রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে চোরাই গরু উদ্ধারের অভিযানে গিয়ে চোরাই মোটরসাইকেলসহ গাজী হাওলাদার (৭৫) নামে এক কসাইকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত গাজী হাওলাদার উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের হাচেন মোল্লার পাড়ার মৃত ইসমাইল হাওলাদারের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, গাজী হাওলাদারের বাড়ি চারদিকে দশ ফুট উঁচু দেয়াল দিয়ে ঘেরা। তিনি তার ছেলে সহ কসাইয়ের কাজ করেন। বেশিরভাগ সময় রাতের বেলায় তার বাড়িতে গরু জবাই করা হয়, যা কেউ দেখতে পায় না। তার বাড়িতে একটি বড় গোয়ালঘর এবং দেয়াল দিয়ে ঘেরা আরেকটি ঘর রয়েছে। ঘটনার দিন স্থানীয় সাংবাদিক ও এলাকাবাসী তার বারান্দায় গরুর রান ঝুলতে দেখেন। এ সময় গাজী স্বীকার করেন, তিনি রাতে একজনের কাছ থেকে একটি অসুস্থ গরু ১৮ হাজার টাকায় কিনেছেন।
গত ২৪ ডিসেম্বর গভীর রাতে উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ছাহের মন্ডল পাড়ায় এক দরিদ্র কৃষকের গোয়ালঘরের তালা ভেঙে দুটি ষাঁড় গরু চুরি হয়। ভুক্তভোগী কৃষক অনেক কষ্টে লাল ও কালো রঙের ষাঁড় দুটি কিনে লালন-পালন করছিলেন এবং কোরবানির ঈদে বিক্রির পরিকল্পনা করেছিলেন।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে, দৌলতদিয়া হাচেন মোল্লার পাড়ার গাজী হাওলাদারের বাড়িতে চোরাই গরু বেচাকেনা হয়। পূর্বেও গাজীর বিরুদ্ধে মানিকগঞ্জ ও গোয়ালন্দঘাট থানায় চোরাই গরু সংক্রান্ত দুটি মামলা রয়েছে। তার ছেলের বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) রাত ৩টায় পুলিশ তার বাড়ি ঘিরে রাখে এবং বাড়িতে একটি গরুর কাটা অংশ ঝুলতে দেখে। তবে চুরি হওয়া গরু সেখানে পাওয়া যায়নি। পুলিশ সন্দেহ করছে, গরুগুলো আগেই সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
অভিযানে পুলিশ গাজীর বাড়ি থেকে ১৬০ সিসির একটি নাম্বারবিহীন চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করে এবং তাকে গ্রেপ্তার করে। শুক্রবার সকালে তাকে রাজবাড়ী আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
গোয়ালন্দঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম জানান, গাজী হাওলাদারের বাড়িতে চোরাই গরু এবং মোটরসাইকেলের বেচাকেনার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযানে গরু উদ্ধার না হলেও তদন্ত চলছে এবং চোরাই গরু চক্রের অন্য সদস্যদের ধরতে পুলিশ তৎপর।
এলাকাবাসী পুলিশের এ অভিযানের প্রশংসা করেছেন এবং চোরাচালান রোধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :