AB Bank
  • ঢাকা
  • শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

রায়গঞ্জে ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দখলে সরকারি হাসপাতাল!


Ekushey Sangbad
রায়গঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি, সিরাজগঞ্জ
০৫:৫৬ পিএম, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪
রায়গঞ্জে ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দখলে সরকারি হাসপাতাল!

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানি প্রতিনিধিদের (রিপ্রেজেনটিভ) দৌরাত্ম্য দিন দিনই বেড়েই চলেছে।

দিনভর ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দখলে থাকে হাসপাতাল। তাদের দৌরাত্ম্যে নানা হয়রানি ও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন রোগীরা। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সকাল ৯টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকলেও মানছেন না কোম্পানি প্রতিনিধিরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, চিকিৎসকের কক্ষের সামনে ও ভেতরে ঔষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের ভিড় লেগেই আছে। অবস্থান নিয়ে রোগীদের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে টানাহেঁচড়া করেন। ছবি তোলেন, দেখেন কোন কোম্পানির ওষুধ লেখা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে তারা ভিজিট করে রোগীদের চিকিৎসা সেবায় ব্যাঘাত ঘটাচ্ছেন। কোনো রোগীকে চিকিৎসকের কক্ষে ঢুকতে দেখলেই ১০-১২ জন প্রতিনিধি ওই কক্ষের সামনে এবং ভেতরে ভিড় করছেন। আবার কেউ কেউ রোগীকে অপেক্ষায় রেখে তাদের ভিজিট সেরে নিচ্ছেন। এর বাইরেও প্রতিনিয়তই চোখে পড়ে এসব প্রতিনিধিদের নানান দৃশ্য। সরকারি এ হাসপাতালটিতে রোগীরা ডাক্তারের কক্ষ থেকে বের হওয়া মাত্রই বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা তাদের পথে দাঁড় করিয়ে ব্যবস্থাপত্র টেনে নিয়ে সেটির ছবি তুলে রাখেন। প্রায়ই দেখা গেছে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা জরুরি বিভাগের চিকিৎসকের কক্ষের সামনে ভিড় করে আছেন।

সেই ভিড় ঠেলে চিকিৎসকের কক্ষে ঢুকতে হচ্ছে রোগীদের। আবার ভেতরে প্রবেশ করলেও দেখা যায় সেখানে চলছে ভিজিট। এভাবেই প্রতিদিন সরকারি এ হাসপাতালটিতে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলছে। ফলে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন রোগীরা। 

ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধি কয়েকজনের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের ডাক্তারের সঙ্গে ভিজিট করার অনুমতি দিয়েছেন। তাই আমরা ডাক্তার ভিজিটে আসি।

হাসপাতালে আসা এক শিশু রোগীর মা রিশা খাতুন বলেন, আমি ডাক্তারের কক্ষে ঢুকেই দেখি ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা ওই চিকিৎসকের সাথে দাঁড়িয়ে কথা বলছেন। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর ডাক্তারের কাছ থেকে চিকিৎসা নিয়েছি। 

রায়গঞ্জ পৌর সভার বেতুয়া এলাকার বাসিন্দা রেজাউল করিম বলেন, একেকজন রোগীর ব্যবস্থাপত্র নেয়ার জন্য ৫-১০ জন প্রতিনিধি টানাটানি শুরু করেন। অনেক মুমূর্ষু রোগী এতে আরও অসুস্থ হয়ে যান। এনিয়ে রোগীর স্বজন ও ওষুধ কোম্পানীর প্রতিনিধির মধ্যে ঝগড়াও হয়। তিনি আরো জানান, চিৎসকের সাথে ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা তাদের কোম্পানির ঔষধ লিখতে চুক্তি করেন। তার মতে যেহেতু একজন চিকিৎসক ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধির দেওয়া তালিকা অনুযায়ী ব্যবস্থাপত্র দিয়ে সুবিধা নিচ্ছেন। সেক্ষেত্রে কোন রোগীকে ব্যবস্থাপত্র দিলে সেটার কার্বন কপি রেখে ঐ ঔষধ কোম্পানি প্রতিনিধিদের অফিস শেষে দেওয়াটাই ভাল মনে করি। এতে অন্তত দৌরাত্ম ও হয়রানি থেকে রক্ষা হবে রোগী ও তাদের স্বজনরা। 

স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী এম. এ হুসাইন জানান, একজন রোগীর ব্যবস্থাপত্র একান্তই তার গোপনীয় বিষয়। কিন্তু ব্যক্তিগত ব্যবস্থপত্রের ছবি তুলে নিচ্ছেন কোম্পানির প্রতিনিধিরা। এতে রোগীদের গোপনীয়তা রক্ষা হচ্ছে না বলে জানান তিনি। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাবেক এক  বিক্রয় প্রতিনিধি জানান, প্রেসক্রিপশনে ঔষুধ লিখার জন্য প্রতিমাসেই কলম, পেড, চাবির রিং থেকে শুরু করে টিভি-ফ্রিজ, নগদ অর্থসহ বিভিন্ন উপহার সামগ্রী  দিতে হয় ডাক্তারদের। তার বিনিময় প্রতিটি প্রেসক্রিপশনেই আমাদের ঔষধ লিখতে হবে। এছাড়াও এসব ব্যবস্থাপত্রের একটি কপি মেইল করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠাতে হচ্ছে।

রায়গঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) সাদিয়া জাহান তুন্নি বলেন, চিকিৎসকের কক্ষের সামনে কোনোভাবেই অবস্থান নেয়ার সুযোগ নেই। হাসপাতাল চলাকালীন তাদের ভেতরে আসার নিয়ম বহির্ভূত। সপ্তাহে শনিবার ও বৃহস্পতিবার দুপুর ১ টার পর মাত্র এক ঘন্টা ভিজিটের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যা লিফলেট আকারে হাসপাতালে প্রাঙ্গণে টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু কোম্পানির প্রতিনিধিরা নিয়ম ভঙ্গ করে প্রতিদিনই হাসপাতালের চিকিৎসক ও রোগীদের বিরক্ত করেন। তাদের নিষেধ করলেও খারাপ আচার করেন বলে অভিযোগ আছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা খুব দ্রুতই কোম্পানি প্রতিনিধিদের সাথে বসে একটি ব্যবস্থা নিব।

এ বিষয়ে রায়গঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আমীমুল ইহসান তৌহিদ জানতে চাইলে তিনি জানান, আমরা এর আগেও  ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের  সাথে কথা বলেছি ও নিষেধ করেছি।  আর যেনো রোগীদের হয়রানি না হতে হয়   দ্রুতই এর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

একুশে সংবাদ/বিএইচ

Shwapno
Link copied!