বগুড়ার আদমদীঘিতে পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের থেকে সমাপনী সনদের জন্য টাকা নেন সহকারী প্রধান শিক্ষক। শিক্ষার্থীদের থেকে ২০০ টাকা করে পরিশোধ না করলে সনদ দেননা তিনি। পরিশেষে বাধ্যহয়ে টাকা দিতে হয় ভুক্তভোগীদের।উপজেলার কোমারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এ ঘটনার পর থেকে ওই শিক্ষকের নামে ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়।
জানা যায়, শিক্ষাখাতে নানা ভাবে শিক্ষার্থীদের সুযোগ সুবিধা দিয়ে আসছেন সরকার। বই সমূহ, বৃত্তি প্রদান এবং পরীক্ষার ফ্রী সনদের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অথচ নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বগুড়ার আদমদীঘিতে সনদ প্রতি টাকা নিচ্ছেন কিছু অসাধু শিক্ষকরা। অনুসন্ধানে উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম ইউপির কোমারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠে আসে।
শিক্ষার্থীর বাবা আনিছুর রহমান জানান, আমার দুই সন্তান এই স্কুল থেকে পঞ্চম শ্রেণী পাশ করেছে। একদিন স্কুলে সনদের জন্য গেলে সহকারী প্রধান শিক্ষক টাকা দাবী করেন। পরিশেষে ৪০০ টাকা দিয়ে সনদ নিতে হয়। একই সুরে জিয়াউর রহমান নামের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, পেশায় আমি একজন গার্মেন্টেস শ্রমিক। কষ্ট করে সন্তানদের পড়াশোনা করাতে হয়। শুধু স্কুলের খরচ ছাড়াও বিভিন্ন খরচ রয়েছে। এই খচর জোগাড় করতে হিমসিম খেতে হয়। কয়েকদিন আগে ওই স্কু্লে যায় সনদ নিতে। প্রধান শিক্ষক বলেন, টাকা ছাড়া কোনো সার্টিফিকেট দেওয়া হয় না। আবার বলেন এ টাকা দিয়ে স্কুলে একটা ফান্ড তৈরী করবো এজন্য প্রতি সনদে ২০০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে।শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থী জুনায়েদ, ছাদিক ও পারভেজ জানান, পঞ্চম শ্রেণীর সার্টিফিকেট প্রয়োজনে স্কুলে যায়। কিন্তু সহকারী প্রধান শিক্ষক টাকা ছাড়া কাওকে সার্টিফিকেট দেব না এমনকি টাকা ছাড়া পরিক্ষা দিতেও দিবো না। পরে সেইসব শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার পূর্বেই ২০০ টাকা নিয়ে পরীক্ষায় বসতে দিয়েছন। এমন করে আমাদের জিম্মি করে রেখেছেন শিক্ষকরা।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবদুর রহিম প্রধান জানান, কোনো শিক্ষার্থী বা অভিভাবকের থেকে জোর করে টাকা নেয়া যাবেনা। খুশি হয়ে কেউ মিষ্টি নিয়ে আসে, আবার কেউ কেউ চা-নাস্তা করার জন্য ২০/৫০ টাকা দেয়। এরকম সব স্কুলে হয় শুনেছি। আমাদের নিজ খরচে সার্টিফিকেট প্রিন্ট করে আনতে হয়। এর জন্য সরকারিভাবে কোনো খরচ দেওয়া হয়না৷তিনি আরও জানান, কোমারপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক সনদ দিয়ে টাকা নিচ্ছেন এমন কোনো লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ কেউ দেয়নি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আফরোজ জানান, কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টাকা নিয়ে সার্টিফিকেট দেওয়ার আইন নেই। সার্টিফিকেট একদম ফ্রী দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যদি কোন শিক্ষকরা এমন কাজে জড়িত থাকে। অভিযোগের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :