মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে সিঙ্গাপুর প্রবাসী রমজান মুন্সীর হাত-পা বাঁধা ভাসমান লাশ উদ্ধারের দুই দিন পর অজ্ঞাতনামাদের আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শুক্রবার রাতে রমজান মুন্সীর স্ত্রী নাজমা আক্তার বাদী হয়ে শ্রীনগর থানায় মামলাটি দায়ের করেন। শ্রীনগর উপজেলার গাদিঘাট গ্রামের মাজেরহাটির সিরাজুল ইসলাম খোকা মুন্সীর পুত্র রমজান মুন্সী (৩৯) গত ২৫ নভেম্বর নিখোঁজ হয়। ওইদিন সে আবু কালাম নামে এক সঙ্গীকে সাথে নিয়ে জমি রেজিস্ট্রি করে নিতে শ্রীনগর সদরের উদ্দেশ্যে বের হন। ধাইসার এলাকায় এসে আবু কালামকে বাজারের দিকে পাঠিয়ে তিনি প্রায় তিনশ` গজ দূরে দেউলভোগের দিকে রওনা দেন। এর পর থেকে তার আর খোঁজ পাওয়া যায়নি।
এই ঘটনায় ২৫ নভেম্বর রমজান মুন্সীর স্ত্রী নাজমা আক্তার বাদী হয়ে শ্রীনগর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন। মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দুই মাস আগে সে দেশে এসে দেউলভোগ ব্রিজের পাশে তার ক্রয়কৃত জায়গায় বহুতল ভবন নির্মাণের প্রস্তুতি শুরু করেন। এ সময় তার প্লটের পাশের মালিক মুক্তার মাঝির ছেলে ইভান জায়গা দাবী করে লোকজন নিয়ে কয়েকবার বাঁধা দেন। এর সূত্রধরে দেউলভোগ এলাকার কানু মিয়ার ছেলে ওয়াসিম গত ২৪ নভেম্বর রাত ১০টার দিকে রমজান মুন্সীকে পরদিন সকালে দেউলভোগ আসতে বলে। তার কথা মতো ২৫ নভেম্বর বেলা ১১ টার দিকে সে দেউলভোগ আসে। পূর্ব পরিচিত কয়েকজন নছিমন চালক এ সময় রমজান মুন্সীকে দেউলভোগ স্বপ্নপুরি সিনেমা হলের দিকে যেতে দেখেছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। এরপর থেকে তার আর কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি।
ওয়াসিমের কাছে জানতে চাইলে সে রমজান মুন্সীর কোন খোঁজ জানাতে পারেনি। শ্রীনগর থানায় সাধারণ ডায়েরি করার পর পুলিশ জানায়, রমজান মুন্সীর মোবাইলফোনের সর্বশেষ লোকেশন কেরাণীগঞ্জের ইকুরিয়া এলাকায় পাওয়া গেছে। গত ২৭ নভেম্বর হাত-পা বাধা অবস্থায় রমজান মুন্সীর লাশটি শ্রীনগর উপজেলা পরিষদ থেকে প্রায় পাঁচশ` গজ উত্তরে খালে ভাসমান অবস্থায় দেখতে পেয়ে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দেয়। পরবর্তীতে পুলিশ এসে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে রমজান মুন্সীকে গত ২৮ নভেম্বর গাদিঘাট কবরস্থানে দাফন করা হয়। রমজান মুন্সীর ১২ বছর ও সাড়ে ৩ বছরের দুটি পুত্র সন্তান রয়েছে। নিখোঁজের পর থেকে একটি চক্র ৩ দফায় রমজানের পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ ৭৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।
রমজান মুন্সীর হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবীতে গত শুক্রবার বিকালে তার স্বজনরাসহ প্রায় পাঁচ শতাধিক নারী পুরুষ বিক্ষোভ মিছিল করে থানা চত্তরে জড়ো হয়। পরে তারা শ্রীনগর প্রেসক্লাবের সামনে এসে মানববন্ধন করে। ওইদিন রাতেই রমজান মুন্সীর স্ত্রী বাদী হয়ে শ্রীনগর থানায় অপহরণ, হত্যা করে লাশ গুমের অভিযোগ এনে অজ্ঞাতনামাদের আসামী করে মামলা দায়ের। করেন। শ্রীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ কাইয়ুম উদ্দিন চৌধুরী বলেন। রমজান মুন্সীকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। থানায় সাধারণ ডাইরি হওয়ার পর থেকেই পুলিশ কাজ করছে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :