শীত বাড়ার সাথে সাথে নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশালের ঐতিহ্যবাহী সাপ্তাহিক বাজার সরগরম হয়ে উঠেছে। এখানকার ফুটপাতে এখন গরম কাপড় বেচাকেনায় ব্যস্ত সময় পার করছে ক্রেতা-বিক্রেতারা। প্রতি সপ্তাহের শুক্রবার ও সোমবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত বসে এই বাজারটি। এসময় ক্রেতা বিক্রেতাদের পদচারণায় জমজমাট হয়ে উঠে বাজার এলাকাটি।
পাশের আলোকসজ্জিত বড় বড় মার্কেটের দোকান গুলোতে বেচাকেনা কম থাকলেও ফুটপাতের বাজারে গরম কাপড়ের বিক্রি বেড়েছে আগের চেয়েও বেশি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কম দামে কামড় কিনতে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের ক্রেতারা ফুটপাতের দোকানে ভিড় করছেন। শীতের আগমনকে ঘিরে মৌসুমী হকারদের সংখ্যাও দেখা গেছে বেশি। তবে এখানে পুরুষ ক্রেতার চেয়ে মহিলা ক্রেতাই বেশি দেখা গেছে। এই ফুটপাতে শীতের চাদর, জ্যাকেট, সোয়েটার, কম্বল, মোটা কাপড়ের গেঞ্জি, হুডি, মাফলার, কমফোর্টার, হাতমোজা, কানটুপিসহ সব ধরনের শীতবস্ত্রের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানীরা।
ফুটপাতের দোকানদার শফিকুল ইসলাম বলেন, এই বাজারে কেনার চেয়ে কাপড় নাড়াচাড়া বেশি করেন। এমনিতেই ভিতরের দোকানগুলো থেকে কম দামে কাপড় বিক্রি করি। তারপরও দাম বলে কেনার চেয়ে কম। কিছু বলার নেই। কারণ দশজন দেখবে একজন কিনবে।
খাদিজা নামে এক ক্রেতা বলেন, এই ফুটপাতের বাজার খুবই ভাল। বাজারের অধিকাংশ দোকানেই নরসিংদীর বাবুরহাটের কাপড় বিক্রি হচ্ছে। তাই কম দামে নিত্য নতুন জামা কাপড় পাওয়া যায় এ বাজারে।
নাজমুল হক নামের আরেক ক্রেতা বলেন, মার্কেটে কাপড়ের দাম অনেক বেশি। তার বিপরীতে ফুটপাতে নতুন ও পুরোনো কামড়ের দাম তুলনামূলক কম, কাপড়ের মানও ভাল। তাই ফুটপাতের দোকানে এসেছি কাপড় কিনতে। কয়েকটি দোকান ঘুরে পরিবারের সদস্যদের জন্য পছন্দসই কামড় কিনে নিলাম।
সোনিয়া নামে আরেক ক্রেতা বলেন, যে চাদর ও সোয়েটার আমি ফুটপাত থেকে সাড়ে চার শ` টাকা দিয়ে কিনেছি, সেটা মার্কেটের দোকানে গেলে নয় শ` থেকে এগার শ` টাকা লাগতো। আমাদের মতো মধ্য বিত্তদের জন্য এই দোকানগুলো অনেক উপকারের।
দোকানের বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ফুটপাতে বিভিন্ন ধরনের শাল ও চাদরের দাম পরে ৩০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা, সোয়েটার ২৫০ টাকা থেকে ৫৫০ টাকা, কাপড়ের জুতা ১৫০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা,জ্যাকেট ৫০০ থেকে ৮৫০ টাকা, গরম কাপড়ের তৈরি প্যান্ট ২০০ টাকা থেকে ৩৮০ টাকা, পায়জামা ১২০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা, টুপিওয়ালা গেঞ্জি ১৩০ টাকা থেকে ২২০ টাকা, টুপি ১০০ টাকা থেকে ২২০ টাকা, মাফলার পাওয়া যায় ১০০ টাকা থেকে ২২০ টাকার মধ্যে, কম্বল ২৫০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা, বিদেশী কম্বল ২০০০ টাকা থেকে ৩৫০০ টাকা।
ঘোড়াশাল বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম বলেন, ‘শুক্র ও সোমবার এই দুই দিন হাটের বার থাকায় প্রায় চার শতাধিক ভ্রাম্যমাণ দোকান এই ফুটপাতে বসে। ক্রেতা ও বিক্রেতাদের নিরাপত্তার জন্য আমরা বাজার কমিটির লোকজন এই দুইদিন তাদের বেচাকেনা মনিটরিং করে থাকি। কারণ এ হাটে নারী ক্রেতার সংখ্যা বেশি। স্থানীয় ফাঁড়ি পুলিশও আমাদের সার্বক্ষনিক সহযোগিতা করে যাচ্ছে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :