মাদারীপুর জেলার রাজৈরে গামছা দিয়ে মুখ বাঁধা অবস্থায় তিশা আক্তার (১১) নামে এক মাদ্রাসাছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার সুইসগেট নয়াকান্দি গ্রাম থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
তিশা আক্তার নয়াকান্দি গ্রামের মিলন শেখের মেয়ে ও নয়াকান্দি মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। স্বজনদের দাবি, তিশাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় কাজে বের হন ডিম বিক্রেতা বাবা মিলন। তিশাকে ঘরে রেখে প্রতিবেশীর বাড়িতে যান মা শাহিনুর বেগম। পরে রাত ৮টার দিকে ঘরের ভেতর প্রবেশ করে মাটিতে তিশাকে পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার-চেচামেচি শুরু করেন মা। ছুটে আসেন আশপাশের লোকজন। পরে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
স্বজনদের অভিযোগ, মাদ্রাসাছাত্রীর বাড়ির কাছে ৫ মাস আগে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট-নয়াকান্দি এলাকার ঘর ভাড়া নেয় মিরাজ নামে এক বখাটে। এরপর প্রায়ই মেয়েটিকে উত্ত্যক্ত করতো মিরাজ। বাড়ি ফাঁকা পেয়ে ঘরে প্রবেশ করে সে। এরপর মাদ্রাসাছাত্রীর মুখে গামছা দিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। বিষয়টি জানাজানির ভয়ে শ্বাসরোধে তিশাকে হত্যা করে পালিয়ে যায় মিরাজ। এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।
শিক্ষার্থীর মা শাহিনুর বেগম বলেন, বেশ কয়েকবার ওই বখাটেকে নিষেধ করেছি। কিন্তু আমার কথা শোনেনি সে। পরে তার বন্ধুদের নিয়ে ঘরের ভেতর আড্ডাখানা বানিয়েছে সে। সেখানে মাদক সেবন করতো তারা। ফাঁকা বাড়িতে একা পেয়ে আমার মেয়েকে এভাবে নির্মমভাবে হত্যা করবে বুঝতে পারিনি।
নিহত তিশার চাচা ফারুক শেখ বলেন, আমাদের ধারণা ধর্ষণ শেষে মেয়েটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে। আমরা এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
প্রতিবেশী কুদ্দুস বেপারী বলেন, তিশার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি, ১১ বছরের মেয়েটির উপর যে অত্যাচার হয়েছে সেই অত্যাচারের বিচার আমরা চাই।
মাদারীপুরের রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিরাজ খান বলেন, এই হত্যার সাথে কে বা কারা জড়িত বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিহতের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :