কালীগঞ্জে টিআর-কাবিটার প্রায় ১৫ লক্ষাধিক টাকা ফেরত চেয়ে আওয়ামীলীগ নেতা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নোটিশ দিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন। অভিযোগ রয়েছে গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষন ও সংস্কার (টিআর-কাবিটা) প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য তৎকালীন আ’লীগ সরকার আ’লীগ নেতা ও দলীয় জনপ্রতিনিধিদের অগ্রিম অর্থ বরাদ্ধ দেয়। কিন্তু তারা প্রাপ্ত অর্থের বিপরিতে নিজ এলাকায় কোন প্রকল্পই বাস্তবায়ন করেননি তারা। তাই সমুদয় অর্থ ফেরত চেয়ে নোটিশ দেয় উপজেলা প্রশাসন।
গত ৫ আগস্ট আ’লীগ সরকারের পতনের পূর্বে আ`লীগ সরকারে থাকার সময় পেয়েছিলেন মাত্র ছয়-সাত মাস। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের সরকারি অর্থ লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে তৎকালীন সরকার দলীয় জনপ্রতিনিধি ও নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায় (২০২৩-২৪) অর্থ বছরে টিআর এর আওতায় ৪৭৫ টি প্রকল্পে বরাদ্ধ ৩ কোটি ২৪ লক্ষ ৭৪ হাজার ৪৪৮ টাকা এবং কাবিটায় ১৫৬ টি প্রকল্পের অধিনে ২ কোটি ১০ লক্ষ ৩৪ হাজার ১৬২ টাকা। মোট বরাদ্ধের পরিমাণ ৫ কোটি ৩৫ লক্ষ ৮ হাজার ৬১০ টাকা। তার মাঝে ২৬টি প্রকল্পের কোন কাজ বাস্তবায়ন না করেই অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে আ’লীগ নেতা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে।
সুশিল সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে কথা বললে তারা বলেন, নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা (টিআর-কাবিটার) সকল বরাদ্দই পেয়েছে সরকার দলীয় এমপি’র অনুগ্রহের কারনে। (টিআর-কাবিটা) প্রকল্পকে এমপি’র নেতা বাচিয়ে রাখার প্রকল্প নামেই অবহিত করেছেন তারা। কিন্তু সাবেক দুই এমপি’র এমন অনৈতিক কাজে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন বর্তমান প্রশাসন। তবে টাকা ফেরতের নোটিশকে সাধারণ জনগন স্বাগত জানিয়েছেন বলে তারা জানান। জনশ্রæতি রয়েছে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের টিআর ও কাবিটা খাতের জন্য বরাদ্ধকৃত অর্থ যার অর্ধেকই ঢুকেছে আ’লীগ নেতা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধির পকেটে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, কোন প্রকার কাজ না করায় ২৬টি প্রকল্পের আওতায় প্রকল্প সভাপতিকে নোটিশ দেয় উপজেলা প্রশাসন। ফেরত চাওয়া অর্থের পরিমান ১৫ লক্ষ ২৬ হাজার ৭৫০ টাকা। সাবেক ইউএনও এস.এম ইমাম রাজী টুলু’র সাক্ষরিত ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষন ও সংস্কার (টিআর-কাবিটার) প্রকল্পের অব্যয়িত অর্থ সরকারী কোষাগারে জমা দেয়ার জন্য নোটিশ দেয়।
প্রকল্পের অধিনে বরাদ্ধ পাওয়া ৮১৬ নং স্মারকের বক্তারপুর ইউনিয়নের আটলাব এলাকার খুকি আক্তার বলেন দুই লাখ টাকার অনুকুলে প্রথম কিস্তি এক লক্ষ টাকা দিয়ে কাজ করে ফেলেছি। কাজ করার পরে চিঠি পেয়েছি। টাকা ফেরত দিব কিভাবে? আরেক প্রকল্প প্রাপ্তি ৮১২ নং স্মারকের জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের শহিদুল্লাহ শহিদ বলেন, কাজ করতে পারি নাই তাই সরকারী টাকা ফেরত দিয়ে দিব।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আবুল কালাম আজাদ বলেন, যারা ৩০ জুন ২০২৪ইং সময়ের মাঝে কাজ সম্পন্ন করতে পারে নাই তাদেরকেই অর্থ ফেরতের জন্য নোটিশ দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে চার জন চালানের মাধ্যমে ব্যাংকে অর্থ জমা দিয়েছেন।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তনিমা আফ্রাদ একুশে সংবাদকে বলেন, প্রকল্পের সরকারি টাকা আত্মসাত করার কোনো সুযোগ নেই। যারা সময়মত প্রকল্পের কাজ করেন নাই তাদেরকে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে অর্থ ফেরত দেয়ার নোটিশ দেয়া হয়েছে। সরকারী অর্থ ফেরত না দিলে তাদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :