পটুয়াখালীর বাউফলে সরকারি খাস জমির দখলকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুইপক্ষের দুই দফা সংঘর্ষে ৬ জন আহত হয়েছেন। শনিবার (ডিসেম্বর) উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চর ফেডারেশন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গেটে দুই দফা এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে সংঘর্ষের ঘটনার চিত্র ধারণ করতে গেলে বিএনপির একাংশের কয়েকজন নেতা সাংবাদিকদের লাঞ্চিত করেছেন এবং পরবর্তীতে হামলাকারীদের না সরিয়ে উল্টা সাংবাদিকদের ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে বাউফল থানার এসআই মাসুদ। সংঘর্ষে আহতরা হলেন- উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক সরোয়ার হোসেন রিয়াজ, কালাইয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের প্রস্তাবিত সভাপতি শাহরাজ হোসেন জয়, ছাত্রদল নেতা রেদোওয়ান, ইয়াসিন ও রায়হান এবং কালাইয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জসিম উদ্দিন তুহিন।
এরমধ্যে নিরাপত্তাজনিত কারণে জসিম উদ্দিন তুহিনকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে এবং রিয়াজ, জয় ও রেদোয়ানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
বিএনপি সূত্র জানা গেছে, চর ফেডারশন এলাকায় সরকারি খাস জমির বরাদ্দ পান স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি। তাদের থেকে এক একর জমির লিজ নেয় ছাত্রদলের শাহরাজ হাসেন জয়। ওই খাস জমির পাশাপাশি ইউনিয়ন বিএনপি`র সভাপতি জসিম উদ্দিন তুহিনের ব্যক্তি মালিকানা কিছু জমি ছিলো। গতকাল শনিবার সকালে লিজ নেওয়া ওই জমির দখল নিতে যায় শাহরাজ হোসেন জয় ও তার সহযোগীরা। এসময় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জসিম উদ্দিন তুহিনের লোকজন বাঁধা দিলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এসময় শাহরাজ হোসেন জয় ও সরোয়ার হোসেন রিয়াজসহ তাদের ৩ সহযোগী আহত হয়। পরে কালাইয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জসিম উদ্দিন তুহিন হাসপাতালের সামনে গেলে জয় ও রিয়াজের অনুসারীরা তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। তাকে উদ্ধারে সহযোগিতা করতে গেলে সাংবাদিকদের লাঞ্ছিত করেন উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি ফয়সালসহ কয়েকজন। এসময় পুলিশ জসিমকে উদ্ধার করে একটি দোকানের মধ্যে আটক রাখেন এবং পরবর্তীতে তাকে পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসা নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক সরোয়ার হোসেন রিয়াজ বলেন, আমরা নিজেদের জমি চাষাবাদ করতে গেলে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জসিম উদ্দিন তুহিন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীদের নিয়ে হামলা চালিয়ে আমাদেরকে আহত করেছেন।
কালাইয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জসিম উদ্দিন তুহিন বলেন, আমি কালাইয়া হাট বাজারের ইজারা নেয়ার পর থেকেই একটি পক্ষ আমাকে বিভিন্ন ভাবে হামলা করার চেষ্টা করে। আজ আমি ওষুধ কিনতে হাসপাতালে এলাকায় আসলে তারাই আমার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। জমি বিরাধ নিয়ে মারামারির বিষয় আমি জানি না, মুঠোফোনের মাধ্যমে শুনেছি।
এ বিষয়ে বাউফল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আতিকুল ইসলাম বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একপক্ষের আহত তিনজনকে উদ্ধার করে পুলিশ হাসপাতালে নিয়েছে এবং নিরাপত্তাজনিত কারণে অপরপক্ষের একজনকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এসময় সাংবাদিকদের সাথে পুলিশের এসআইর ভুল বুঝাবুঝির বিষয় তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :