মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার দ্বারিয়াপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রমেন্দ্রনাথ বাছাড়ের অপসারণ ও পদত্যাগের দাবিতে দ্বারিয়াপুর ইউনিয়ন বিএনপি`র সভাপতি রফিকুল ইসলাম প্রদীপ ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম-আহবায়ক জিল্লুর রহমান বিশ্বাস দু-গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দু’গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের অন্ততঃ ১০-১২ বিএনপি কর্মী মারাত্বক আহত হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১’টার দিকে উপজেলার দ্বারিয়াপুর ডিগ্রি কলেজের সম্মুখে।
এলাকাবাসী জানান, উপজেলার দ্বারিয়াপুর ইউনিয়নে ইউনিয়ন বিএনপি`র সভাপতি রফিকুল ইসলাম প্রদীপ ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম-আহবায়ক জিল্লুর রহমান বিশ্বাস এর মধ্যে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার নিয়ে দ্ব›দ্ব চলে আসছিল। এছাড়াও সম্প্রতি দ্বারিয়াপুর ডিগ্রি কলেজের গভনিং বডির কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে উভয় গ্রুপের মধ্যে রেষারেষি চলছিল । একপর্যায়ে ঔই ইউনিয়নের বিএনপি`র সভাপতি রফিকুল ইসলাম প্রদীপ গ্রুপের পক্ষে গভনিং বডির কমিটিতে সভাপতিসহ অন্যান্য সদস্যগণ স্থান পান। এই কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম-আহবায়ক জিল্লুর রহমান বিশ্বাস গ্রুপ কলেজের অধ্যক্ষ রমেন্দ্রনাথ বাছাড়কে দায়ী করেন। এরই সূত্রধরে জিল্লুর রহমান বিশ্বাস এর নেতৃত্বে দ্বারিয়াপুর এলাকার সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে দ্বারিয়াপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রমেন্দ্রনাথ বাছাড়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম,দূর্ণীতি ও আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের দালাল আখ্যায়িত করে তাঁর অপসারণ ও পদত্যাগের দাবিতে কর্মসূচি দেয় জিল্লুর রহমান গ্রুপ। পাল্টা প্রতিবাদে মাইকে প্রচার দিয়ে একই স্থানে যুবদলের কর্মসূচি ঘোষণা করেন রফিকুল ইসলাম প্রদীপ গ্রুপ। একই দিনে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে জিল্লু গ্রুপের লোকজন হাসপাতাল মোড় এলাকা থেকে মিছিল বের করে দ্বারিয়াপুর ডিগ্রি কলেজের সম্মুখে এলে রফিকুল ইসলাম প্রদীপের সমর্থকদের বাঁধায় উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়। এ সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের অন্ততঃ ১০-১২ জন কর্মী মারাত্বক আহত হন। এদের মধ্যে ফরহাদ (৩০), হাবিব মোল্যা (৪৫), শুকুর মাহমুদ (৩৬), আব্দুর রশিদ (৫৫), আশিকুর রহমান (৩২) কে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং কাইয়ুম (৪০) কে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে উভয় গ্রæপের দুই নেতাই পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন। এক গ্রæপের দ্বারিয়াপুর ইউনিয়ন বিএনপি`র সভাপতি রফিকুল ইসলাম প্রদীপ বলেন, দু`দিন আগেই মাইকিং করে দ্বারিয়াপুর ডিগ্রি কলেজের সামনে যুবদলের একটি কর্মী সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়। আমরা সকাল থেকেই শান্তিপূর্নভাবে কর্মসূচি পালন করছিলাম। কিন্ত হঠাৎ করে জিল্লুর রহমান বিশ্বাসের নেতৃত্ব একটি মিছিল এসে আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়।
অপর গ্রুপের উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান বলেন, দ্বারিয়াপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রমেন্দ্রনাথ বাছাড়ের বিরুদ্ধে অনেক দূণীতির অভিযোগ আছে। তাঁর কারণে কলেজের রেজাল্ট বারবরই খারাপ হচ্ছে। যেকারনে তাঁর অপসারণ ও পদত্যাগের দাবিতে আমরা একটি শান্তিপূর্ন মিছিল বের করেছিলাম । মিছিলটি কোন বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে ছিল না। মিছিলটি যখন কলেজের কাছাকাছি পৌছায় তখন দ্বারিয়াপুর ইউনিয়ন বিএনপি`র সভাপতি রফিকুল ইসলাম প্রদীপের লোকজন আমাদের মিছিলের উপর অতর্কিত হামলা চালায়ে বেশ কয়েকজনকে আহত করে।
এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ইদ্রিস আলী জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী সেখানে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। তবে এলাকায় উত্তেজনা থাকায় সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :