মাদারীপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলন, হত্যা মামলায় সাবেক দুই সংসদ সদস্য শাজাহান খান ও আবদুস সোবহান ওরফে গোলাপকে আজ রোববার প্রথমবারের মতো জেলার আদালতে হাজির করা হয়। তাঁদের আদালতে তোলার খবরে সকাল থেকেই আদালত চত্বরে ভিড় করেন আওয়ামী লীগের কয়েক শ নেতা-কর্মী। এ সময় দুজনের মুক্তির দাবি জানিয়ে স্লোগান দেওয়া হয়।
আজ বেলা ১১টার দিকে শাজাহান খান ও আবদুস সোবহানকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে হাজির করা হলে বিচারক সাজিদ-উল-হাসান চৌধুরী আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। শাজাহান খান মাদারীপুর-২ (রাজৈর ও সদরের একাংশ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সোবহান মাদারীপুর-৩ (কালকিনি ও সদরের একাংশ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। তাঁরা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা।
সরেজমিনে দেখা যায়, পুলিশের কড়া নিরাপত্তার মধ্যে বেলা সাড়ে ১১টায় পুলিশের একটি প্রিজন ভ্যান আদালত চত্বরে এসে পৌঁছালে ভ্যানটিকে ঘিরে ধরেন শাজাহান খান ও সোবহানের অনুসারীরা। প্রিজন ভ্যান থেকে নামার পর শাজাহান খান ও সোবহানকে ফুলের মালা পরিয়ে দেন তাঁরা।
শুনানি শুরু হলে দুজনই দাঁড়িয়ে বিচারকের কাছে নিজেদের নির্দোষ দাবি করে মুক্তির আকুতি জানান। আদালতে কমপক্ষে ৩০ আইনজীবী শাজাহান খান ও সোবহানের পক্ষে জামিনের জন্য আবেদন জানান। ১৫ মিনিট জামিন শুনানি শেষে বিচারক দুজনকেই কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আদালত থেকে শাজাহান খান ও সোবহানকে নামানোর সময়েও তাঁদের ঘিরে মুক্তির দাবি জানান নেতা-কর্মীরা।
মাদারীপুরে আদালত পুলিশের পরিদর্শক আনিসুর রহমান বলেন, ‘সাবেক দুই সংসদ সদস্যকে মাদারীপুরের আদালতে প্রথমবারের মতো তোলা হয়েছে। আদালত চত্বরে যেন কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়, এ জন্য আমরা তিন স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শুনানি শেষে আসামি দুজনকে প্রিজন ভ্যানে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ্ আল মামুন বলেন, মাদারীপুরে আলোচিত দুটি হত্যা মামলায় শাজাহান খান ও আবদুস সোবহানকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। তাঁরা আগামী শুনানিতে এই দুই আসামির রিমান্ডের জন্য আদালতের কাছে আবেদন জানাবেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী নাফিজ ইকবাল বলেন, শাজাহান খান ও আবদুস সোবহান গোলাপকে মাদারীপুরে যে দুটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে, সে সময় তাঁরা মাদারীপুরে ছিলেনই না। তবুও রাজনৈতিক কারণে তাঁদের আসামি করা হয়। তাঁরা আদালতে দুই আসামির জামিনের জন্য আবেদন জানালে বিচারক দুজনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :