AB Bank
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারি, ২০২৫, ১৮ পৌষ ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

শ্রীমঙ্গলে পাখিদের কলকাকলিতে মুখর রাজঘাট চা-বাগান লেক


শ্রীমঙ্গলে পাখিদের কলকাকলিতে মুখর রাজঘাট চা-বাগান লেক

পর্যটন নগরী ও চায়ের রাজধানী হিসেবে পরিচিত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে সবুজের সমারোহে ঘেরা রাজঘাট, চা বাাগান, লেকে এখন পরিযায়ীসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখির কলকাকলিতে মুখর। 

শ্রীমঙ্গল শহর থেকে প্রায় উনিশ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রাজঘাট লেক। চারপাশজুড়ে সবুজের সমারোহ আর উঁচু-নিচু টিলা থেকে লেকে পর্যন্ত নেমে এসেছে সবুজ সারি সারি চা বাগান। মাঝখানের সমতলে এই প্রাকৃতিক লেকের অবস্থান। 

রাজঘাট লেকে পরিযায়ী পাখির আনাগোনা বেড়েছে বেশ কয়েক বছর ধরেই। প্রতি বছর শীত মৌসুমে লেকটি যেন হয়ে যায় পাখির আবাসস্থল। এবারো এ লেকে বাসা বেঁধেছে বিলুপ্তপ্রায় দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন পাখিসহ হাজারো অতিথি পাখি। ফলে লেকে বিভিন্ন এলাকা থেকে পাখিপ্রেমীদের আনাগোনা বাড়ছে।

সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অগণিত পাখির কিচির-মিচির শব্দে মুগ্ধ ওই এলাকার বাসিন্দারা। স্থানীয়রা এ স্থানটিকে পাখির ‘মঞ্জিল’ বলে ডাকেন।

শ্রীমঙ্গল উপজেলার ফিনলে টি কোম্পানির চা-বাগানের রাজঘাট লেকের জলাধারের আকাশে ঝাঁকে ঝাঁকে পরিযায়ী পাখির ওড়াউড়ি, দিনভর জলকেলি, খুনসুটি সে সঙ্গে কিচির-মিচির শব্দ, কখনো ঝাঁক বেঁধে নান্দনিক কসরতে ডানা মেলে নীল আকাশে ওড়োউড়ি। যার সৌন্দর্য উপভোগ করতে লেকে ভিড় করছেন পাখিপ্রেমীরা।

সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেলে সরজমিন ঘুরে রাজঘাট ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, শীতকাল এলেই এই রাজঘাট লেকটি অতিথি পাখির কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত হয়ে ওঠে। চা বাগানের এ লেকটি অতিথি পাখির কারণে ইতোমধ্যে বেশ পরিচিতি লাভ করেছে। 

লেকে পাখির মেলা থাকে নভেম্বর থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত। দল বেঁধে যখন পাখিগুলো আকাশে ওড়ে, তার সাথে যেন উড়ে চলে মনও। পুরো এলাকাটিই সরব করে রাখে এই পাখপাখালি। পাখিদের এই মিছিলে আছে পানকৌড়ি, লালচে বক, দেশীয় বক রাজ সরালি, কালো লেজ জৌরালিসহ নানা পরিযায়ী পাখিসহ নাম না জানা অগণিত অতিথি পাখি।

ফিনলে চা কোম্পানির রাজঘাট চা বাগানের ৯, ১০ ও ১১ নং সেকশনের টিলায় চারদিকে সবুজ চায়ের বাগান। তিন টিলার মধ্যখানে প্রাকৃতিকভাবেই প্রায় ১০ একর আয়তনের একটি লেক। অবারিত সবুজের সমারোহে ঘেরা স্বচ্ছ জলের বুকে ঝাঁক বেঁধে ডানা মেলছে অতিথি পাখির দল। উড়ে চলা পাখির কিচিরমিচিরে মুখরিত চারপাশ।

চা শ্রমিক মন্টু দেবনাথ বলেন, রাজঘাট চা বাগান শীতকালে নীল আকাশে উড়ে বেড়ায় ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি। পরিযায়ী এসব পাখিদের কিচিরমিচিরে মুখর পুরো এলাকা। এখানে পাখিদের আনন্দে মেতে উঠার সৌন্দর্য খুব কাছে থেকে দেখা যায়।

রাজঘাট চা বাগান এলাকার বাসিন্দা চা শ্রমিক গোপাল (৫৫) বলেন- ৩৫ বছর ধরে এই বাগানে বাস করছি। প্রায় এক যুগ থেকে দেখছি এই চা বাগানের লেকে হাজার হাজার পাখি আসে। সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত এই লেকে পাখি ওড়াউড়ি করে। আর পাখি দেখতে প্রচুর মানুষ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসেন।

লেকে পাখির কিচিরমিচিরের শব্দ ও নীল আকাশে ওড়াউড়ির সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা পর্যটক জুনাইদ জমসেদ বলেন, গত দুইদিন থেকে শ্রীমঙ্গলে অবস্থান করছি। ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে এসেছি। চা বাগান, বাইক্কা বিল এবং রাজঘাট চা বাগান লেকের সৌন্দর্য উপভোগ করতে। আজ এতো সুন্দর এ লেকে হাজারো পাখি দেখে মুগ্ধ হলাম।

দর্শনার্থী আতাউর রহমান বলেন,  চারদিকে সবুজ চা বাগান, উচুঁ নিচু টিলায় ঘেরার সমতলে স্বচ্ছ লেকের অসাধারণ সৌন্দর্যে মোহিত। রাজঘাট চা বাগানের এ পরিবেশ যেকোন প্রকৃতি প্রেমিকে মুগ্ধ করবেই। বিশেষ করে বিভিন্ন প্রজাতির অগণাত পাখির ওড়াউড়ির দৃশ্য খুবই ভালো লেগেছে। 

শ্রীমঙ্গল চৌমুহনা থেকে রাজঘাট বাগানের দূরত্ব প্রায় ১৯ কিলোমিটার। শ্রীমঙ্গল শহরের কালিঘাট রোড কিংবা সিন্দুরখান রোড ২টি রাস্তা হয়েই রাজঘাট লেকে যাওয়া যায়। মিশুক, টেম্পো বা জিপ করে গেলে মাত্র ৩০ মিনিট সময় লাগতে পারে। তবে লেকে প্রবেশের পূর্বে বাগান কর্তৃপক্ষ এর কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করা ভালো।

পাখি বিশেষজ্ঞরা জানান, শ্রীমঙ্গলের হাইল হাওরের বাইক্কা বিলে প্রতিবছর প্রচুর পাখি দেখা গেলেও এবার এর সংখ্যা কমেছে। বাইক্কা বিলের সেই পাখিগুলো নিরাপদ স্থান মনে করে শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন জলাশয়ে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। রাজঘাট লেক এর অন্যতম। এখানে অনেক ধরনের পরিযায়ী পাখি রয়েছে। খুব কাছ থেকে এদের ছবি নেওয়া যায়। এখানে সারাদিনই পাখির কলকাকলিতে মুখর করে থাকে। বাগান ও লেকে পরিযায়ী পাখিগুলো যেন নিরাপদে থাকতে পারে, সেজন্য চা-বাগান কর্তৃপক্ষ সার্বক্ষণিক পাহারার ব্যবস্থা করেছে।

 

একুশে সংবাদ/বিএইচ

Link copied!