ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে শতবর্ষী পুটিয়া বিল ছয় বছরের স্কীম আবেদনের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে কয়েক শতাধিক জেলে পরিবার ও গ্রামবাসী। বৃহস্পতিবার (২জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার ভলাকুট ইউনিয়নে ভলাকুট গ্রামে পুটিয়া বিলের পাশে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানবন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল করে কয়েক শতাধিক জেলে পরিবার এবং পরে জেলেরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে।
মানববন্ধনে অংশগ্রহন করে স্থানীয় জেলেরা বলেন, উপজেলার ভলাকূট ইউনিয়নের ভলাকূট গ্রামে কয়েক শতাধিক জেলে পরিবারের বসবাস।শতবছর ধরে প্রায় তিন হাজার মানুষ পুটিয়া বিলে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। এছাড়াও ভলাকূটকান্দি ও কান্দিপাড়ার অনেক জেলে এ বিল থেকে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। ভলাকুট কান্দিপাড়া মৎস্যজীবী সমবায় লিমিটেড সমিতির মাধ্যমে ইজারা নিয়ে পুটিয়া বিলে মাছ ধরেন স্থানীয় জেলেরা। সম্প্রতি পাশের গোয়ালনগর ইউনিয়নের ভিটাডুবী উত্তর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি পুটিয়া বিল ছয় বছরের স্কীমে ইজারা নিতে মন্ত্রনালয়ে আবেদন করে। যদিও পুটিয়া বিলটি ভলাকূট গ্রামের নিকটে অবস্থিত। এদিকে ভিটাডুবী উত্তর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির বয়স প্রায় বারো বছর এবং এ সমিতির অধিকাংশ সদস্য প্রকৃত জেলে না বলে মানববন্ধনে দাবি করেন স্থানীয় জেলেরা।
মানববন্ধনে স্থানীয় জেলে পরিবারের সদস্য মনসা রানী দাস বলেন, আমরা এ বিলে জাল দিয়ে মাছ ধরে খাই। সবাইতো আর চাকরি করে না। এ বছর নাকি ভিটাডুবী সমিতি বিল পাইছে। আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে কেমনে চলবো?
প্রবীণ জেলে ৮০ বছর বয়স্ক ভুষণ সাহাজী বলেন, সংগ্রামের আগে থেকেই আমরা এ বিলে মাছ ধরি। শুনতাছি এখন ২০/৩০ জনের একটা অবৈধ সমিতি এ বিল নিয়ে নিবে।
ভলাকুট কান্দিপাড়া মৎস্যজীবী লি: সমবায় সমিতির সভাপতি পঙ্কজ দাস বলেন, আমরা ছোট বেলা থেকেই দেখে আসছি এখানকার ময়-মুরুব্বি এ সমিতির মাধ্যমে বিলে মাছ ধরে। বিল না পাইলে আমরা না খেয়ে মরতে হবে।
গোয়ালনগর ইউনিয়নের ভিটাডুবী উত্তর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির বর্তমান সভাপতি সতীশ দাসকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি। এ বিষয়ে ভিটাডুবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাধে শ্যাম বলেন, শুনছি আমাদের সমিতি বিল পাইছে। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব কাজী রবিউস সারোয়ার বলেন, আমরা উপজেলা সমবায় অফিস ও মৎস্য অফিসের সাথে সমন্বয় করে মন্ত্রনালয়ে মতামত পাঠাই। যারা আবেদন করেছে তাদের আবেদনের প্রক্ষিতে মন্ত্রনালয় থেকে সিদ্বান্ত নেওয়া হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি শাহিনা নাছরিন বলেন, আমরা প্রকৃত বিষয়টি উল্লেখ করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। তবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয় নেয়।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :