যেখানেই অন্যায়, সিন্ডিকেট আর চাঁদাবাজি দেখা যাবে তা উপড়ে ফেলা হবে বলে মন্তব্য করেছেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অসহায় ও দুস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সারজিস আলম বলেন, আমরা বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে বিশেষ করে পঞ্চগড়ের তরুণ প্রজন্মের পক্ষ থেকে একটি মেসেজ স্পষ্ট করে দিতে চাই যে, আমাদের নজর ধীরে ধীরে প্রতিটি সিস্টেমের দিকে যাবে। যেখানেই আমরা অন্যায়, সিন্ডিকেট আর চাঁদাবাজি দেখব তা উপড়ে ফেলব।
তিনি বলেন, পঞ্চগড়ের সরকারি যে অফিসগুলো রয়েছে, সেখানে যারা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে তাদেরকে পঞ্চগড়ের মানুষের পক্ষ থেকে স্পষ্ট বার্তা দিই, বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারী ১০ টাকা হোক, ১০০ টাকা হোক কিংবা ১০০০ টাকার বিনিময়ে মানুষকে জিম্মি করে। অনেক অফিস তৈরি হয়েছে যেখানে টাকা ছাড়া কেউ কথা বলে না। এ ক্ষেত্রে স্পষ্ট কথা বলি, কোনো যৌক্তিক কাজে যেকোনো অফিসে যাবেন, যদি টাকা ছাড়া কাজ না হয় তাহলে স্পষ্ট অভিযোগ নিয়ে আমাদের কাছে আসবেন। অফিসের ওই লোক এরপর কীভাবে ওই চেয়ারে বসে থাকে তা আমরা দেখব। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি তাহলে চোর-বাটপাররা ভয়ে চেয়ার ছেড়ে পালিয়ে যাবে, ঠিক যেভাবে তাদের জননী (শেখ হাসিনা) দেশ ছেড়ে পালিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জনগণ হিসেবে, ব্যক্তি হিসেবে আমাদেরও ভালো হতে হবে। আমরা যদি ২০০, ৫০০, ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে যোগ্য লোককে ভোট না দিয়ে অযোগ্য লোককে দিই তাহলে আগামী ৫ বছর তিনি জুলুম করবেন। আমাদেরকে ব্যক্তিগত জায়গা থেকে ঠিক হতে হবে। আমরা পাঁচ বছরে একবার শুধু সুযোগ পাই ওই ক্ষমতার চেয়ারটাতে কে বসবে সেটা নির্ধারণের জন্য।
সারজিস আলম বলেন, আমরা কয়েক দিন আগে দেখেছি কোর্টের একটি নিয়োগ পরীক্ষার আগেই অনেকের নাকি টাকা হাসিল হয়ে গেছে। এর প্রেক্ষিতে নিয়োগটি বন্ধ করতে হয়েছে। এত বড় অভ্যুত্থানের পর, এত রক্তের পর যদি টাকা আর সুপারিশের খেলা চলতে থাকে তাহলে দুইটি জিনিস হতে পারে। এক, হয় আমরা এটা হতে দেব না, না হয় এগুলোকে বাধা দেওয়ার জন্য আমরা প্রয়োজনে আরও রক্ত দেব।
উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শফিউল মাজলুবিন রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া, বিশেষ অতিথি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আব্দুল কাদের, স্থানীয় সমন্বয়ক ফজলে রাব্বী, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক বজলার রহমানসহ উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীরা উপস্থিত ছিল।
অনুষ্ঠানে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে নিহত পঞ্চগড় জেলার পাঁচ শহীদের পরিবারের হাতে আর্থিক সহায়তার চেক এবং দরিদ্র শীতার্তদের হাতে কম্বল তুলে দেওয়া হয়।
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :