মুন্সীগঞ্জ শহরে রাতের আঁধারে হামলা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী ইব্রাহীম হোসেন রিফাতের (২৫) রক্তনালি কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বর্তমানে ওই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
এ ঘটনায় আজ বুধবার বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী। ঘটনাটি উল্লেখ করে ফেসবুকে একাধিক পোস্টে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কসহ অন্যরা।
অভিযোগের সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দিবাগত রাত পৌনে ১০ টার দিকে পৌরসভার উত্তর ইসলামপুর ফরাজি বাড়ি ঘাট এলাকায় হামলার ঘটনা ঘটে। পরে আহত যুবককে প্রথমে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। পরে সেখান থেকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে চিকিৎসা পান আহত ইব্রাহীম হোসেন রিফাত।
মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক শৈবাল বসাক বলেন, `ওই যুবকের ডান হাতের একটি রক্তনালি কেটে যাওয়ায় আমরা তাকে ঢাকায় রেফার্ড করি। রক্তনালি না কাটলে এখানেই চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হতো।`
আহত রিফাত মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার মোল্লারচর এলাকার মো. নয়ন হোসেনের ছেলে ও মুন্সিগঞ্জ পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের সাবেক শিক্ষার্থী।
এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মঙ্গলবার রাত ১০ টার দিকে আমার নিজ এলাকা মোল্লারচর থেকে কালিদাস সাগরের উপর নির্মিত কাঠের সাঁকো পার হয়ে উত্তর ইসলামপুরের ফরাজী বাড়ি প্রান্তে আসি। এসময় সেখানে থাকা ২ ব্যক্তি- ওই তোদের বাড়ি মোল্লারচর না` বলেই ধারালো ছুড়ি দিয়ে আমার উপর হামলা করে। তারা আমার পেটে আঘাতের চেষ্টা করলে হাত দিয়ে প্রতিরোধ করতে গিয়ে ডান হাতে ছুরিকাহত হই। তাদের সাথে পিস্তলও ছিলো। তারা আমাকে গুলি করে হত্যার হুমকি দেয়। বলে- পিস্তলে থাকা ৬টি গুলি দিয়ে তারা আমাকে হত্যা করবে।
তিনি বলেন, উত্তর ইসলামপুর এলাকার সাথে পার্শ্ববর্তী মোল্লারচর এলাকার দীর্ঘদিন ধরে এলাকাগত বিরোধ আছে। আমার ধারণা সেই বিরোধের জেরে এই হামলা হয়েছে। আবার হতে পারে আমি ছাত্র আন্দোলনের কর্মী- এই ক্ষোভও তাদের মধ্যে থাকতে পারে। পুরো বিষয়টি আসলে তারা ধরা পড়ার পরে বলা যাবে।
এ ঘটনায় উত্তর ইসলামপুর এলাকার দুই ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ইব্রাহীম হোসেন রিফাত। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে তাদের সনাক্ত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও নির্বাহী সদস্য ইব্রাহীম নিরব বলেন, `ঘটনাটি উদ্বেগের। এ ঘটনায় যারাই জড়িত হোক না কেন প্রশাসনের আন্তরিকতা থাকলে তাদের বের করা সম্ভব বলে আমি মনে করি। তাদের প্রতি আহবান দ্রুত জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হোক।
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি সজীব দে বলেন, বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে। থানায় লিখিত অভিযোগের সূত্র ধরে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চলছে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :