কুড়িগ্রাম জেলার ৯ টি উপজেলার অসংখ্য ক্রেতা আলু কিনতে গিয়ে বেসামাল হয়ে পড়ছে। বর্তমানে আলুর দাম বাজারে অগ্নি মূর্তি ধারণ করেছে। আলুর দাম কমার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। আলুর বদলে মুলা কিনে তরিতরকারী ও দিনের খরচ পার করছেন অনেকই। আলুর অগ্নিমুখী দামে ক্রেতাগণ বেসামাল হয়ে পড়ছে।
ভোক্তা অধিকার ও মনিটরিং সেল কুড়িগ্রাম কর্তৃক তেমন কোন বাজার কমানোর সুখবর আসছে না। কুড়িগ্রাম জেলা ভোক্তা অধিদপ্তরের পরিচালক আলুর বাজার মনিটরিং করতে গেলে কোথাও কোথাও বড় ধরনের হোঁচট খেয়েছেন মর্মে খবর পাওয়া গেছে।
ভূরুঙ্গামারী উপজেলার তিনটি হাটে উলিপুর উপজেলার দুটি হাটে ভোক্তা অধিকার টিম কে? জিজ্ঞাস করলে এ সম্পর্কে জানতে চাইলে তেমন কোন সদোত্তর দিতে পারেনি। আলুর দামে আগুন কেন? এ প্রশ্ন আজও রহস্যময়।
অত্যন্ত গোপন সূত্রে জানা গেছে কুড়িগ্রাম জেলায় কয়েকটি কোল্ড স্টোরে এবং আলু ব্যবসায়ীরা শহর থেকে বহু দূরে আলু রেখে নিজেদের ইচ্ছামত ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। আলু মার্কেটের চাহিদা বুঝে বুঝে আরৎদাররা আলু ব্যবসা চালিয়ে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস তুলে ফেলছে।
কুড়িগ্রাম জেলার বিভিন্ন স্তরের ৪টি কোল্ড স্টোরে আলু মজুত রয়েছে মর্মে গোপন সূত্রে জানা গেছে। আলু কোন রকমে ছাড়ছেনা মজুতদারগণ। কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন কর্তৃক মাঝে মধ্যে বাজার মনিটরিং হলেও তেমন কোন সুখবর পৌছায় না ক্রেতাগণের নিকট। যার যার ইচ্ছামতো বাজারে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে আলু বিক্রেতাগণ। দেখার যেন কুড়িগ্রাম জেলায় কেউ নেই।
আরৎদার, ব্যবসায়ী, কানি ব্যবসায়ীদের মধ্যে মারাত্মক যোগসাজশের মাধ্যমে প্রতিদিন রাতে ১২ টার পর দামদর ঠিক করে বলে বাজার ব্যবসায়ীদের মধ্য থেকে অতি গোপনে জানা গেছে। খুবই ধীর গতিতে বাজারে আলু ছাড়ায় আজ কুড়িগ্ৰামের প্রায় ২ শত মার্কেটে হাজারো ব্যবসায়ীরা কম দামে আলু বাজারে ছাড়তে পাচ্ছে না। মোবাইল, টেলিফোনের মাধ্যমে আলু সিন্ডিকেটগণ নীচ থেকে নিচস্তরের ব্যবসায়ীদের কাছে দর কষাকষিতে গত তিন মাস ধরে আলু ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। এলাকার দরিদ্র থেকে অতি দরিদ্র ক্রেতাগণ আলু কিনতে বাজারে গিয়ে নিজেদের পকেটের টাকা শেষ করে ফেলছেন। কখনো কম দামে আলু কিনতে পাচ্ছেন না । সব শ্রেণীর ক্রেতাগণ আলু কিনতে হুতাশনে ভুগছে। বেশির ভাগ আলু ক্রেতাগণ আলুর বদলে মুলা কিনতে ঝুঁকে পড়ছে। কি কারণে? কোন রহস্য বলে আলু হাতের নাগালে পাচ্ছেনা? কেন সেটা নিয়ে অত্যন্ত দুঃখের সহিত জীবন যাপন করছে বাঙালীরা, তা থেকে যাচ্ছে সব সময় পর্দার আড়ালে।
ভোক্তা অধিকার কুড়িগ্রাম জেলা কর্মকর্তা, বাজার মনিটরিং সেলের আধিকর্তা, ব্যবসায়িক সমাজের দিকপালগণ এ ঘটনায় তেমন কোন জোরালো ভুমিকা রাখতে পারছে না। শুধু দুঃখ আর দুঃখের সাগরে আলু কিনতে নিজের জীবন ধ্বংস করছে কেতাগণ।
গত তিন মাস আগে আলুর দাম ৫০ থেকে ৫৫ টাকা থাকলেও বর্তমানে সেই আলুর দাম ৭০ থেকে ৮০ টাকা চলছে । গত দু মাস থেকে ১৫ থেকে ২০ টাকার মধ্যে আলুর দাম উঠানামা করছে। গ্রামগঞ্জের আলু ব্যবসায়ীরা ও দোকানদাররা কখনো কখনো আলুর দাম কেজি প্রতি ২০ থেকে ২৫ টাকা বেশি নিয়ে ক্রেতাদেরকে মারাত্মক ভাবে ঠকিয়ে চলছেন বিক্রেতাগন। তুলনামূলক ক্রেতাগণ ৯৯ পার্সেন্ট ঠকছেন বলে কুড়িগ্রাম জিয়া বাজারের ক্রেতা আবুল, সোহেল, মামুন, ফিরোজ, মকবুল সহ অনেকই আমাদের প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
এদিকে নতুন আলু ১০০ থেকে ১৫০, কখনো কখনো ২০০ টাকায় কেজি বিক্রি হচ্ছে বলে বিভিন্ন বাজার সূত্রে বিভিন্ন অঞ্চলের ক্রেতাগণ জানিয়েছেন। স্বাভাবিক ভাবে নতুন আলু বাজারে আসলেই পুরাতন আলুর দাম স্বভাব তো কমতে থাকে কিন্তু দুঃখের বিষয় ২০২৪ইং সালে আলু নতুন-পুরাতন কোনোটির উপর দাম কমানোর তেমন কোনো প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম ব্যবসায়িক সমিতির বিশেষ করে আলুর আরৎদারগণের মুখোমুখি হলে তেনারা জানান, যে আমাদের দু` পয়সা লাভ করে গোটা বছরের জন্য ব্যবসা চালাতে হয়। তাই আমরা ভেবেচিন্তে এবারে আলু বাজারে ছাড়ছি।
অন্যদিকে, চিলমারী উপজেলার জোড়গাছ বাজারের ব্যবসায়ী আখিনুর, আফজাল, রহমত,পলাশ জানান আমাদের নদী উপারে নতুন আলু উঠেছে গাঙ্গে গরুর গাড়ি, ভ্যান গাড়ি, রিক্সায় নতুন আলু বাজারে আসছে তারপরও পুরাতন আলুর কোন দাম কমছে না। কুড়িগ্রামে আলু ব্যবসার সিন্ডিকেট এখনো ভাঙতে পারেনি কেউ। এ সিন্ডিকেটের হাতে হর হামেশায় ভোগের পর ভোগান্তিতে ক্রেতাগণের নাবিশ্বাস উঠেছে। আলুর ফান্দে ফেঁসেছে আলু খেকোরা, সেখান থেকে কোনক্রমেই রেহাই পাচ্ছে না। প্রতিনিয়ত বাজারে গিয়েই পকেটের টাকা উজাড় করে দিতে হচ্ছে। আলু কিনে তরকারির পাত্রে তেমন কোন সুবিধা নিতে পাচ্ছে না পরিবারে সদস্যরা।
কুড়িগ্রামের বিভিন্ন শহরের বাজার গুলোতে সকাল-বিকেল আলু ক্রেতাগণ সব সময় একটি কথা বলছে কখন আলুর দাম কমবে? আলুর ভর্তা, আলুর ডাল,আলুর তরকারি কখন আমরা শান্তি করে খেতে পারব এটাই প্রধানত ক্রেতাগণের একান্ত দাবি।
কুড়িগ্রাম জেলার আলু ব্যবসা সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট মহলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও পরিচালক বৃন্দের নিকট ক্রেতাগণের একান্ত দাবি দ্রুত বাজারে আলুর দাম কমিয়ে ক্রেতাগণের সুবিধা করে দিতে এবং এ ঘটনায় সুস্পষ্ট ধারণা দিয়ে আলুর বাজার ব্যবস্থাকে সমুন্নত করা হোক।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :