ক খুলার পর আজ পার্কে ভালো দর্শনার্থীরা এসেছে। দীর্ঘ দিন বন্ধের মাঝে বেশকিছু প্রাণী শাবকের জন্ম হয়েছে। সেগুলো পার্কে অবাদে বিচরণ করছে, পার্কে আসা দর্শনার্থীরা সুন্দর ভাবে উপভোগ করছে। তিনি জানান, ক্ষতিগ্রস্ত প্রজাপতি গার্ডেন, শিশুপার্ক, ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম মেরামতের পর খুলে দেয়া হবে। এগুলো বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। তিনি আরও জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কটি নতুন নাম সাফারি পার্ক গাজীপুর নামে যাত্রা শুরু করেছে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :