১ ডিসেম্বর ১৯৭১ সাল। স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধের সময় গাজীপুরের কালীগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ন্যাশনাল জুট মিলের ভিতরে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও মুক্তিযোদ্ধাসহ ১০৬ জনকে দাঁড় করিয়ে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ব্রাশ ফায়ারে শহীদ করে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও কালীগঞ্জে শহীদের স্মরণে ১ ডিসেম্বর গণহত্যা দিবস পালিত হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে ১ ডিসেম্বর (রোববার) দুপুরে শহীদের গণকবরে উপজেলা প্রশাসন পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার তনিমা আফ্রাদ, সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) নূরী তাসমিন ঊমি, কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আলাউদ্দিন, প্রানীসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ ইউসুফ হাবিব, উপজেলা প্রকৌশলী মো. বেলাল হোসেন সরকার, উপজেলা কৃষি অফিসার ফারজানা তাসলিম, সমাজসেবা কর্মকর্তা শাহাদৎ হোসেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নুর-ই-জান্নাত, মৎস্য অফিসার আবু সামা, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শাহানাজ আক্তার, বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তর প্রধানগণ, ইউপি চেয়ারম্যানবৃন্দসহ প্রমুখ। পরে শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া প্রার্থ্যনা করা হয়।
উপজেলার খলাপাড়া এলাকার স্থানীদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, ১৯৭১ সালে ডিসেম্বরের ১ তারিখে কালীগঞ্জের বাহাদুরশাদী ইউনিয়নের খলাপাড়াস্থিত ন্যাশনাল জুট মিলের ভিতরে মুক্তিযোদ্ধারা অবস্থান করছিল। শ্রমিকরা তখন সকালের নাস্তা খাচ্ছিল। ঠিক সেই মূহুর্তে পাক হানাদার বাহিনী শীতলক্ষা নদী পাড় হয়ে এসে মিলের ভিতর প্রবেশ করে সন্ধা পর্যন্ত ন্যাশনাল জুট মিলে ভিতরে নির্মম গণহত্যা চালায় পাকহানাদার বাহিনী। তখন থেকে ৩/৪ দিন পর্যন্ত মৃতদেহ মিলের ভিতরের বাগানে পড়ে থাকতে দেখা যায়। হানাদার বাহিনীর ভয়ে কেউ মৃতদেহ উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেনি। দেশ স্বাধীন হলে এলাকাবাসী মিলের ভিতরে ১০৬ জনের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে। পরে মৃতদেহগুলি ন্যাশনাল জুট মিলের দক্ষিণ পাশে গণকবরে সমাহিত করা হয়।
পরবর্তীতে মিল কর্তৃপক্ষ গণহত্যার শিকার শহীদদের স্মৃতি রক্ষার্থে ‘শহীদের স্মরণে ১৯৭১’ নামক একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করে শহীদের গণকবরের পাশে একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :