মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার পদ্মা নদীতে নাব্য সংকটে আটকে আছে পণ্যবাহী কয়েকটি কোস্টার জাহাজ। এসব জাহাজে থাকা পণ্য আনলোড করতে ব্যবহার করা হচ্ছে বাল্কহেড। আর প্রতি বাল্কহেড থেকে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় কয়েকজনের বিরুদ্ধে।
গত দেড় মাস আগে থেকে উপজেলার আন্ধারমানিক ট্রলার ঘাট এলাকায় আটকা পড়েছে জাহাজগুলো। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নদীর ডুবোচর ও নাব্যতা সংকটের কারণে ঘটছে এমন ঘটনা। আপাতত জাহাজে থাকা পণ্য বাল্কহেডের মাধ্যমে পরিবহন করে জাহাজগুলো চলাচলের জন্য কাজ চলছে।
কয়েকজন স্থানীয় ও জাহাজের শ্রমিক জানান, উপজেলার পদ্মা নদী দিয়ে মাওয়া-নগরবাড়ী-বাঘাবাড়ী নৌপথে নিয়মিত পণ্যবাহী এসব জাহাজ চলাচল করে। বর্তমানে এই রুটের বিভিন্ন পয়েন্টে ডুবোচরের পাশাপাশি নাব্যতা সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে আটকা পড়েছে সার, কয়লা, পাথর, সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল ক্লিংকারসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী জাহাজগুলো।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সকালে সরজমিনে দেখা যায়, আন্ধারমানিক ঘাট এলাকায় এমভি মাস্টার হারুননেছা, এমভি দেশবন্ধু, এমভি আল মুতাকাব্বীরসহ পণ্যবাহী অন্তত ১২টি জাহাজ আটকে আছে। জাহাজগুলো উদ্ধারে জাহাজে থাকা পণ্য বাল্কহেডে করে গন্তব্যে পরিবহন করা হচ্ছে। শতাধিক শ্রমিক জাহাজ থেকে পণ্য বাল্কহেডে লোড করছেন।
আন্ধারমানিক ট্রলার ঘাটের কয়েকজন মাঝি বলেন, আমরা চরাঞ্চলে যাত্রী পারাপার করে থাকি। ডুবোচরের কারণে নদীর বিভিন্ন জায়গায় ট্রলার আটকে পড়ে। এতে আমাদের যাত্রী পরিবহনে সমস্যা হচ্ছে।
পাবনা থেকে আসা লেবার সর্দার আব্দুর রশিদ বলেন, আমি ৮-৯ দিন ধরে এসেছি। লেবার দিয়ে জাহাজগুলো থেকে মালামাল বলগেটে (বাল্কহেড) লোড করা হচ্ছে। এরপর বলগেটে করে সেগুলো গন্তব্যে নিয়ে যাওয়া হবে। মাল কমালে জাহাজগুলো ভেসে উঠবে। তখন জাহাজগুলো যেতে পারবে।
এমভি দেশবন্ধু জাহাজের আবু তাহের বলেন, জাহাজের মাল বলগেটে করে নেওয়া হচ্ছে। এরপর অনেক জাহাজ চলে যাচ্ছে। এখানে স্থানীয় এক লোক আমাদের কাছে ২০০ টাকা করে চাঁদা দাবি করেছে। তাকে আমি চিনিনা। টাকাও দেইনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শ্রমিক অভিযোগ করে বলেন, প্রতিটি বাল্কহেড থেকে দৈনিক ২০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করছেন স্থানীয় শফিক ও আজম দেওয়ান নামের দুই ব্যক্তি। তবে, চাঁদাবাজির বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে আজম দেওয়ান এবং শফিক দুজনেই চাঁদাবাজির বিষয়টি অস্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে হরিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মুমিন খান বলেন, আমাদের কাছে কেউ চাঁদাবাজির অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মুঠোফোনে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডাব্লিউটি) আরিচা অঞ্চলের ড্রেজিং ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান আহমেদ বলেন, নাব্যতা সংকটের কারণে জাহাজগুলো আটকা পড়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই জাহাজগুলোর চলাচল স্বাভাবিক করতে সেখানে ড্রেজিং এর কাজ শুরু হবে।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :