রাজশাহীর তানোরে আইন শৃঙ্খলা সভায় হত্যা চেষ্টা মামলার আসামী বিনা ভোটে কামারগাঁ ইউনিয়ন ইউপির চেয়ারম্যান ও ইউপি আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক এলাকার ত্রাস, গুদাম সিন্ডিকেটের মুল হোতা সুফি কামাল মিন্টুর বক্তব্যে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে এক প্রকার বিব্রত হয়ে যান প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেন। অবশ্য বক্তব্য দেয়ার পরেই গ্রেফতার এড়াতে প্রশাসনের সহযোগিতায় সভাস্থল থেকে পালিয়ে যান মিন্টু বলেও অভিযোগ উঠেছে।
রোববার (২৯ বিসেম্বর) সকালের দিকে উপজেলার ভিতরে ঘটে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি। মুহূর্তেই মিন্টুর বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয় মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ভাইরাল হয়ে পড়ে নেট দুনিয়া। সেই সাথে কিভাবে উপজেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষ থেকে সভা শেষ না করে পালিয়ে গেল, কেন পুলিশ প্রশাসন তাকে গ্রেফতার করতে পারল না এমন প্রশ্ন জনমনে। তাহলে কি দোসরারা পুনরায় উজ্জীবিত হচ্ছে, নাকি সরিষার ভিতরেই ভূত ঢুকে আছে জোরালো ভাবে উঠেছে এমন প্রশ্ন ।
প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানান, রোববার সকালের দিকে উপজেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে আইন শৃঙ্খলা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার এক পর্যায়ে কামারগাঁ ইউপির বিনা ভোটের চেয়ারম্যান সুফি কামাল মিন্টু তার বক্তব্যে বলেন, বিএনপির দুগ্রুপের সংঘর্ষ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। সেই ঘটনায় আমাকে মামলার আসামী করা হয়েছে। তার এমন বক্তব্যে সভার সভাপতি নির্বাহী অফিসার ক্ষুব্ধ হয়ে এধরণের রাজনৈতিক বক্তব্য দেয়া থেকে বিরত থাকতে বলেন। মিন্টুর এমন বক্তব্যের পর সভায় থাকা ওসি মিজানুর রহমান মিজান বের হয়ে আসেন। সাথে সাথে মিন্টুকে আটকের জন্য থানা পুলিশসহ পিকআপ নিয়ে উপজেলায় আসে। অবশ্য তার আগেই মিন্টু সটকে পড়েন। অল্প সময়ের মধ্যে মিন্টু কিভাবে পালিয়ে গেল, কার ইশারায় পালাতে সক্ষম হয়েছে এমন প্রশ্ন জনমনে। আইন শৃঙ্খলা সভার পর মাসিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভায় ছিলেন না মিন্টু।
মাসিক সাধারণ সভা থেকে বের হয়ে বেশকিছু জনপ্রতিনিধিরা জানান, সে মামলার আসামী তার তো সভায় আসায় ঠিক হয়নি। আবার সভায় এসে আইন শৃঙ্খলা অবনতির কথা বলছেন। সে আ’লীগের দাপটে নেতা। কামারগাঁ বাজারের ত্রাস মিন্টু। তার ভয়ে কেউ কথায় বলতে পারত না। তার কথায় এলাকায় ছিল শেষ কথা। মিন্টুর বিপরীতে যাওয়া মানে তার উপর নির্যাতনের খড়গ নানা। সে বিগত স্বৈরাচার সরকারের সময় গুদাম সিন্ডিকেটসহ নানা ভাবে অঢেল সম্পদের মালিক বনে গেছেন। তার বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত করা দরকার। সভা থেকে এত দ্রুত সময়ের মধ্যে কিভাবে পালাতে সক্ষম হয়। অবশ্যই প্রশাসনের সহযোগিতা রয়েছে।
মিন্টুকে আটকের জন্য উপজেলা ভিতরে দীর্ঘক্ষন পুলিশ অপেক্ষা করেন। পরে তারাই জানতে পারে মিন্টু পালিয়ে গেছে।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার খায়রুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, মামলার বিষয়ে জানা ছিল না। ওসি ভালো বলতে পারবেন।
থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মিজানুর রহমান মিজান কে ফোনে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে কোন কথা না বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
প্রসঙ্গত, চলতি মাসের ২২ ডিসেম্বর থানায় হত্যার চেষ্টা মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় মিন্টুসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে ৫০/৬০ কে অজ্ঞাত আসামী করা হয়।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :