AB Bank
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

মাটিরাঙ্গায় প্রধান শিক্ষকের হয়রানিতে দিশেহারা শিক্ষিকা


Ekushey Sangbad
আবু রাসেল সুমন, খাগড়াছড়ি
০৪:৩৭ পিএম, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৪
মাটিরাঙ্গায় প্রধান শিক্ষকের হয়রানিতে দিশেহারা শিক্ষিকা

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় সহকারী একজন শিক্ষিকাকে উদ্দেশ্যমুলক ভাবে নানা রকম হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আবদুল মালেক ও ভুক্তভোগী সহকারী শিক্ষিকা ফৌজিয়া পারভিন তানিয়া। দু‍‍`জনই মাটিরাঙ্গা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত।

অভিযোগ উঠেছে ভুক্তভোগী শিক্ষিকা ২০১৭ সালে মাটিরাঙ্গা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করার পর থেকে বিভিন্ন অনিয়ম তার চোখে পড়ে। স্কুলের নির্ধারিত সময়ে শিক্ষক -শিক্ষিকারা না আসা, দেরিতে এসেও হাজিরা খাতায় নিয়মিত স্বাক্ষর করা। সময় মত ক্লাসে না যাওয়া, ক্লাস চলাকালীন সময়ে বারান্দায় ঘোরাঘুরি ও অফিস রুমে বসে থাকা। এসব অনিয়মের প্রতিবাদ করায় তাকে ( তানিয়া) শায়েস্তা করতে ইচ্ছাকৃত ভাবে একের পর এক হয়রানি করছে প্রধান শিক্ষক। 

ভুক্তভোগী বলেন, যোগদান করার পর হতে অনিয়ম গুলো দেখে আসতাম, কিন্তু তা বলতে পারিনি। এসব বাচ্চাদের সময় আর জীবন নষ্ট করার অধিকার কোনটাই আমাদের নেই। প্রতিবাদ করায় স্কুলের সকল সহকর্মী আমাকে সজ্য করতে না পেরে আমার নামে বিভিন্ন কুৎসা রটনায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। 

প্রধান শিক্ষককে এসব অনিয়ম গুলো জানানো পরেও কোন প্রতিকার মেলেনি।বরং উল্টো আমাকে মানসিক প্রতিবন্ধী ও পাগলের তোকমা দেয়া হয়েছে। কারন হেড টিচার নিজেই অনিয়মের সাথে জড়িত। নিজেই ঠিক মত বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকেন না।

তিনি আরোও বলেন, এজন্যই ২০২২ সালে পরিকল্পিত ভাবে অফিসের যোগসাজসে আমাকে জোর করে ডেপুটেশনে পাঠানো হয় আমতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কি কারনে জানিনা ডেপুটেশন বাতিল  করে আবার আমাকে ফিরিয়ে আনা হয়। পরবর্তীতে একই বছর আমাকে আবার ডেপুটেশনে পাঠানো হয় মাটিরাঙ্গা বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। পরে তা বাতিল হলে আমাকে ফিরিয়ে আনা হয়। এবিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে অবগত করা হলে শিক্ষা অফিস কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করে আমাকে জানান এখান থেকে বদলি হয়ে যেতে। এত কিছু করার পরও প্রধান শিক্ষক অহেতুক উদ্দেশ্য প্রণদিত হয়রানি বন্ধ করেননি। আজ পাঁচ  দিন আমি নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিত থেকে ক্লাস নিলেও হাজিরা খাতায় সাক্ষর দিতে দেয়া হয়নি। হাজিরার জায়গায় আমাকে অনুপস্থিত করে রাখা হয়েছে। শায়েস্তা করতে ইচ্ছাকৃতভাবে আমাকে শোকজ করেছেন। কারণে-অকারণে শোকজ নোটিশ দেওয়ায় মানসিক চাপে ইতোপূর্বে আমি অসংখ্য বার অসুস্থ হয়ে পড়েছি। প্রধান শিক্ষকের রোষানলেই হয়তো জীবন শেষ হয়ে যাবে। 

বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে, সরকারি চাকুরী করেও  তিনি প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্য, শিক্ষক বদলি, ঠিকাদারী, পাহাড় কাটা, থেকে শুরু করে একাধিক ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছেন তিনি। তার প্রতি মানুষের সন্দেহ সমালোচনা এড়াতে জায়গা জমির ব্যবসা নির্দ্বিধায় চালিয়ে যাচ্ছেন মাটিরাঙ্গা উপজেলা শিক্ষক সমিতির নাম ভাঙ্গিয়ে। 

বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত তৃতীয় শ্রেণি পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীর অবিভাবক নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক তিনি বলেন,শিক্ষকদের দ্বন্দ্ব সেটা ওনাদের ব্যক্তিগত বিষয়, সেটার প্রভাব আমাদের ছেলে মেয়েদের উপর যদি পড়ে সেটা তো দুংখজনক। আমরা শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে বিদ্যালয়ে পাঠাই। কিন্তু ঠিকমত যদি পড়াশোনা করতে না পারে, তাহলে বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে কি লাভ। আমি চাই দ্রুত তারা এ সমস্যার সমাধান করে বর্তমান প্রজম্মকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবেন।

মাটিরাঙ্গা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি অংহলাপ্রু মারমা বলেন, এবিষয়ে আমরা এখনো কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্হা গ্রহন করা হবে।

এ বিষয়ে মাটিরাঙ্গা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক আবদুল মালেকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। এসব উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে আমাকে জড়ানো হচ্ছে। কোন বিষয়ের আমি জড়িত নই। শিক্ষা অফিসের আস্কারায় পেয়ে তিনি মাথায় উঠেছে। তাদের আশ্রয় প্রশ্রয় পেয়ে সে আমাকে বিভিন্ন হুমকি ধুমকি দিচ্ছেন। মনে হচ্ছে অনেক ক্ষমতাবান, সে গত পাঁচদিন স্কুলে অনুপস্থিত। তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ করা হয়েছে। তার  বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা নিতে যথাযথ কর্তৃপক্ষে অবগত করা হবে।

মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, মোঃ আশরাফুল আলম সিরাজী নিকট বিষয়টি অবগত করে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এবিষয়ে পুরোপুরি না জানলেও কিছু টা আমি জানি, তবে লিখিত কোন অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে এর ভিত্তিতে প্রয়োজনী পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।

 

একুশে সংবাদ/বিএইচ

Link copied!