খালার বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবে বলে ঢাকার মগবাজারের বাসা থেকে মা বাবার সাথে বের হয়েছিলো ৬ বছরের শিশু আব্দুল্লাহ। বিয়েতে যাওয়াতো হলোই না বরং পথি মধ্যে নিজের জীবন সহ হারাতে হলো মমতাময়ী প্রীয় মাকে।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা ৬ মিনিট ঢাকা মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ এলাকার ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় মাওয়ামুখী লেনের ৪ নং টোলবুথে দ্বিধাহীন ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে টোল দিচ্ছিলেন মোটরসাইকেল চালক সুমন হোসেন (৩০)। গন্তব্য শশুর বাড়ি মাদারিপুরে। পেছনে বসা তার স্ত্রী রেশমা আক্তার (২৮) ও ছেলে আব্দুল্লাহ (৬)।
পকেট থেকে টাকা বের করে টোল পরিশোধের আগেই হঠাৎ পেছন থেকে বাসের সজোরে ধাক্কা। কিছু বুঝে উঠার আগেই ছিটকে বাসের চাকার নিচে পড়ে চেহারা থেতলে যায় ছেলে আব্দুল্লাহর। আর স্ত্রী রেশমা বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে চলে যায় ১০/১২ হাত দূরে। পরে স্থানীয়রা চাকার নিচ থেকে বের করে রেশমার দেহ। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় আব্দুল্লাহর। আর সুমনের স্ত্রী রেশমা আক্তার বিকাল ৫টার দিকে রাজধানী ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢলে পড়েন মৃত্যুর কোলে। রেশমার ভাই মো. সোহাগ হোসেন মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেন।
সুমনের পরিবারের দুই সদস্যসহ এ ঘটনায় সর্বশেষ নিহতের তথ্য পাওয়া গেছে ৬ জনের। সুমন ঢাকার মগবাজার এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। শুক্রবার শ্যালিকা পুতুলের বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে মাদারিপুরের ভুড়ঘাটা এলাকায় যাচ্ছিলেন।
নিহত অন্যরা হলেন- প্রাইভেটকার আরোহী মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার নন্দনকোনা গ্রামের বাসিন্দা ইকবাল হোসেনের স্ত্রী আমেনা আক্তার (৪৫) ও তাঁর দুই মেয়ে ইসরাত জাহান ইমি (২৬) ও রিহা মনি (১১), রাজধানীর কদমতলীর জুরাইন এলাকার বাসিন্দা মো. সোহাগের ছেলে আইয়াজ হোসেন (২)।
শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার দেওয়ান আজাদ হোসেন জানান, শুক্রবার বেলা ১১ টার দিকে এক্সপ্রেসওয়েতে টোল পরিশোধের জন্য দাড়িয়ে থাকা মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকারকে পেছন থেকে ঢাকা-কুয়াকাটা রুটের বেপারী পরিবহনের একটি বাস ধাক্কা দেয়। এসময় সামনে থাকা গাড়িগুলো দুমড়ে মুচড়ে যায়।
হাঁসাড়া হাইওয়ে থানার ওসি মো. আব্দুল কাদের জিলানি বলেন, এ ঘটনায় অভিযুক্ত বাসটিকে জব্দ করা হয়েছে। তবে বাসচালক পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করা যায়নি।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :