ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় বাস কাউন্টার দখল করাকে কেন্দ্র করে বিএনপি`র দুই নেতার সমর্থকদের মাঝে সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ টি দোকান ভাঙচুর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার রাতে ভাঙ্গা উত্তরপাড় বাসস্ট্যান্ডে (গোলচত্ত্বর সংলগ্ন হাইওয়ে থানার সামনে) এঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন পক্ষের মামলা হয়নি বলে পুলিশ নিশ্চিত করেন।
এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, ৫ আগস্টের পরে বাস কাউন্টার দখলে নেন ভাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান মুন্সীর চাচাতো ভাই ফারুক মুন্সি গ্রুপ।
গত কয়েকদিন ধরে ভাঙ্গা পৌর বিএনপি`র আহ্বায়ক মিজানুর রহমান পান্নার ভাতিজা মাহফুজ আরেকটি ভাসমান কাউন্টার (টেবিল চেয়ার ও ছাতা) বসিয়ে স্থাপন করেন। গতকাল শনিবার পান্না গ্রুপের কাউন্টার ভাঙচুর করলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
এ নিয়ে দুই গ্রুপের মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে। এসময় সংঘর্ষ বিশাল আকারে রূপ নেয়। তখন এলাকা ভিত্তিক সংঘর্ষ জড়িয়ে পড়ে। ফারুক মুন্সির সঙ্গে যোগদেন বইশাখালি গ্রাম এবং পান্না গ্রুপের সঙ্গে যোগদেন পশ্চিম হাসামদিয়া, নুরপুর ও হাজরাহাটি গ্রামের কিছু অংশ।
খবর পেয়ে ভাঙ্গা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ততক্ষণে বাসস্টান্ডের পনেরো থেকে বিশটি দোকানে ভাঙচুর করা হয়।
এ ঘটনায় ভাঙ্গা উপজেলা বিএনপি`র সাধারণ সম্পাদক মুন্সি হাবিবুর রহমান জানান, বিএনপি`র কিছু লোক আগে থেকেই ফারুক সহ বিশ কুড়ি জন বিএনপি`র সমর্থক এরা বাস কাউন্টারে কাজ করে।
গত কয়েকদিন ধরে মিজানুর রহমান পান্নার লোকজন ফারুকদের সামনে আরেকটি কাউন্টার বসিয়ে ওদের সমস্যা ঘটায়। এ নিয়ে দুই গ্রুপের মাঝে সংঘর্ষ হয়। তারপর যা হবার হইছে। তবে বিষয়টি আমি জেলা বিএনপির নেতাদের অবহিত করেছি তারা মীমাংসার জন্য জেলায় ডেকেছেন।
এদিকে ভাঙ্গা পৌর বিএনপি`র আহ্বায়ক মিজানুর রহমান পান্না জানান, হাবিব মুন্সির চাচাতো ভাই ফারুক তিনি ভাঙ্গা পৌর শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তার ছেলে নিক্সন চৌধুরীর সমর্থক এরা ৫ ই আগস্ট এর পরে বাস কাউন্টার দখল করে নেয়।
গত তিনদিন ধরে আমার সম্পর্কের এক ভাতিজা মাহফুজ তিনি বিএনপির দুর্দিনের একনিষ্ঠ কর্মী ও আমার আরেক ভাতিজা পরশ ওর বাবা পাঁচ বছর রেখে মারা যায় সে অসহায় হয়ে পড়ে এরা একটা টেবিল,ছাতা দিয়ে বসিয়েছে, সেইগুলা হাবিবের লোকজন ভাঙচুর করে ফেলাই দেয়,
পরে মাহফুজ তার নুরপুর গ্রামে কিছু লোকজনকে দাওয়াত করে, সেখানে খাওয়া-দাওয়ারও এরেঞ্জ করেছে, সেখানে গিয়ে ফারুকসহ বাইশাখালির কিছু লোকজন মহড়া দেয়, তখন তারা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আমি ঘটনার বেগতিক দেখে উভয়কে ক্ষতি থেকে বাঁচাতে থানায় গিয়ে পুলিশকে অবহিত করেছি।
হাবিবের লোকজন আজ রবিবার সকালে আমার বাড়িতে এসে ইট পাটকেল ছুড়ে হামলা চালায়। পরে আমি বিষয়টি জেলা নেতৃবৃন্দকে অবহিত করেছি তারা আমাকে জেলায় ডেকেছে তারা যেটা করেন আমি মেনে নিব।
এদিকে ভাংগা থানার অফিসার ইনচার্জ মোকসেদুর রহমান জানান,বাসস্ট্যান্ডে বাস কাউন্টার নিয়ে দুই গ্রুপের মাঝে সংঘর্ষ হয়, সঙ্গে সঙ্গে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেছি ৪-৫টি দোকানকে ভাঙচুর চালিয়েছে সংঘর্ষকারীরা, পরে রাতেই বি এন পির হাবিব মুন্সী ও মিজানুর রহমান পান্না সাহেব থানায় এসেছিল তারা নিজেরা নিজেরা মীমাংসার দায়িত্ব নিয়ে সেরে ফেলার আশ্বাস দিয়ে গেছেন। তবে এখনো পর্যন্ত কোনো পক্ষের অভিযোগ পাইনি পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :