নিত্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় সকল ধরনের আনন্দে যেন ভাটা পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষের। দুবেলা খেয়ে পরে বেঁচে থাকার সংগ্রামে টিকে থাকাই এখন যেন বড় চিন্তার বিষয়। জীবন জীবিকার চাহিদা কোনোরকম মেটাতে পারলেও সুযোগ নেই বিনোদনের। দিন এনে দিন খাওয়া এসব মানুষ ভালো নেই। দ্রব্যমূল্যের বাড়তি দামের সঙ্গে বাড়েনি তাদের আয়।
ভ্রাম্যমাণ ফেরিওয়ালা কামাল হোসেন জানান, তিনি বছরের ছয় থেকে সাত মাস ধনবাড়ী শহরে আসেন। বিভিন্ন গ্রামে হাড়ি পাতিল বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। বাকি সময় নিজ এলাকায় থাকেন। কিন্তু এখন তার ব্যবসা আগের মতো নেই।
লিয়াকত হোসেন বলেন, গ্রামের মানুষের কাছে নগদ টাকার সংকট দেখা দিয়েছে, তাই ব্যবসা ভালো যাচ্ছে না। প্রতিদিন ৬০০-৭০০ টাকা আয় হচ্ছে। তা দিয়ে খাওয়ার খরচ ও বাসা ভাড়া দিতেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। সংসারে তার চার ছেলে মেয়ে রয়েছে বাড়িতে টাকা পাঠাতে পারছেন না। আবার কোনো কোনো দিন বেচাকেনা হয় না। সব মিলিয়ে দিন ভালো যাচ্ছে না তার।
কথা হয় ধনবাড়ী শহরের নর সুন্দর শ্রী মধুরাম চন্দ্র শীল এর সাথে তিনি বলেন, “যা আয় হচ্ছে তা দিয়ে সংসার কোনোরকম চলছে। পরিবারের চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। সব জিনিসের দাম বেড়েছে। বাজারে গেলে দামের সঙ্গে কুলিয়ে ওঠা সম্ভব হচ্ছে না। সারা দিনে যা আয় হচ্ছে বাজার করলেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। পরিবারের সব চাহিদা মেটাতে গেলে ঘাটতি হয়ে যাচ্ছে। কোনো উপায়ও নেই এ কাজ ছাড়া। অন্য কোনো কাজ তো শিখিনি।”
চা দোকানি কলম মিয়া বলেন, “চায়ের দোকান চালিয়ে তিনজনের সংসার এখন আর চলে না। প্রতিনিয়ত ঋণগ্রস্ত হয়ে যাচ্ছি। দোকানে আগের মতো বেচাকেনাও নেই। মানুষ এখন হিসাব করে খরচ করছে। মধ্যবিত্ত মানুষের অভাব এখন নিত্যসঙ্গী। দামের সঙ্গে কারও উপার্জন বাড়ছে না।”
রিকশাচালক সামাদ বলেন, “নিত্যপণ্যের দাম বাড়লে আমরাও হয়তো কিছু ভাড়া বেশি চাই। কিন্ত তখন আর কেউ রিকশায় ওঠে না। এর মধ্য দিয়ে যে আয় হয়, তার অর্ধেক রাস্তায় কয়েকবার চায়ের দোকনে গেলেই শেষ, পরিবারের খরচ তো পরে।”
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :